ASANSOLASANSOL-BURNPURBengali NewsLatestNewsधर्म-अध्यात्म

আসানসোল গ্রামের ঐতিহ্যের ৮ টি দূর্গাপুজো এবার জৌলুসহীন

করোনার জের, ছোট হচ্ছে প্রতিমাও , ভিড় এড়াতে বন্ধ শোভাযাত্রা ও বলি ও সিঁদুর খেলা

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২০ অক্টোবরঃ করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে এবছর জৌলুসহীন বা কোন রকম আড়ম্বর ছাড়াই হতে চলেছে আসানসোল গ্রামের ৮টি দুর্গা পুজো। একসঙ্গে ৮ টি দুর্গাপুজোর নবপত্রিকা স্নান বা কলা বউ আনার শোভাযাত্রা বিসর্জনের, দশমীর সন্ধ্যায় বিসর্জনের শোভাযাত্রা ও শেষে রামসায়ের ময়দানে আতসবাজীর প্রদর্শন বন্ধ রাখা হচ্ছে। এমনকি সিঁদুরখেলা ও বলি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এইবছরের জন্য। করোনার জন্য এরকমই সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসানসোল গ্রাম দূর্গাপুজো কমিটি ও শ্রী শ্রী নীলকন্ঠেশ্বর দেবোত্তর ট্রাস্ট।

গ্রামের ৮ টি পুজোর নবপত্রিকার আনা এই বছর একসঙ্গে হবেনা

কমিটি ও ট্রাস্টের সভাপতি শচীন রায় বলেন, আসানসোল গ্রামের প্রাচীন ঐতিহ্য ও সাবেকি ৮ টি দুর্গাপুজোয় অন্য বছরের তুলনায় এবারে ছোট প্রতিমা হবে। ভিড় এড়াতে গ্রামের ৮ টি পুজোর নবপত্রিকার আনা এই বছর একসঙ্গে হবেনা। আলাদা আলাদা করে তা আনা হবে। পুষ্পাঞ্জলিও একসঙ্গে কেউ দিতে পারবে না। দূরত্ব বিধি মেনে তা করা হবে। বিসর্জন হবে জৌলুসহীনভাবে। কোন শোভাযাত্রা হবে না। এমনকি এবার পশু বলিও বন্ধ রাখা হচ্ছে।


জানা যায়, প্রায় ৩০০ বছর আগে আসানসোলের প্রতিষ্ঠাতা করেছিলেন নকড়ি রায় ও রামকৃষ্ণ রায়। বর্গীদের হাত থেকে রাঢ়বাংলাকে বাঁচিয়েছিলেন পঞ্চকোট রাজার এই দুই বীর সেনানী। বর্তমানে এই রায় পরিবারের সদস্য সংখ্যা দশহাজারের বেশি। আসানসোল গ্রাম, বুধাগ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছেন রায় পরিবারের সদস্যরা। ২৮৭ বছর আগে এই গ্রামে দুর্গা পুজো শুরু করেছিলেন রামকৃষ্ণ ও নকড়ি রায়। পরবর্তীকালে পরিবার বড় হওয়ার কারণে বর্তমানে ৮ টি দূর্গাপুজো হয় এই আসানসোল গ্রামে। বড় দুর্গা, মেজ দুর্গা, ছোট দুর্গা নানা নামে পরিচিত রয়েছে আসানসোল গ্রামের পুজোগুলির।

সেইসব পুজোর রীতি ও পরম্পরায় এবার ছেদ পড়তে চলেছে করোনার কারণে । এর আগে করোনা সংক্রমণের জেরে আসানসোল গ্রামের গাজন উৎসবেও কোপ পড়ে।
শচীন রায় আরো বলেন এই ৮ টি পুজোর নবপত্রিকা নিয়ে আসা থেকে ও বিসর্জন সব এতো বছর ধরে একসঙ্গে হয়ে এসেছে ।

এইসবে বহু মানুষের ভিড় হয়। বলির পর পুজোগুলিতে মহাভোগ খেতে আসেন হাজার হাজার মানুষ । করোনা থেকে বাঁচতে এবার তাই আমরা সর্বসম্মতিক্রমে সেইসব রীতি রেওয়াজে পরিবর্তন আনতে চলেছি।


গ্রামের মানুষেরা বলেন, মন খারাপ হলেও, কিছু করার নেই। এই পরিস্থিতিতে এমন পুজোই করতে হবে আসানসোল গ্রামে।

Leave a Reply