ASANSOLLatest

গরু পাচার মামলা : বিচারকের কাছে ডায়েরি জমা দিলো সিবিআই, জামিন নাকচ

পরের শুনানি ৬ জানুয়ারি, আবার জেল হাজতে গরু পাচার মামলায় ধৃত এনামুল হক

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ৩০ ডিসেম্বরঃ গরু পাচার মামলা : বিচারকের কাছে ডায়েরি জমা দিলো সিবিআই, জামিন নাকচ। ২০২০ সালে আর জামিন পাওয়া হলো না গরু পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ধৃত এনামুল হকের। বুধবার সকালে এনামুলকে আসানসোল জেল বা বিশেষ সংশোধনাগার থেকে আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে প্রিজন ভ্যানে করে আনা হয়। সিবিআইয়ের বিচারক জয়শ্রী বন্দোপাধ্যায়ের এজলাসে সকাল থেকে এনামুল হকের আইনজীবীরা তার জামিনের হয়ে জোর সওয়াল করেন।

তারা বলেন, এতদিন জেলে রেখে ও রিমান্ডে নিয়ে জেরা করে তাদের মক্কেলের কাছ থেকে এমন কিছু সিবিআই পায়নি। যার থেকে প্রমান হয় যে, এনামুল জড়িত রয়েছে। সিবিআই এখনো পর্যন্ত আদালতে এনামুল জড়িত থাকার কোন প্রমাণও জমা দিতে পারেনি। আইনজীবীরা বিভিন্ন মামলার কথা বিচারকের কাছে বলেন। তারা আবেদন করে বলেন, তাদের মক্কেল তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করছে ও আগামী দিনেও করবে। তাই তাকে যেকোন শর্তে জামিন দেওয়া হোক।

গরু পাচার মামলা
enamul haque

কোটি কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলা আছে এই ডায়েরিতে


অন্যদিকে, তার বিরোধিতায় সিবিআইয়ের আইনজীবী পাল্টা সওয়াল করে বলেন, এনামুলকে এখনই জামিন দেওয়া হলে, এই মামলার অনেক ক্ষতি হবে। সে যথেষ্টই প্রভাবশালী। সে জামিন পেয়ে বাইরে গেলে সাক্ষীদের প্রভাবিত করবে। তথাকথিত প্রমাণ লোপাট করবে। এদিন সওয়ালের সময় সিবিআইয়ের আইনজীবী বিচারকের কাছে একটি ডায়েরি পেশ করেন। বিচারককে আইনজীবী বলেন, এই ডায়েরি তল্লাশির সময় এনামুল হকের বাড়ি ফিরে পাওয়া গেছে। তাতে একাধিক প্রভাবশালীত্ব ব্যক্তিদের নাম আছে। যাদেরকে এনামুল তার এই বেআইনি কাজের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দিতো। কোটি কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলা আছে এই ডায়েরিতে।

সিবিআইয়ের আইনজীবী ডায়েরিতে লেখা প্রকাশ্য এজলাসে জানাতে চাননি। তিনি বিচারকের কাছে গোপনে বলার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক সেই আবেদন নাকচ করে দিয়ে, সেই ডায়েরি জমা দিতে বলেন। একইভাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী বিচারককে বলেন, জেরার সময় এনামুল হক সিবিআইয়ের অফিসারদের হুমকি দিয়েছে। এই বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হোক। পাশাপাশি তাকে জেলে পাঠানো হোক।


শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের শেষে বিকালে বিচারক এনামুল হকের জামিন নাকচ করে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত জেল হাজতের নির্দেশ দেন। বিচারক বলেছেন, সেদিন এনামুল হককে আবার এজলাসে আনতে হবে। এরপর এনামুলকে আদালত থেকে আসানসোল জেলে নিয়ে যাওয়া হয়।


প্রসঙ্গতঃ, গত ২৪ ডিসেম্বর ৫ দিনের সিবিআই রিমান্ড শেষে আসানসোলের সিবিআই আদালতে এনামুলকে তোলা হয়েছিলো। সেদিন আদাালতে ঢোকার মুখে মেজাজ হারিয়ে উত্তেজিত হয়ে এনামূল হক সিবিআই অফিসারদের হুমকি দিয়েছিলো।
তবে সেদিন এনামূলকে সিবিআই আদালতে তোলা হলেও শুনানি হয়নি। আসানসোল আদালতের এক আইনজীবীর মৃত্যুর কারণে শুনানি স্থগিত করে ৩০ ডিসেম্বর আবার এই মামলার শুনানির দিন ধার্য্য করেছিলেন সিবিআই আদালতের বিচারক জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন এনামুল হকের আইনজীবী হিসাবে ছিলেন ফারুক রাজ্জাক ও শেখর কুন্ডু। অন্যদিকে সিবিআইয়ের আইনজীবী হিসাবে ছিলেন রাকেশ সিং।

এনামূল হক আসানসোলের সিবিআই আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলো


প্রসঙ্গতঃ, গত ১১ ডিসেম্বর এনামূল হক আসানসোলের সিবিআই আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলো। সেদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী তাকে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য বিচারকের কাছে সওয়াল করেছিলেন। কিন্তু বিচারক সেই আবেদন খারিজ ও জামিন নাকচ করে তাকে ১৪ দিনের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন । এরপর জেল হেফাজতে থাকা এনামূলকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে সিবিআই কলকাতা হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেছিলো। সিবিআইয়ের সেই আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ মামলার রায়ে সিবিআইকে ১৯ ডিসেম্বর থেকে ৫ দিনের রিমান্ডের নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *