বাংলায় সিন্ডিকেট ও কাটমানি রাজ চলছে, ২০২১ এর মে মাসেই শেষ হয়ে যাবে তৃণমূল কংগ্রেস
রানিগঞ্জে যোগদান মেলার সভা থেকে আক্রমণাত্মক বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ
বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল ও ২১ ডিসেম্বরঃ করোনার প্রকোপ চলছে ৬ মাসেরও বেশি সময় হলো। স্বাস্থ্য দপ্তর ও চিকিৎসক বলতে পারছেন না, করোনা কবে যাবে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলছেন, জানুয়ারিতে ভ্যাকসিন আসবে। এখানে আমি বলতে পারি, বাংলা থেকে কবে তৃনমুল কংগ্রেস যাবে? ২০২১ সালের মে মাসে বাংলা থেকে তৃনমুল কংগ্রেস চলে যাবে ও শেষ হবে। তার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে। সোমবার বিকেলে আসানসোলের রানিগঞ্জে সিয়ারশোল রাজবাড়ি ময়দানে আসানসোল জেলা বিজেপির যোগদান মেলার সভা থেকে এমনভাবেই রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসকে আক্রমণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সাংসদ দিলীপ ঘোষ।
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2024/05/img-20240520-wa01481045365085360283686-500x428.jpg)
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2024/09/img-20240909-wa00806721733580827251668.jpg)
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2024/12/fb_img_17339279922403722767543487143310-476x500.jpg)
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2020/12/IMG-20201221-WA0120-500x375.jpg)
তিনি আরো বলেন, রাজ্যে সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীর এক্সপেয়ারি ডেট পেরিয়ে গেছে। স্যালাইন চলছে। সরকারের ডেথ সার্টিফিকেট লেখা হয়ে গেছে। ডেটটাই শুধু বসানো হয়নি। আমরা সেটা বসিয়ে নেবো। বাংলায় গত ১০ বছরে কোন কলকারখানা ও শিল্প হয়নি। সিপিএম কারখানার চিমনি বন্ধ করেছিলো। তৃনমুল কংগ্রেসের সরকার এসে সেই কারখানার গেটটাই বন্ধ করে দিয়েছে। এই যে এই আসানসোল রানিগঞ্জ এত বড়ো শিল্পাঞ্চল। এখানে কারখানা ও কোলিয়ারিতে অন্য রাজ্য থেকে কত মানুষ কাজ করতে আসতেন। এখনো আছেন। তারা এখানকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করেছেন। তাদের কাজের জন্য এলাজ উন্নতি হয়েছে। এখন তাদেরকেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বহিরাগত বলছেন। দেশভাগের সময় বাংলা থেকে ২৪ শতাংশ রাজস্ব। সিপিএমের সময় তা কমে ১৫ শতাংশ হয়। তৃনমুল কংগ্রেসের সময় সেটা আরো কমে ৭ শতাংশে নেমেছে। এখন বাংলায় অন্য রাজ্য থেকে কেউ কাজ করতে আসেনা। বাংলার শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা কাজের জন্য বাইরে চলে যাচ্ছে। এখানে কিছু নেই।
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2020/12/IMG-20201221-WA0159-500x281.jpg)
পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ করার চেষ্টা করছেন
দিলীপ ঘোষ নানা ক্ষেত্রের তথ্য তুলে ধরে শাসক দলকে আক্রমণ করে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ করার চেষ্টা করছেন। এখানে এখন বোমার কারখানা হচ্ছে। উগ্রপন্থী ও আতঙ্কবাদীদের মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও বীরভূমে পাওয়া যাচ্ছে। সীমাম্ত পার করে রোহিঙ্গারা বাংলায় ঢুকছেন। মমতা বন্দোপাধ্যায় তাদের আশ্রয় দিচ্ছেন। তারাও বাংলাকে নিজেদের নিরাপদ স্থান বলে মনে করছে। এদেরকে চিহ্নিত করার জন্যই তো কেন্দ্র সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনলো। তা আইন হলো। আমরা চাই শরনার্থীরা ভারতের নাগরিক হন। তারা মর্যাদার সঙ্গে এই দেশে থাকুন। কিন্তু মমতা বন্দোপাধ্যায় তার বিরোধিতা করলেন। যেমন তিনি নোট বন্দী ও জিএসটির সময় করেছিলেন।
দেশের চাষী ও কৃষকরা যাতে তাদের চাষের জিনিসের দাম পান তারজন্য মোদি সরকার নতুন কৃষি বিল ও আইন করলো। মমতা বন্দোপাধ্যায় তারও বিরোধিতা করলেন। না করলে তো তার দল চলবে না। কেননা কৃষকরা কম দামে দালালদের তাদের উৎপাদিত জিনিস বিক্রি করতে বাধ্য হন। ৫ টাকার কেজি আলু এখানে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়। তারমধ্যে ৫০ শতাংশ কাটমানি হিসাবে কালিঘাটে যায়। বাকিটা দালাল নিজের পকেটে ঢোকায়। বাংলায় এখন লুঠের রাজত্ব চলছে। সবদিকে সিন্ডিকেট রাজ। যেকোন কাজ করতে কাটমানি লাগে। এখানে সরকারি চাকরি পেতে হলে তৃনমুল কংগ্রেসের নেতাদের লক্ষ লক্ষ টাকা দিতে হয়। শিক্ষকদের চাকরির প্যানেল নিয়ম মেনে হয়নি বলে, হাইকোর্ট বাতিল করে দিলো। নেতাদের টাকা দিয়েও ছেলেমেয়েরা চাকরি পেলো না। আমি তাদেরকে বলছি, আপনারা ঐ নেতাদের কলার ধরে টাকা ফেরত চান৷ না দিলে এলাকা ছাড়া করুন।
জানি না সুজাতা মন্ডল খাঁ দলের প্রাথমিক সদস্য কিনা
পরে এদিন সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমাদের দলে এমপি, এমএলএ আসছেন। সেখানে তৃনমুল কংগ্রেস একজন সাংসদের স্ত্রীকে দলে নিয়ে লাফাচ্ছে। আমি জানি না সুজাতা মন্ডল খাঁ দলের প্রাথমিক সদস্য কিনা। তার যাওয়ায় দলের কিছু হবেনা। তৃনমুল কংগ্রেসের ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর এদিন টুইট করে বলেছেন, আগামী বিধান সভা নির্বাচনে বিজেপি ডাবল ডিজিট পেরোবেনা। এই প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, সে তো সময় বলবে। তবে এতটুকু বলতে পারি, মাস খানেকের মধ্যেই তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা বলতে শুরু করবেন, ” তৃনমুল বাঁচাও, পিকে হটাও”।
এদিনের সভায় সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ দিলীপ ঘোষের হাত থেকে পতাকা নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন।
রানিগঞ্জের সভায় অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন যুব মোর্চার ন্যাশনাল সেক্রেটারি এবং জেলার অবজারভার সৌরভ শিকদার জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই, রাজ্য কমিটির নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, রাজ্য যুব মোর্চার সেক্রেটারি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়, জেলা যুব মোর্চার সভাপতি অরিজিৎ রায়, মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী পাপিয়া পাল, প্রশান্ত চক্রবর্তী, শিবরাম বর্মন সহ অন্যান্যরা।