ASANSOLBengali News

১১ দিন পরে রাস্তায়, শহরে আদিবাসী সংগঠনের মিছিলে হাঁটলেন প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ২৭ ডিসেম্বরঃ তার রাজনৈতিক ভবিষ্যত কি, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তৃনমুল কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার দুদিনের মধ্যে দলে ফিরে এলেও এখনো আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক ও জেলা সভাপতির পদ পাননি। তারই মধ্যে ১১ দিন পরে রাস্তায় নামলেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি। রবিবার দুপুরে আসানসোল শহরে তিনি পা মেলালেন আদিবাসী সংগঠনের ডাকা একটি মিছিলে।

সাঁওতালদের পৃথক ” সারীধরম” কোডের দাবিতে এদিন আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে সারীধরম মহাসম্মেলন এদিন অনুষ্ঠিত হয়। সেই উপলক্ষেই এই মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিলো। আসানসোল পুরনিগমের সামনে থেকে শুরু হওয়া সেই মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন জিতেন্দ্র তেওয়ারি। রবীন্দ্র ভবনে গিয়ে শেষ হওয়া সেই মিছিলে তিনি ছিলেন।

প্রথমে আসানসোলের উন্নয়নের প্রসঙ্গে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি দেওয়া হয়। পরে দূর্গাপুরে গ্রাফাইট কারখানার সামনে তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির মঞ্চ থেকে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীকে বেলাগাম আক্রমণ। সেইদিনই আবার সদ্য তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করা সাংসদ সুনীল মণ্ডলের কাঁকসার বাড়িতে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করে বৈঠকে যোগ দেওয়া। তারপরের দিন ১৬ ডিসেম্বর আচমকাই আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক ও তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া। এতকিছুর পরে নিশ্চিত হয়ে যায় যে তিনি বিজেপিতেই যাচ্ছেন ।

কিন্তু তারপরে আবার পালাবদল। দুদিন পরে কলকাতায় রাজ্যের মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাসের সঙ্গে বৈঠকের জিতেন্দ্র তেওয়ারি জানান, তিনি কোথায় যাচ্ছেন না। তৃণমূল কংগ্রেসেই থাকছেন। ভুল বোঝাবুঝি একটু হয়েছিলো। তা মিটে গেছে।। কিন্তু তারপর ১১ দিন পার হলেও তাকে দলের জেলা সভাপতি ও আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয় নি । ঐ দুটি পদে এখনো কাউকে বসানোও হয়নি। কাদেরকে পুর প্রশাসক ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি করা হবে তা নিয়েও বেশ ধোঁয়াশা রয়েছে । দুটি পদের দাবিদারও অনেক। পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক পদে এখনো থাকা জিতেন্দ্র তেওয়ারি কোন দলে যাবেন নাকি পুরনো দলে থাকবেন তা নিয়ে সব মহলেই জল্পনা রয়েই গেছে ।

১১ দিন পরে আসানসোলে হওয়া আদিবাসীদের মিছিলে অংশ নেওয়ার পরে তিনি বলেন, আমাকে একমাস আগে উদ্যোক্তাদের তরফে এদিন থাকার জন্য বলা হয়েছিলো। আমি তাদের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করছি। তাদের এই অধিকার পাওয়া উচিত। আদিবাসীদের সারিধরম মহাসম্মেলনের এই মিছিলে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের প্রচুর আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনের যোগ দেন ।

সারিধরম” কোডের দাবিতে রাজ্য জুড়ে মিছিল ও মহাসম্মেলন

এদিনের মহাসম্মেলনের মুল বক্তা আদিবাসী সমাজ শিক্ষন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক সুবোধ হাঁসদা বলেন, সাঁওতালদের জন্য পৃথক ” সারিধরম” কোডের দাবিতে আমরা রাজ্য জুড়ে মিছিল ও মহাসম্মেলন করছি। সব ধর্মের জন্য জনগণনার তথ্য সংগ্রহ ফর্মে আলাদা আলাদা কোড আছে। ২০২১ সালের জনগণনার ফর্মে তা নেই। আমরাও তো অন্যদের মতো ধর্ম পালন করি।

আমাদের দেবদেবী আলাদা। আমরা জাহের স্থানে পুজো করি। তাহলে আমরা আলাদা কোড পাবোনা কেন? আমাদের দাবি রাজ্য সরকার এই ব্যাপারে বিধান সভায় একটা বিল পাশ করে কেন্দ্র সরকারের কাছে পাঠাক। যাতে কেন্দ্র সরকার আমাদের দাবি মানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *