ASANSOLBengali NewsKULTI-BARAKAR

অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের নামে প্রায় ৬০ হাজার টাকার প্রতারণা

তদন্তে ADPC সাইবার ক্রাইম ও কুলটি থানার পুলিশ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : : এবার শিল্পাঞ্চলে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের নামে আর্থিক প্রতারণা। সাইবার ক্রাইম ও পুলিশের দ্বারস্থ দিল্লীর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পদাধিকারী।সারা দেশের সঙ্গে আমাদের রাজ্যে করোনা মহামারীতে প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রাণ সংশয়ে প্রচুর মানুষ। এমতাবস্থায় করোনা প্রতিষেধকের চাহিদা যেমন প্রচুর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অক্সিজেনের চাহিদা তুঙ্গে।কারণ করোনা রোগীর দেহে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় দরকার পড়ছে অক্সিজেনের। অক্সিজেন সিলিন্ডারের খোঁজে মানুষ এবং রোগীর পরিজনেরা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর অসাধু লোক অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের নামে প্রতারণা করে চলেছেন। শিল্পাঞ্চলে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের নামে প্রায় ৬০ হাজার টাকা প্রতারণার ঘটনাটি প্রথম সামনে এল।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেট এর কুলটি থানার অধীনে। কুলটি স্টেশন সংলগ্ন বাবুপাড়ার বাসিন্দা ওই মহিলার নাম অঙ্কিতা সরকার যিনি আসানসোল করপোরেশনে কর্মরত থাকার পাশাপাশি দিল্লীর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা “দিল্লী অ্যাসোসিয়েশন ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স” এর সেক্রেটারি। কুলটি এলাকাতেও তিনি সমাজসেবা করে থাকেন। কুলটি ব্লক নাগরিক কমিটির করোনা পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন সিলিন্ডারের দরকার হয় এবং তারা সাহায্য চায় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে।

সেই মত সংস্থার সেক্রেটারি অঙ্কিতা সরকার দিল্লীতে সংস্থার ফাউন্ডার এবং প্রেসিডেন্ট সুজয় গোস্বামীর সঙ্গে কথা বলেন। আর এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন কলকাতার গড়িয়ার কাছেই নরেন্দ্রপুর কামালগাছি এলাকার “অক্সিকেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড” নামে একটি সংস্থা দরকারে অক্সিজেন সরবরাহ করছে। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে অরবিন্দ অরোরা নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার কথা হয় । ওই ব্যক্তি তাকে বলেন তাদের কোম্পানিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুদ রয়েছে। সেই মত অঙ্কিতা দেবী পাঁচটি ১০ লিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং পাঁচটি রেগুলেটর অর্ডার করেন এবং জিএসটি বাবদ ৫৭,২৩০ টাকা ১১ ই মে তার ইন্ডিয়ান ব্যাংকের একাউন্ট থেকে ওই ব্যক্তির দেওয়া “ইন্ডাস ইন্ড ব্যাংক” এর একাউন্টে ৪ দফায় ইলেকট্রনিক ট্রান্সফার করেন।

কিন্তু পরের দিন অর্থাৎ ১২ ই মে কথামত ওই অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলি সহ রেগুলেটর সম্বলিত পার্সেল কুলটির ঠিকানায় না আসায় তিনি ওই অরবিন্দ অরোরা নামক ওই ব্যক্তিকে ফোন করলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখাতে থাকেন এবং পার্সেল ট্র্যাক নম্বর দিতে অস্বীকার করেন। ঘটনায় সন্দেহ হওয়ায় অঙ্কিতা দেবী যোগাযোগ করেন কুলটি থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ এর সঙ্গে। সেখানে প্রাথমিক জেনারেল ডাইরি করার পর তিনি সম্পূর্ন ঘটনাটি বর্ণনা করে ১২ ই মে আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম দপ্তরে অভিযোগ জানান ( অভিযোগ নম্বর ২৬৮/২১)। এরপর ১৩ ই মে তিনি ঘটনার সবিস্তার বিবরন দিয়ে কুলটি থানায় এফআইআর দাখিল করেন। কুলটি থানা এবং সাইবার ক্রাইম দপ্তর যৌথভাবে এই “মানি ফ্রড” এর ব্যাপারটি তদন্ত করছে। সূত্র মারফত জানা গেছে, যে ” ইনভয়েস” দেওয়া হয়েছে সেটিও সম্ভবত জাল। পুলিশের পক্ষ থেকে ওই মোবাইল নম্বরটি ট্র্যাকিং করা হচ্ছে এবং যে একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অঙ্কিতা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন , সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ব্যাপারটি জানানোর পরে তার সঙ্গে একই সংস্থার দ্বারা অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের নামে প্রতারনা করা হয়েছে। কিন্তু ওই ব্যক্তির বাড়িতে সবাই করোনা আক্রান্ত ছিলেন বলে ব্যাপারটি নিয়ে অভিযোগ জানান নি। এছাড়া অঙ্কিতা দেবী বলেন পুলিশের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক যাতে আর কেউ ওই ব্যক্তি বা সংস্থার দ্বারা প্রতারিত না হন।”

অক্সিজেন এবং ওষুধের নাম করে এই অসাধু চক্রের প্রতারণার জাল ঠিক কতটা বিস্তৃত সেটিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এখন দেখার বিষয় দোষী ব্যক্তিরা কত তাড়াতাড়ি পুলিশের জালে ধরা পড়ে, সংবাদ মাধ্যমের নজর সেদিকে অবশ্যই থাকবে।

বেঙ্গল মিররের পাঠকদের কাছে অনুরোধ তারা যেন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া কোনো নম্বরের মাধ্যমে ওষুধ বা অক্সিজেন কেনার জন্য টাকা ট্রান্সফারের আগে সঠিক ভাবে খোঁজখবর নেন। কারণ করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু চক্র মানুষকে প্রতারণা করে সর্বস্বান্ত করছে।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *