শেষ চৈত্রের গরমে নাভিশ্বাস অবস্থা, ভোরে খেলার মাঠ, সকাল ও সন্ধ্যায় ডোর টু ডোর প্রচারে
জোর বিজেপি প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, বাড়ি বাড়ি যাওয়া ও রোড শোতে ভরসা তৃনমুল কংগ্রেসের মলয় ঘটকের
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৩ এপ্রিলঃ অন্য দলের প্রার্থীরা যেখানে সকাল থেকে বেলা একটু না গড়ালে ভোটের প্রচারে এলাকায় বেরোচ্ছেন না। সেখানে বেশ কিছুটা হলেও ব্যতিক্রম বলা যেতে পারে আসানসোল উত্তর বিধান সভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়।




তবে পিছিয়ে নেই রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী এই কেন্দ্রে তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থী মলয় ঘটক। তিনি নাম ঘোষণা হওয়ার পরের দিন থেকে ময়দানে নেমে পড়েছেন। যাতে বিরোধীরা একটুও জায়গা না পায়। তিনি একবারে নিজের মতো করে প্রচার করছেন।
বিজেপি প্রার্থী একেবারে ভোরবেলাতেই দলের নেতা ও কর্মীদের নিয়ে প্রচারের জন্য বেরিয়ে পড়ছেন বাড়ি থেকে। এক এক দিন চলে যাচ্ছেন নিজের কেন্দ্রের এক একটা মর্নিং ওয়াক প্লেসে। ভোরবেলায় এইসব জায়গায় অনেকেই প্রাতঃভ্রমন করতে আসেন। তাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে উঠছেন বিজেপি প্রার্থী। শুনছেন তাদের কথা, অভাব অভিযোগের বৃত্তান্ত। প্রার্থী তাদেরকে বলছেন নিজের আগামী দিনের পরিকল্পনা। সঙ্গে বলছেন দল ক্ষমতায় এলে আসানসোল ও সারা বাংলার জন্য ভাবনার কথাও।

এভাবেই কোন দিন ঘুরতে ঘুরতে পোলো গ্রাউণ্ডে, কোন দিন লোকো স্টেডিয়ামে যাচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী। সেখানে ভোরবেলায় ফুটবল বা ক্রিকেট খেলে অল্পবয়সী ছেলেরা। তাদের সঙ্গে মাঠে নেমে পড়েন কৃষ্ণেন্দু। তাদের সঙ্গে রীতিমতো খেলেনও বিজেপি প্রার্থী। তারই ফাঁকে কিশোর ও যুবাদের সঙ্গে ভোট নিয়ে আলোচনাও সেরে নেন তিনি । তাদের মধ্যে অনেকেই এবার রাজ্য বিধান সভা নির্বাচনে প্রথম ভোট দেবে। কাজেই ভোট নিয়ে একটা চাপা উত্তেজনা আছে তাদের মধ্যে, সেটা বুঝতে অসুবিধা হয়নি পদ্ম শিবিরের প্রার্থী। যেটা তিনি নিজের প্রথম রাজনৈতিক লড়াইয়ে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন। আবার কোনদিন কোথাও রাস্তার পাশে ছোট চায়ের দোকানে হাজির হচ্ছেন কৃষ্ণেন্দু। যেখানে ভোরবেলায় বেশকিছু মানুষের জটলা হয়। সবার হাতে গরম চায়ের ভাঁড় আর মুখে রাজনীতির কথা। তাদের সঙ্গে একটু বসে তিনি সেরে নিচ্ছেন নিজের প্রচার। এইভাবে কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় কোনদিন পৌঁছে যাচ্ছেন চিত্রা মোড়ের চায়ের দোকান ও কল্যানপুর হাউজিং এলাকা। তবে এইসব প্রচারে তিনি কোনও ঝাণ্ডা নিয়ে যাচ্ছেন না। সঙ্গে দলের নেতা ও কর্মীদের ভিড় করে নিয়ে যাচ্ছেন না।
ভোরবেলার অন্য ধরনের প্রচারের পরে সকাল সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত এলাকায় এলাকায় ঘোরা। আবার বিকেল পাঁচটার পরে মিছিল করে এলাকায় এলাকায় ডো টু ডোর।
কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, আসানসোল শহর তথা শিল্পাঞ্চলে এই সময় গরম ও তাপমাত্রা খুব বেশি হয় । ভোরবেলায় বেরিয়ে পড়লে বাড়তি প্রচার করতে পারছি। বেলা বাড়লে দলীয় কর্মসূচিতো আছেই। এই প্রচারটি আমি জনসংযোগের জন্য নিজ উদ্যোগেই শুরু করেছি। সকাল সকাল এই প্রচারের কাজটা করতে পারায় মনটাও ভালো থাকছে। অনেক এনার্জি পাচ্ছি। দুপুরে ও রাতে কার্যালয়ে বসে দলের নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে নিচ্ছি। সবশেষে বিজেপি প্রার্থীর দাবি, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ভালই সারা পাচ্ছেন। গোটা বাংলার সঙ্গে পরিবর্তনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে আসানসোল উত্তর বিধান সভাতেও বলে দাবি করছেন কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় ।
তবে, এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীর লড়াই রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে। তিনি অবশ্য প্রচারে পিছিয়ে নেই। মলয় ঘটক প্রতিদিনই এলাকা ধরে ধরে ডোর টু ডোর ও রোড শো করছেন। সঙ্গে এলাকা ভিত্তিক ছোট ছোট সভা। সব জায়গায় তার সঙ্গে থাকছেন ভাই আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ অভিজিৎ ঘটক ও দলের অন্য নেতারা।
মলয় ঘটক বলেন, সারা বছর নিজের এলাকায় থাকি। সব জায়গায় যাই। তাই নির্বাচনে কোন সমস্যা হয়না। তার দাবি, মানুষ যেমন গত ১০ বছর ধরে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন, এবারের থাকবেন। যারা ভোট পাখি, তারা আসবে আর চলে যাবে। গরম অবশ্য পড়েছে। তবে তাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ মলয় ঘটক। অভিজিৎ ঘটক বলেন, সব জায়গায় ভালো সাড়া পাচ্ছি। রোড শো ও মিছিলে প্রচুর মানুষ ভিড় করছেন। ওয়ার্ডের রোড শোতে ভিড় অনেক। যা উন্নয়ন হয়েছে, তাতে চিন্তা নেই।