ASANSOLFEATUREDRANIGANJ-JAMURIATOP STORIES

হিন্দু প্রতিবেশীর দেহ সৎকারের দায়িত্ব নিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যন্য নজির গড়লেন আসানসোলের জামুড়িয়ার ”দেশের মহান” গ্রামের মুসলিমরা

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২৯ নভেম্বরঃ মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান। একজন তার নয়ন মনি, একজন তার প্রাণ। দুই বাংলার কবি কাজি নজরুল ইসলামের সেই বিশ্বখ্যাত কবিতার লাইনকে নিজেদের কাজের মধ্যে দিয়ে প্রমাণ করে দেখালেন কবির জন্মস্থান পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুড়িয়ার চুরুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের “দেশের মহান” গ্রামের মানুষেরা ।


কবির জন্মভিটা চুরুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দেশের মহান গ্রামে ২৩০ টি পরিবারের বাস। তারমধ্যে ১ টি পরিবার হলো হিন্দু। বাকিরা সবাই মুসলিম। সেই গ্রামের সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের বিপদে পাশে দাঁড়ালেন সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম প্রতিবেশীরাই । শনিবার বার্ধক্যজনিত রোগের কারণে রামধনু রজাক নামে ঐ হিন্দু পরিবারের এক বৃদ্ধ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করাতে দূর্গাপুরের একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান গ্রামের মুসলিমরা। কোন হাসপাতাল ভর্তি না নেওয়ায় শেষে তাকে রানিগঞ্জের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে এনে ভর্তি করা হয়।

বিকেল চারটে নাগাদ তিনি সেখানে মারা যান। বাড়ির সবাই বাইরে থাকায় সহায় সম্বলহীন বৃদ্ধ রামধনু রজকের মৃত্যুর পরে তার দেহ সৎকারের দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিলেন সেই গ্রামবাসীরাই । দেহ কাঁধে শ্মশানের পথে পা বাড়ালেন প্রতিবেশী মুসলিম সম্প্রদায়ের গ্রামের মানুষেরাই । হিন্দু রীতি মেনে হলো সৎকারের কাজ হয় ।

শুধু পারলৌকিক ক্রিয়াকর্মই নয়, অসুস্থ বৃদ্ধকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া থেকে সেবা-শুশ্রূষা সব করেছেন মুসলিম প্রতিবেশীরাই বলে এদিন জানান তার ছেলে রামবিলাস রজক । বাবার মৃত্যুর সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না বলে জানান। জামুড়িয়ায় অজয় নদের তীরের এক চিলতে গ্রামের মানুষেরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন তা বলাই যেতে পারে।

Leave a Reply