বহিরাগত প্রসঙ্গে নিজেকে ভূমিকন্যা বলে তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থীকে আক্রমন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালের
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্তসেনগুপ্ত, আসানসোল, ২২ মার্চঃ আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল দলের টিকিট পাওয়ার পরে সোমবার দুপুরে আসানসোলের কুুমারপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন। সেখানে তিনি অভিযোগ করে বলেন, এই এলাকা বিদ্যুতের অবস্থা খুবই খারাপ। সব সময় লোডশেডিং হয়। যেখানেই সভা করতে যাচ্ছি সেখানেই বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, বার্নপুরে
আমার ছোটবেলায় এখানে পড়াশোনা করেছি। বাবার চিকিৎসক হওয়ার কারণে এখানকার স্কুলে ও কলেজে পড়াশোনা করেছি। তিনি নিজেকে এখানকার ভূমিকন্যা বলেও দাবি করেন। সোশ্যাল মিডিয়া অগ্নিমিত্রা পালের সঙ্গে তার বাবার ছবি ব্যবহার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটাতো আমার কাছে গর্বের বিষয়। আমার বাবা ৫৫ বছর ধরে এখানকার জনপ্রিয় চিকিৎসক হয়ে আছেন।
উল্টোদিকে তার বিরুদ্ধে আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হওয়া সায়নী ঘোষের নাম না করে তিনি বলেন, উনি আসলে বহিরাগত। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অন্য রাজ্য থেকে বাংলায় আসা বিজেপি নেতাদের বহিরাগত অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, আমাদের দলের যারা বাইরে থেকে আসছেন তারা দলকে পরামর্শ দিতে আসছেন এই ভোটের সময় । তারা কেউই বহিরাগত নন। তারা সকলেই ভারতীয়।
বিজেপি প্রার্থীর বহিরাগত মন্তব্য করা নিয়ে সায়নী ঘোষ বলেছেন, অগ্নিমিত্রাদি আসানসোল ছেড়ে কলকাতায় যতদিন আছেন আমিও তত বছর কলকাতাতেই আছি। আর আমি বাংলার মেয়ে। গোটা বাংলার ভূমি কন্যা। এটাকে ওনার মাথায় রাখার জন্য বলবো। এরপরেও উনি যদি আমাকে কোনও আক্রমণ করেন, তাহলে আসানসোলের মানুষ ভোটে ইভিএমে তার জবাব দিয়ে দেবেন ।
সাংবাদিক সম্মেলনে অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, এই বিধানসভা কেন্দ্রে বহু জায়গায় দেখছি পানীয়জলের ব্যবস্থা নেই। অনেক বাড়িও এমন আছে যেখানে শৌচাগার নেই। প্রচুর মাটির বাড়িও আছে। প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনা প্রকল্পে এইসব বাড়িগুলো বদলে পাকা করা যেতেই পারতো। রাজ্য সরকার তা করে দেয়নি। এখনো শৌচালয় না থাকায় মহিলাদের মাঠে বাইরে যেতে হচ্ছে।
তার দাবি, আমরা ক্ষমতায় এলে জল, বিদ্যুত ও ঘরে ঘরে শৌচালয়ের ব্যবস্থা করব। এখানে নতুন শিল্প এনে কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করবো। বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরে বিগত সময় বার্ণপুরের বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানা বন্ধ হয়েছে। ১৬ টি কয়লাখনি বন্ধ হয়েছে। কি ভাবে আবার ঐ কারখানা চালু করা যায় তা নিয়ে অবশ্যই তিনি ভোটে জেতার পর ভাববেন বলে এদিন জানান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, আসানসোলের পরিবেশ দূষণ নিয়েও তিনি ভাবনাচিন্তা করবেন বলে জানিয়েছেন।
বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারে অবৈধ কয়লা খনি বা কয়লা পাচার বন্ধ করতে টাস্কফোর্সের কথা বলা হয়েছে। যদিও রাজ্যে মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স কমিটি আছে। তারপরেও দলের ইস্তেহারে কেন আবার টাস্ক ফোর্সের কথা বলা হয়েছে,? এর উত্তরে অবশ্য তিনি বলেন, এই বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবো। তবে আমরা ক্ষমতায় এলে অবৈধভাবে চলা কয়লা, বালি, পাথর চুরি ও পাচার যেকোনো ভাবে বন্ধ করবো।