ASANSOL-BURNPUR

পানীয়জল ও বিদ্যুতের সুষ্ঠু সরবরাহের দাবিতে ভোট বয়কটের ডাক

তিন বছর আগে বন্ধ হয়েছে বার্ণস্ট্যান্ডার্ড কারখানা, কলোনির বাসিন্দাদের

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৫ মার্চঃ বছর ঘোরে। ভোট আসে। ভোট যায়। কিন্তু তারা যে নির্জলা হয়ে অন্ধকারের মধ্যে রয়েছেন সেই ছবির কোন পরিবর্তন হয়না। তাই এবার বিধান সভা ভোটের ঠিক আগে ভোট বয়কটের ডাক দিলেন তিন বছর আগে আসানসোলের বার্নপুরের বন্ধ হয়ে যাওয়া বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানার ওয়াগন কলোনির বাসিন্দারা। এই এলাকাটি আসানসোল পুরনিগমের ৫৬ নং ওয়ার্ড ও আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। গত ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে আসানসোল পুরনিগম তৃনমুল কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। গত বিধান সভা নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভা কেন্দ্রে জিতেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়।


বার্ণপুরের এই বার্ণ স্ট্যান্ডার্ড কারখানা একটা সময় শুধু রাজ্যের নয়, দেশের অন্যতম কারখানা। বরাত পাওয়া সহ নানা কারণে এই কারখানা রুগ্ন হয়ে পড়ে। ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার এই কারখানা বন্ধ করে দেয়। তখন এই কারখানায় সবমিলিয়ে ১৮০০ এর মতো কর্মী ছিলেন। বার্ণপুরের ওয়াগন কলোনির কলোনিতে এই কারখানার কর্মীরা পরিবার নিয়ে থাকেন। এই মুহুর্তে এই কলোনির ৮১০ টি আবাসন ৫ হাজারের মতো ভোটার রয়েছেন। তারা ভোট দেন বার্ণপুরের বারি বিদ্যালয়ে। ঘটনাচক্রে এই বিদ্যালয়েও বিদ্যুৎ নেই।


এই কলোনীতে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে পানীয় জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা ঠিক মত নেই। কলোনির বাসিন্দারা বিক্ষোভ করে পানীয় জলের পরিষেবা একটু ঠিক হলেও বিদ্যুৎ পরিষেবা এখনো ঠিক হয়নি।
কলোনির বাসিন্দা তথা বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানার প্রাক্তন কর্মী শিশির চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা নিরুপায় হয়ে এবার ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছি। আমাদের বকেয়া টাকা বাকি পড়ে রয়েছে কোম্পানির ঘরে। হাইকোর্টে তা নিয়ে কেস চলছে।
আরএসপি নেতা তথা কলোনির বাসিন্দা আশীষ বাগ বলেন, কিছু দিন আগে পানীয় জল কেটে দেওয়া হয়েছিলো। রাস্তা অবরোধ আন্দোলন করার পাশাপাশি মহকুমা প্রশাসনের কাছে বলে জলের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। এখন বিদ্যুৎ রাত ৯ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত দেওয়া হয়। আমি নির্বাচনের জন্য হওয়া সর্বদলীয় বৈঠকে কলোনির পানীয়জল ও বিদ্যুতের সমস্যার কথা বলে জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম।


কলোনির বাসিন্দা বিন্দু সিং, ঝুমা নিয়োগী, রমা নন্দীরা বলেন, আমাদের পরিবার আছে। বাচ্চাদের পড়াশোনা করতে অসুবিধা হচ্ছে বিদ্যুতের জন্য। অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়ে আমাদেরক জীবনযাপন করতে হচ্ছে। তাই আমার প্রশাসনিক মহল ও বিভিন্ন নেতাদের কাছে গিয়ে বলছি যে আমাদের কলোনির জন্য বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। আমরা তার খরচ দিয়ে দেবো। কিন্তু তা আজও হয়নি। যখন আমাদের পাশে কেউ দাঁড়াচ্ছে না তখন আমরা ভোট দিয়ে কি করবো? তাই এবার আমরা ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারা আরো বলেন, যে আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য আসানসোলের প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। যাতে তারা আমাদের সমস্যা বুঝতে পারেন।


জেলা প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, গোটা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *