Bengali NewsRANIGANJ-JAMURIA

স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকার পরেও চিকিৎসায় হয়রানি,৬০ বছরের অসুস্থ প্রৌঢ়াকে ভর্তি না করার অভিযোগ ৫ বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২৭ ডিসেম্বরঃ স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও রানিগঞ্জের একটি ও দূর্গাপুরের চারটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অসুস্থ এক প্রৌঢ়াকে ভর্তি না করে হয়রানির অভিযোগ উঠলো। শুক্রবার রাতভর ঐ ৫ টি হাসপাতাল ঘুরে বেরিয়ে শেষপর্যন্ত চিকিৎসা না করিয়ে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন পরিবারের সদস্যরা। চিকিৎসায় হয়রানির করার সেই খবর আসানসোলের জামুরিয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতির কাছে পৌঁছায় শনিবার। সভাপতি সাধন রায় বিষয়টির মধ্যে চক্রান্ত খুঁজে পান। প্রথম যে হাসপাতালে ঐ মহিলাকে রানিগঞ্জের যে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো, লতিনি সেখানে ফোন করেন।

তিনি বলেন, হয় রোগীকে ভর্তি করুন, না হলে রিফিউজ লিখে দিন । শেষ পর্যন্ত তার কথাতেই শ্বাসকষ্ট হওয়া ঐ প্রৌঢ়াকে শনিবারই ঐ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । এরপরে গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রী পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক, আসানসোলের মহকুমাশাসক ও আসানসোল দূর্গাপুরের পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন প্রৌঢ়ার ছেলে কৃষ্ণ লায়েক।

জানা গেছে, আসানসোলের জামুরিয়ার বীজপুরের বাসিন্দা বছর ৬০ এর কনকা লায়েকের শুক্রবার রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাকে অসুস্থ অবস্থায় শুক্রবার মধ্যরাত প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় রানিগঞ্জের এক বেসরকারি হাসপাতালে । ঐ হাসপাতাল কতৃপক্ষ স্বাস্থ্য সাথী কার্ড আছে শুনে ভর্তি না নিয়ে ফিরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। সেখান থেকে তাকে দূর্গাপুরের পরপর চারটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চার হাসপাতাল থেকেই বলা হয় যে, নগদ টাকা দিয়ে ভর্তি হলে চিকিৎসা হবে। স্বাস্থ্যসাথী বেড খালি নেই।

এরপরে ৫টি হাসপাতাল সারা রাত ধরে ঘুরে ঐ প্রৌঢ়াকে ভর্তি করতে না পেরে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা। আর এইভাবে ৫ টি হাসপাতাল ঘোরায় গাড়ি ভাড়া বাবদ ৬ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায় বলে জানান প্রৌঢ়ার ছেলে কৃষ্ণ লায়েক। তিনি শনিবার সকালে গোটা বিষয়টি জামুড়িয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি সাধন রায়কে জানান। সাধনবাবু সঙ্গে সঙ্গে প্রথমেই রানিগঞ্জের বেসরকারি হাসপাতালে ফোন করে জানতে চান কেন রোগীকে ভর্তি নেওয়া হয়নি? এখন যদি তাকে ভর্তি না নেওয়া হয় তাহলে তাকে রিফিউজ বলে লিখে দিতে হবে।

এই কথা শোনার পরে শেষ পর্যন্ত তাকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেখে ভর্তি করে নেয় রানিগঞ্জের ঐ বেসরকারি হাসপাতাল।
সাধনবাবু বলেন, দূর্গাপুরের চারটি ও রানিগঞ্জের একটি মোট পাঁচটি হাসপাতালে রাতভোর ঘোরার কারণে যে গাড়িতে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই গাড়িকে ৬ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে । এই ঘটনায় ঐ পরিবারটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। অন্যদিকে, তারা আর্থিকভাবে সংকটে পড়েছেন। আমার মনে হয়েছে যে এর পেছনে কোন বিশেষ রাজনৈতিক চক্রান্ত চলছে। এই সব বেসরকারি হাসপাতালগুলি তার মধ্যে রয়েছে । সেজন্য আমি নিজেই পুরো বিষয়টি প্রৌঢ়ার ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করে পাঠাচ্ছি ।

জেলাশাসক থেকে শুরু করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরে কাছে অভিযোগ পাঠিয়েছি ই-মেইল করে


কৃষ্ণ লায়েক বলেন, এদিন সন্ধ্যায় জেলাশাসক থেকে শুরু করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরে কাছে অভিযোগ পাঠিয়েছি ই-মেইল করে। সোমবার নিজে গিয়ে সেই অভিযোগগুলি জেলাশাসক ও পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে জমা দেবো। তার প্রশ্ন যদি শুক্রবার রাতেই আমার মায়ের একটা কিছু হয়ে যেতো তাহলে তার দায়িত্ব কে নিতেন? এই অভিযোগ নিয়ে রানিগঞ্জ ও দূর্গাপুরের চারটি হাসপাতালের তরফে কেউ কোন মন্তব্য করতে চাননি।
অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply