ASANSOLASANSOL-BURNPURLatestNews

তিনদিন পরে হিরাপুর থানার বার্ণপুরের বস্তা বন্দী দেহের সনাক্ত

আগেই খুনের মামলা করে তদন্তে পুলিশ

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২১ নভেম্বরঃ তিনদিন পরে শনিবার বস্তা বন্দী মৃতদেহের সনাক্ত হলো। জানা গেলো মৃত ব্যক্তির পরিচয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত ব্যক্তি বিজয় পাসোয়ান (৪৬) আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পান্ডবেশ্বর থানার পান্ডবেশ্বর কোলিয়ারি এলাকার বাসিন্দা। বিজয় পাসোয়ান ইসিএলের পান্ডবেশ্বর কোলিয়ারির কর্মী ছিলেন।

photo
মৃত ইসিএলের কর্মী


শনিবার বিকালে ছেলে অভিনয় পাসোয়ান বাবা বিজয় পাসোয়ানের দেহ সনাক্ত করে আসানসোল জেলা হাসপাতালের পুলিশ মর্গ থেকে তা বাড়ি নিয়ে যায়। মৃতর পরিবারের তরফে এখনো হিরাপুর থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় নি। তবে বুধবারই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হওয়ার পরে পুলিশ তার রিপোর্ট হাতে পেয়ে জেনেছিলো, ঐ ব্যক্তিকে মঙ্গলবার রাতেই কেউ বা কারা গলা টিপে শ্বাস রোধ করে খুন করেছে। পরে রাতে প্রমাণ লোপাটের জন্য সেই দেহ বস্তায় ভরে বার্ণপুরে ফেলে যায়। পুলিশ এই ঘটনায় একটি খুনের মামলা করে, বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করেছিলো।


প্রসঙ্গতঃ গত ১৮ নভেম্বর বুধবার সকালে আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্নপুর নরসিংবাঁধের মিঠাই গলি থেকে পুলিশ বস্তা বন্দী এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করেছিলো। ঘটনার জেরে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এলাকার বাসিন্দাদের অনুমান , অন্য কোন জায়গা থেকে কাউকে খুন করে এই বস্তাতে রেখে মৃতদেহ মঙ্গলবার রাতে কোন এক সময় এখানে ফেলা হয়েছে ।

ঘটনার সূত্র বার করতে, পুলিশ কুকুর আনা হয়েছিলো। কুকুর মৃতদেহ পড়ে থাকার জায়গা সহ আশপাশের এলাকা ঘুরেছিলো । মৃত ব্যক্তির পরনে ছিলো কালো প্রিন্টেড হাফ প্যান্ট ও কালো টি শার্ট। সেই টি শার্টে কলারের নিচে পান্ডবেশ্বরের একটি টেলারের নাম ছিলো।

বড় মেয়ের বিয়ে ছিলো আগামী ২৯ নভেম্বর


পান্ডবেশ্বর ও হিরাপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, ইসিএলের কর্মী বিজয় পাসোয়ানের বড় মেয়ের বিয়ে ছিলো আগামী ২৯ নভেম্বর। তাই তিনি মেয়ের বিয়ের বাজার করতে গত সোমবার সকালে আসানসোলে আসেন। সঙ্গে ছিলো ছেলে। বাজার করে তিনি ছেলেকে আসানসোল থেকে বাসে চাপিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলেন। ছেলেকে তিনি বলেন, কুলটির শীতলপুরে কয়েকজনকে বিয়ের নিমন্ত্রণ করে রাতে বাড়ি ফিরবে। ছেলে বাড়ি ফিরে গেলেও বিজয় পাসোয়ান বাড়ি ফিরে যায়নি। মঙ্গলবার সকাল থেকে বাড়ির লোকেরা তার খোঁজ শুরু করেন। বিজয় পাসোয়ানের সঙ্গে দুটি মোবাইল ফোনও ছিলো। বাড়ির লোকেরা সেগুলোতে ফোনও করেন। কিন্তু ফোন গুলি বন্ধ ছিলো।

পরিবারের তরফে শুক্রবার পান্ডবেশ্বর থানায় বিজয় পাসোয়ানের বাড়ির লোকেরা মিসিং ডায়েরি করতে আসেন। তখন পুলিশ তাদেরকে হিরাপুর থানার বার্ণপুর থেকে উদ্ধার হওয়া বস্তা বন্দী দেহ দেখান। এরপর শনিবার ছেলে অভিনয় পাসোয়ান আসানসোল জেলা হাসপাতালে এসে বাবার দেহ সনাক্ত করেন। এদিন ছেলে বলে, বুঝতে পারছি না, কি করে ঘটনা ঘটলো। বাবার তো শীতলপুরে যাওয়ার কথা ছিলো। বাবার দেহ বার্ণপুরে কি করে গেলো?


এই ঘটনায় আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বজিৎ মাহাতো এদিন বলেন, ময়নাতদন্তের পরে জানা গেছিলো যে ঐ ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে। আমরা একটি খুনের মামলা করে তদন্ত শুরু করেছি। পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হলেই গোটা ঘটনা সামনে আসবে।

Leave a Reply