Asansol আবাসনে আগুন, ধোঁয়ায় ভরলো এলাকা,আতঙ্ক
উদ্ধারের এগিয়ে এলেন বিজেপির রাজ্য কমিটির নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়
বেঙ্গল মিরর রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ৫ ফেব্রুয়ারিঃ আসানসোলের বার্নপুর রোডের কোর্ট মোড় সংলগ্ন তিরুপতি কমপ্লেক্সের আবাসনে শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে । তাতে অবশ্য বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি বা জীবনহানির ঘটনা ঘটেনি । এই আগুনের ফলে আবাসন সহ এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ধোঁয়ায় ভরে যায় চারিদিক। আবাসনের ভেতরে আটকে পড়েন আবাসিকরা। বিশেষ করে যারা উপরের তলার আবাসন গুলিতে ছিলেন তারা।




এই আগুন লাগার পরে সেখানে এসে উদ্ধারকার্যে দেখা যায় সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের। বলা ভালো যে, আসানসোলের এদিনের আগুন মিলিয়ে দিল সব রাজনীতিকে।
আগুনের খবর পেয়ে প্রথমেই ছুটে আসেন এলাকার বাসিন্দা তথা রাজ্য বিজেপি নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। এরপর একে একে সেখানে আসেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় ও আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা একযোগে তাদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে সাহায্য করে আবাসনে আটকে পড়া বাসিন্দাদের উপর থেকে নিচে সবাইকে বার করে আনেন। তাদের মধ্যে বেশকিছু প্রবীণ ও বৃদ্ধ মানুষও ছিলেন। আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের একটি ইন্জ্জিন। দমকলকর্মীরা বেশ কিছুক্ষুনের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শটসার্কিট থেকে এই আগুন লেগেছে।
বার্ণপুর রোডের কোর্ট মোড়ের ঐ আবাসনের আবাসিকদের অনেকে জানান, বৃহস্পতিবার আবাসনের সামনের ইলেকট্রিক পোলে থাকা একটি ট্রান্সফর্মারে কোন কারণে শর্টসার্কিট হয়েছিলো। বিদ্যুৎ দপ্তর খবর দেওয়ার পরে সেখান থেকে কর্মীরা এদিন সকালে আসেন। তারা সেটি ঠিক করে যায়। কিন্তু সব আবাসনে বিদ্যুৎ আসেনি।
তারইমধ্যে শুক্রবার সকাল থেকে আবাসনের উপরের তলায় থাকা আবাসিকরা প্রথম লক্ষ্য করেন কালো ধোঁয়া উপরের দিকে উঠছে । কেউ কেউ নিচে বেরিয়ে এসে দেখেন সেখানে আগুন জ্বলছে। সঙ্গে সঙ্গে দমকলে খবর দেন তারা। প্রায় ১৫ মিনিট পরে দমকলের একটি ইঞ্জিন সেখানে পৌঁছায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করেন দমকলকর্মীরা।
রাজ্য বিজেপি নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় সেখানে পৌঁছে যান সহকর্মীদের নিয়ে। তিনি প্রানের ঝুঁকি নিয়ে আবাসনের উপরে যারা ভয়ে ও আতঙ্কে চলে গেছিলেন, সেইসব আবাসিকদের বাইরে বার করে নিয়ে আসেন। কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, প্রথমে আমি এলাকায় ছিলাম না। পরে খবর পেয়ে আসি। আগুন ও ধোঁয়া দেখে আবাসিকরা ভয়ে ছাদে চলে গেছিলেন। আমি আমার ছেলেদের নিয়ে সেখানে গিয়ে তাদেরকে আশ্বস্ত করে একে একে নামিয়ে নিয়ে আসি। কারোর কিছু হয়নি। পরে দমকলকর্মীরা আসেন। তারা আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখছেন৷ জানা গেছে এই আবাসনে ৪২টি পরিবার থাকে।
তিনটি রাজনৈতিক দলের তিন নেতা হাতে হাত দিয়ে রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে যেভাবে কাজ করলেন, তা এখন রাজ্য রাজনীতিতে খুব একটা দেখা যায় না। সেইদিক থেকে এই ঘটনা একটা মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো বলাই যেতে পারে।