MAITHON ডুবুরীর প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য।আসানসোল। রাজ্য সিভিল ডিফেন্স CIVIL DEFENSE দফতরের উদ্যোগে এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা Disaster management দপ্তর সহযোগিতায় মাইথনে MAITHON পশ্চিমবঙ্গের বারো টি জেলার প্রায় দুইশ জন কে ডুবুরীর Diving Training প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
প্রতিটি জেলা থেকে এজন্য সাঁতার জানা এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী কুড়ি জনকে এই প্রশিক্ষণে পাঠানো হচ্ছে। তাদের মধ্যে থেকে গড়ে পাঁচ জন করে নানান কারণে মাইথনে আসার পর বাদ পড়ছে। গত পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে যা আঠাশে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
শনিবার প্রথম পর্যায়ে পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর এবং ঝারগ্রাম এর প্রায় ৪৫ জনকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শেষ হলো। রবিবার থেকে আবার নতুন করে তিনটি জেলার প্রশিক্ষণ শুরু হবে এখানে বলে জানা গেছে ।
বিদেশি নৌকো ব্যবহার করা হচ্ছে
এদিন মাইথনে গিয়ে দেখা গেল সেখানকার জলাধারে এই প্রশিক্ষণের কাজ চলছে। রাজ্য সরকার প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য সর্বভারতীয় স্তরে টেন্ডার আহবান করেছিল অভিজ্ঞ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে । সেক্ষেত্রে পুনার একটি সরকারি সংস্থা অনুমোদিত তিন প্রতিনিধি প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য সুযোগ পেয়ে এখানে এসেছেন। এখানে দুটি আলাদা করে হাওয়া দেওয়া বিশেষ ধরনের উদ্ধারকারী দলের জন্য তৈরি হওয়া বিদেশি নৌকো ব্যবহার করা হচ্ছে ।
গভীরে ঝাঁপ দিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন জলের নিচে
ওইসব বিশেষ ধরনের নৌকোতে চেপে খালি গায়ে প্রশিক্ষণ নিতে আসা তরুণরা মাইথন জলাধার এর ৫০ ফুট গভীরে ঝাঁপ দিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন জলের নিচে। এদের মধ্যে দেবজিৎ হাজরা,ধনঞ্জয় মাইতি বলেন আমরা সাঁতারেঅভিজ্ঞ। ধীরে ধীরে ৫০ ফুট জলের নিচে পৌঁছেছি। তখন আলাদা আলাদা আলাদা রঙের মতো জলের স্তর দেখতে পাই। কারোর কারোর কান দিয়ে এবং নাক দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে। তবে ঘন্টা দুই পরে সেটা আবার ঠিক হয়ে যায়। এতে ভয়ের কিছু নেই।
also read : challenge to Suvendu ADHIKARI
সুমন্ত কোনার নামে আরেকজন বলেন আমরা এখানে প্রশিক্ষনে আসার আগে সমস্ত রকমের মেডিকেল পরীক্ষা করিয়ে সরকারি স্বাস্থ্য দপ্তরের সার্টিফিকেট নিয়ে এসেছি। তার পরেও এখানে কলকাতা থেকে যিনি চিকিৎসক তিনি সারাক্ষণ থাকছেন এবং আমাদের প্রতি লক্ষ্য রাখছেন। কি ধরনের পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে তার উত্তরে প্রশিক্ষণ নিতে আসা তরুণরা বলেন লিখিত পরীক্ষার সাথে সাথে একেবারেই ওই নৌকা থেকে জলে ঝাঁপ দেওয়া শুরু করে সব ক্ষেত্রেই আলাদা আলাদা নম্বর আছে । তারা জানান এই জন্য একজনকে ৫৬০ টাকা করে রাজ্য সরকার দিচ্ছে। তাদের থাকার জন্য কোন পয়সা লাগছে না ।খাওয়ার খরচ হিসেবে এই টাকা থেকেই তা দিয়ে দেওয়া হবে। এর সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেষে শংসাপত্র পাওয়া যাবে যা আমাদের ভবিষ্যতে চাকরির কাজে লাগতে পারে।
কিন্তু যারা প্রশিক্ষণ নিতে এসেছেন তাদের অধিকাংশই বলেন আমরা যেহেতু একেবারেই গ্রামবাংলা অঞ্চল থেকে আসছি তাই প্রশিক্ষণ শেষে আবার বাড়িতে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকবো। আমাদের মাঝে মধ্যে অন্তত যাতে রেওয়াজ করার জন্য সরকার এসব যন্ত্রপাতি অন্তত মহুকুমা পর্যায় ব্যবস্থা করলে ভাল হয়। সকলেই বলেন এত ভালো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়, জল সুন্দর দূষণমুক্ত পরিবেশ কে আমরা বন্ধু করে নিলাম।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিপর্যয় মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা সর্বোচ্চ আধিকারিক এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তমোজিৎ চক্রবর্তী বলেন বারো টি জেলা থেকে যাতে এখানে সাঁতার জানা যুবকরা ডুবুরীর প্রশিক্ষণ নিতে পারে সেই ব্যবস্থা করার জন্য রাজ্যের সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। প্রতি জেলায় জেলায় বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য এমন দল থাকা প্রয়োজন। ২০১৮ সালে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এখানে এই ধরনের প্রথম আমাদের উদ্যোগেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই ছেলেরা প্রশিক্ষণ নিয়ে এখানে বিভিন্ন সময় নদীতে বা পরিত্যক্ত খনিতে ডুবে যাওয়া মানুষকে উদ্ধার করেছে। এদের মধ্যে থেকে অন্তত ছয় জনকে যাতে সরকারি কাজ দেওয়া যায় তার জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ পাঠিয়েছি।
MAITHON ডুবুরীর প্রশিক্ষণ :ইসিএলের নিজস্ব উদ্ধারকারী দলে ডুবুরীর প্রশিক্ষণ থাকা উচিত
কিন্তু আসানসোল-দুর্গাপুর খনি শিল্পাঞ্চলের বিশেষ করে পরিত্যক্ত খনিতে বিভিন্ন সময় মানুষের ডুবে যাওয়ার ঘটনার ক্ষেত্রে ইসিএলের নিজস্ব উদ্ধারকারী দলে ডুবুরীর প্রশিক্ষণ থাকা উচিত। আমরা ওদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। ইসিএল কর্তৃপক্ষকে চিঠি ও দিয়েছি। সেখানকার। মাইন্স রেস্কিউ প্রধান এ ব্যাপারে উৎসাহ দেখিয়েছেন । তাদের কাছ থেকে আমরা আবেদন পেলে তা কলকাতায় পাঠিয়ে দেবো অনুমতির জন্য। যদি তারা এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ নেয় তাহলে ওদের নিজস্ব একটি দল তৈরি হয়ে যাবে।