ASANSOLASANSOL-BURNPURBARABANI-SALANPUR-CHITTARANJANBengali NewsKULTI-BARAKARPANDESWAR-ANDALRANIGANJ-JAMURIA

ভুতের গ্রামে একরাতের জন্য ধনদেবীর আরাধনা

করোনা আবহে আসানসোল শিল্পাঞ্চলে লক্ষ্মী পুজোর আয়োজন


বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৩০ অক্টোবরঃ ধনদেবীর আরধানায় মাতেলো আসানসোল শহর থেকে গোটা শিল্পাঞ্চল। আসানসোলের বারোয়ারি থেকে বাড়িতে বাড়িতে শুক্রবারের কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো নিষ্ঠা সহকারে হলেও করোনা আবহে সবকিছুর মধ্যেও ছিলো নিয়ন্ত্রণের বেড়াজাল।

১০৮ রকমের মিষ্টি ভোগ দেওয়ার রেওয়াজ


বিগত বছর গুলোর মতো এবারও পুজো হয়েছে আসানসোলের গড়াই বাড়িতে। ১০৮ রকমের মিষ্টি ভোগ দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে আসানসোলের এসবি গড়াই রোড়ের গড়াই পরিবারের লক্ষী পুজোয়। আসানসোলের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী প্রয়াত ষষ্ঠীনারায়ণ গড়াই ও তাঁর স্ত্রী সুধারাণী দেবী পরিবারে এই লক্ষ্মীপুজো শুরু করেছিলেন। তারপর থেকে তার উত্তরসূরি হিসাবে ছেলেরা সেই মতো বাড়িতে পুজো করে আসছেন। প্রতি বছর লক্ষ্মীপুজোর দিনটায় হরেক মিষ্টির সম্ভারে ও আলোর মালায় সেজে উঠে গড়াই বাড়ির মন্দির চত্বর।


পরিবারের অন্যতম সদস্য কৌস্তভ নারায়ণ গড়াই বলেন, পুজো উপলক্ষ্যে শনিবার হবে অন্নকূট উৎসব। সেই উৎসবে বিগত বছর গুলোতে ৬০০ র বেশি মানুষ আসেন। এই বছর করোনার কথা মাথায় রেখে সেই সংখ্যা কমিয়ে ১০০ তে আনা হয়েছে।

ঘাঁটি পরিবারের লক্ষী পুজো


৮০ বছরের পুরানো হলো আসানসোলের ঘাঁটিগলির ঘাঁটি পরিবারের লক্ষী পুজো। সব দিক দিয়ে দেখতে গেলে এটা একটা পারিবারিক পুজো। কিন্তু সবার মিলনে কবে যেন সেই পুজো সর্বজনীনের রূপ পেয়েছে। শিল্পাঞ্চলের পুরনো পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম রানিগঞ্জের সিংহ বাড়ির পুজো। ৮১ বছরে পা দেওয়া এই পুজোয় এখনও বজায় রাখা হয় পুরনো সব রীতি ও নিয়ম। পরিবারের সদস্যরা জানান, একেবারে প্রথম থেকে এখনো পর্যন্ত লক্ষ্মীর প্রতিমা আনা হয় সেই কুমোরটুলি থেকে।

এছাড়াও রানিগঞ্জের সিয়ারশোলের চাষাপাড়ার মুখুটি পরিবারের কালি মন্দিরের লক্ষী পুজো এলাকার বাসিন্দাদের কাছে এখন আকর্ষণীয়। ১০০ বছরের এই পুজো য় স্থানীয় শিল্পীরা নাচ, গান, নাটক সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে থাকেন। কিন্তু এই বছর করোনার কারণে সেই সবকিছু বন্ধ রাখা হয়েছে।


অন্যদিকে, কুলটির বেনাগ্রামেও এদিন শুরু হয় লক্ষ্মী পুজো। এলাকার বাসিন্দাদের কাছে এই ” বেনাগ্রাম ” ‘ ভুতের গ্রাম’ বলে পরিচিত। বলতে গেলে সারাবছর ধরে একলা পড়ে থাকে এই বেনাগ্রাম। শোনা যায় বা প্রচার আছে, ভূতের ভয়ে নাকি গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন গ্রামবাসীরা। তবে গ্রামের মানুষের অবশ্য দাবি, তারা গ্রাম ছেড়েছেন এলাকার অনুন্নয়নের জন্য। ভিটে মাটি ছাড়া গ্রামের মানুষেরা একরাতের জন্য গ্রামে ফিরে আসেন এই লক্ষী পুজোর দিনে। তারা এক রাত থেকে ধনদেবীর পুজো করেন ও পরের দিন সকালে আবার যে যার জায়গায় ফিরে যান। এবারেও তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি। বেনাগ্রামের মানুষেরা এদিন সকাল থেকেই পুজোয় মেতে উঠেন একরাতের জন্য।


এইবছর লক্ষ্মী পুজোর দায়িত্ব রয়েছেন সুবল মাজি। তিনি বলেন, গ্রামে জেনারেটারের সাহায্যে আলো জ্বালিয়ে মণ্ডপ বেঁধে পুজো করা হয়েছে। তবে অন্য বছর যেখানে ৩০০ লোকের খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে, সেখানে এই বছর করোনা পরিস্থিতির জন্য ১০০ র বেশি লোক হবে না। তবে পুজো হবে নিয়ম মেনেই। একরাতে পুজো করে, খাবার খেয়ে সকালে আমরা আবার ফিরে যাবো নিজের নিজের বাড়িতে । গ্রাম ফিরে যাবে তার পুরনো চেহারায়।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *