ASANSOLBengali NewsRANIGANJ-JAMURIA

মাকে খুন, ৪ বছরের ছেলের সাক্ষীতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলো বাবার

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৩ জানুয়ারিঃ নিজের চোখের সামনে বাবার হাতে মাকে খুন (murder) হতে দেখেছিলো ৪ বছরের নাবালক ছেলে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে সেই ছেলে আদালতে সাক্ষীও ( witness in court) দিয়েছিলো। ৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সেই খুনের ঘটনায় বুধবার ছেলের সাক্ষীতে বাবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলো (punishment)।

আসানসোল আদালতের বিচারক অতিরিক্ত জেলা জজ (তৃতীয়) বিমলকান্তি বেরা এদিন এই সাজা ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম জিতেন ধীবর। তার বাড়ি আসানসোলের জামুড়িয়া থানার বীজপুরে। খুন হওয়া গৃহবধূর নাম গঙ্গাদেবী। খুনের ঘটনাটি ঘটেছিলো ২০১৪ সালের ৮ আগষ্ট। আসানসোল আদালতে এই মামলা চলাকালীন ঐ নাবালক সহ মোট ১৮ জন সাক্ষী দেন। এই মামলায় সরকারি আইনজীবী বা পিপি হিসাবে ছিলেন চিত্তরঞ্জন দে।


জানা গেছে, জামুড়িয়া থানার বীজপুর গ্রামের বাসিন্দা জিতেন ধীবর তার স্ত্রী গঙ্গাদেবীর উপরে শারীরিক অত্যাচার করতো। সেই কারনে গঙ্গাদেবী ২০১৪ সালের জুন মাসে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাঁকুড়ার কামনারা গ্রামে বাপের বাড়িতে চলে যান। দু’মাস পরে ৮ আগষ্ট গঙ্গাদেবীর মা লক্ষীদেবী মেয়েকে স্বামীর বাড়িতে রাখতে জামুড়িয়ার বীজপুর গ্রামে আসেন৷ গঙ্গাদেবী ঘরের ভেতরে ছিলেন। লক্ষীদেবী ঘরের বাইরে উঠোনে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। কিছুক্ষুন পরে ঘরের ভেতর থেকে তিনি মেয়ের চিৎকার শুনে দৌড়ে যান। তিনি গিয়ে দেখেন, মেয়ে গলা কাটা রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে কাতরাচ্ছে। তার ৪ বছরের নাবালক ছেলে খাটে বসে রয়েছে।

লক্ষীদেবী চিৎকার করলে, আশপাশের লোকেরা দৌড়ে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে সুযোগ বুঝে জিতেন পালিয়েছে৷ গঙ্গাদেবীকে সঙ্গে সঙ্গে জামুড়িয়ার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। সেদিনই লক্ষীদেবী গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে জামুড়িয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

তার ভিত্তিতে পুলিশ একটি খুনের মামলা করে তদন্ত শুরু করে। দিন কয়েক পরে পুলিশ জিতেনকে গ্রেফতার করে।
এই মামলার সরকারি আইনজীবী বলেন, এই খুনের ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ছিলো তার ৪ বছরের নাবালক ছেলে। সে আসানসোল আদালতে মামলা চলাকালীন সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বিচারককে বলেছিলো, বাবাকে কাস্তে দিয়ে মায়ের গলা কাটতে দেখেছিলো।

আরো ১৭ জন সাক্ষী দেন

এই মামলায় আরো ১৭ জন সাক্ষী দেন। গত সোমবার ছিলো এই মামলার শুনানির শেষদিন। সেদিন অতিরিক্ত জেলা জজ (তৃতীয়) বিমলকান্তি বেরা জিতেন ধীবরকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। এদিন বিচারক তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়ার করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *