ASANSOLBengali News

ফেসবুকে রাজ্য নেত্রীর পোষ্ট ঘিরে জল্পনা, পুর প্রশাসক বোর্ড থেকে বাদ অশোক রুদ্র, সোশাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড়

অস্বস্তিতে শাসক দল

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১১ জানুয়ারিঃ আসানসোল পুরনিগমের বোর্ড অফ এ্যাডমিনিস্ট্রেটারের নতুন চেয়ারম্যান বা পুর প্রশাসক পদে সোমবারই বসেছেন অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। বিদায়ী পুর প্রশাসক জিতেন্দ্র তেওয়ারির পরিবর্তে আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক বোর্ডের নতুন সদস্য হয়েছেন প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তবস্সুম আরা।


কিন্তু, এইসব কিছুকে পেছনে ফেলে দিয়ে আসানসোল পুর এলাকার রাজনীতিতে গত দুদিন ধরে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছেন অশোক রুদ্র। এই অশোক রুদ্রকে আসানসোল পুরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের সদস্য থেকে শনিবারই ছেঁটে ফেলা হয়েছে বা তিনি বাদ পড়েছেন।

গত শুক্রবার রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের তরফে এই ব্যাপারে একটি বিঞ্জপ্তিও জারি করা হয়। শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ইস্পাত নগরী বার্ণপুরের নেতা রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অশোক রুদ্রকে ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক বোর্ডের অন্যতম সদস্য করা হয়েছিলো। আসানসোল পুরনিগমের কাউন্সিলর না হওয়া সত্বেও তাকে এই পদ দেওয়া হয়। সেই সময় তাকে ঐ পদে বসানো নিয়ে যেমন অনেকে অবাক হয়েছিলেন। তেমনই আড়াই মাসের মধ্যে তাকে ঐ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় অনেকেই হতবাক।

শিক্ষক সংগঠনের নেতারা খুবই ক্ষুব্ধ


তবে অশোক রুদ্রকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে গত দুদিন ধরে তার অনুগামী শিক্ষক সংগঠনের নেতারা খুবই ক্ষুব্ধ। তারা সোশাল মিডিয়ায় রীতিমতো প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন। তাকে বাদ দেওয়া নিয়ে অনেকে আবার দলের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বকে সরাসরি না হলেও, আকার ইঙ্গিতে বার্তাও দিচ্ছেন। কেউ সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ” সঠিক মূল্যবোধের কোন মূল্য নেই”।


অনেকে লিখেছেন, ” যোগ্যতমের উত্থানের পথে বাধা সমুহ উপড়ে ফেলতে হবে, না হলে সুস্থ সমাজ অসুস্থতা অনুভব করবে”, ” অশোকদা অপসারণ প্রসঙ্গে আমরা প্রতিষ্ঠিত শিক্ষকরা নেতৃত্বকে বলবো, ইসমে তেরা ঘাটা, হামারা কুছ নেহি যাতা “। শাসক দলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতাই বলছেন, এই করেই দলটাকে ও দলের জেলার সংগঠনকে পথে বসাচ্ছেন রাজ্য নেতৃত্ব। তাদেরকে ইন্ধন দিচ্ছে জেলার নেতারা। তাদের প্রশ্ন, অশোক রুদ্রকে ঐ পদে বসাতে কে বলেছিলো? সরাতেই বা কে বললো? এইভাবে সরানোতে তো এলাকার মানুষ দের কাছ ভুল বার্তা যাচ্ছে।


জানা গেছে, অশোক রুদ্রকে সরিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে তৃনমুল কংগ্রেসের শিক্ষক সংগঠনের তরফে মঙ্গলবার আসানসোলে একটি মিছিল করা হবে। তাকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে অশোক রুদ্র নিজে বলেন, যা বলার বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বলবো। অশোক রুদ্র বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য কোর কমিটির সদস্য ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার দলের অন্যতম মুখপাত্র।

কথিত আছে, যে ছেলে কাঁদেনা, সেই ছেলে দুধ পায়না


এদিকে, এরই মধ্যে সোমবার আসানসোল পুরনিগমের বিদায়ী পুর বোর্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা তৃনমুল যুব কংগ্রেসের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদিকা ববিতা দাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট ঘিরে আলোড়ন পড়েছে। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ” কথিত আছে, যে ছেলে কাঁদেনা, সেই ছেলে দুধ পায়না “। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কেন হঠাৎ করে দলের যুব নেত্রী সোশাল মিডিয়ায় কেন এমন ইঙ্গিত পূর্ণ পোষ্ট করলেন? তাহলে কি তিনিও?

আমার নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও আমার নেতা অভিষেক বন্দোপাধ্যায় : ববিতা


যদিও ববিতা দাস এদিন বিকালে বলেন, সবাই দেখলাম পোষ্ট করছে, তাই আমি করলাম। এর মধ্যে অন্য কোন মানে নেই। আমার নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও আমার নেতা অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।
তবে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় জিতেন্দ্র তেওয়ারির পর্ব থেকে একের পর এক ঘটনায় শাসক দলের অন্দরে চরম অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। জেলার নেতারা কেউ কিছু বলতে চাইছেন। তাদের বক্তব্য, সব সিদ্ধান্ত রাজ্য নেতৃত্বর। আমাদের কিছু করা বা বলার নেই।

Leave a Reply