আসানসোল পুরনিগমের অনুমোদন পাওয়া পার্কের জমি পাঁচিল তুলে দখলের অভিযোগ প্রমোটারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
পুলিশের সঙ্গে বচসা, রাস্তা অববোধ স্থানীয়দের
বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৩১ জানুুয়ারিঃ পার্ক তৈরীর জন্য নির্দিষ্ট করা জমিতে আসানসোল পুরনিগম পার্ক তৈরি করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
পুরনিগম সেই জমিতে পার্ক করার জন্য বোর্ডও লাগানো হয়েছিলো। সেই বোর্ড তুলে দিয়ে জমি দখলের অভিযোগ উঠলো প্রমোটারদের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে আসানসোল দক্ষিণ থানার সেনরল রোডের করুণাময়ী হাউজিং কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকা৷ জমি দখলের প্রতিবাদে রবিবার সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা।
বিক্ষোভকারীরা আসানসোলের সেনরেলে রোড অবরোধ করে রাখেন দীর্ঘক্ষণ। খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার ওসি সহ পুলিশ এলাকায় আসে। পুলিশ ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে না, এই অভিযোগ তোলেন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের সঙ্গে পুলিশের বচসাও লাগে।
বিতর্ক শুরু হওয়া হওয়া জমিটি রয়েছে আসানসোল পুরনিগমের ২২ নং ওয়ার্ডের এইচএলজি হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় ।
আসানসোলের করুণাময়ী হাউসিং কমপ্লেক্সের বাসিন্দাদের দাবি, মেয়র থাকাকালীন তাদের ছেড়ে দেওয়া সাত কাঠা জমিতে জিতেন্দ্র তেওয়ারি শিশুদের খেলার জন্য পার্ক তৈরির অনুমোদন দিয়েছিলেন। কিন্তু পুরনিগমের পুর প্রশাসক পরিবর্তন হওয়ার পরেই সেই জমিতে হঠাৎ করে এক প্রমোটার পাঁচিল তোলার কাজ শুরু করেছেন শনিবার থেকে। স্থানীয় বাসিন্দারা তার প্রতিবাদ করলে প্রমোটার দাবি করেন যে, জমিটি তিনি কিনেছেন।
বিক্ষোভকারীদের তরফ মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, মুন্নি সিংরা বলেন, ১৯৮০ সালে ২২৫ কাঠা জমিতে করুণাময়ী হাউসিং কমপ্লেক্স এলাকা তৈরি হয়। হাউসিংয়ের বাসিন্দারা গাড়ুই নদীর উত্তরপ্রান্তে সাত কাঠ জমি ছেড়ে রাখেন। সমস্ত কাগজপত্র করেই জমিটি ছেড়ে রাখা হয়। তারা আরো বলেন, সমস্ত কাগজপত্র আমাদের কাছে আছে।
২০১৯ সালে ওই জমিতে পার্ক তৈরির আর্থিক অনুমোদন দেন তৎকালীন আসানসোল পুরনিগমের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি। হঠাৎ করেই শনিবার থেকে ঐ জমিতে পাঁচিল তোলার কাজ শুরু করেছেন এক প্রমোটার। তারা বলেন, এই অনৈতিক ও বেআইনি কাজ আমরা হতে দেবো না।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ছিলেন, বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সমীর ভৌমিক। তিনি বলেন, আসানসোল পুরনিগমের বর্তমান পুর প্রশাসককেও আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সদুত্তর না পাওয়ায় আমরা রাস্তা অবরোধ শুরু করেছি। আমরা প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলন করবো।
অন্যদিকে, ঐ জমি কেনার দাবি করা প্রমোটার অরবিন্দ ভগতের দাবি, তিনি ঐ জমি কিনেছেন করুণাময়ীর সোসাইটি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে। তার কাছে জমি কেনার উপযুক্ত কাগজ আছে। এই জমিতে এখন অফিসে হবে। পরে বিল্ডিং হবে বলে জানান। পুরনিগম তাকে জমিতে পাঁচিল তোলার লিখিত অনুমতি দিয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
পাঁচিল তোলার কাজ বন্ধ
খবর পেয়ে এলাকায় আসেন আসানসোল পুরনিগমের ইঞ্জিনিয়ার । তিনি বলেন, দুপক্ষের কাগজ খতিয়ে দেখতে হবে। কোনটা আসল কাগজ তা দেখে তবেই পরবর্তী সিদ্ধান্তে আসা যাবে। ততক্ষণ পর্যন্ত পাঁচিল তোলার কাজ বন্ধ রাখতে প্রমোটারকে বলেন তিনি
।
এই প্রতিশ্রুতি পাওয়ায় দুঘন্টা পরে অবরোধ বিক্ষোভ তুলে নেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশ্ন উঠছে, কি করে পুরনিগমের পার্কের জন্য নির্দিষ্ট করা জমি বিক্রি হয় ও সেই জমিতে পুরনিগম পাঁচিল তোলার অনুমতি দেন?