Narada Case হাইকোর্টে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা শুনানি, পড়ুন সওয়াল জবাবের অংশ
আগামীকাল দুপুর ২টায় ফের শুনানি
বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত :বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে ডিভিশন বেঞ্চের সামনে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে নারদ মামলার শুনানি হয়। এসময় সিবিআইয়ের পক্ষে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা এবং অভিযুক্তের পক্ষে অভিষেক মনু সিংভি এবং অন্যরা তাদের যুক্তি উপস্থাপন করেন। আগামীকাল এ বিষয়ে আবার শুনানি হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত দুই মন্ত্রীসহ চার নেতাকে জেলে থাকতে হবে। লক্ষণীয় বিষয় হল, অসুস্থ থাকায় তিন নেতা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
জামিনের বিরোধিতা করে সওয়াল করছেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
সুব্রত, ফিরহাদদের জামিনের বিরোধিতা করে সওয়াল করলেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। অভিযুক্তদের সিবিআই হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানান তুষার মেহতা। বলেন, অভিযুক্তরা হাসপাতালে রয়েছেন। তাঁদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করার সুযোগ দেওয়া হোক।
দুপক্ষের সওয়াল জবাবের এবং বিচারকের মন্তব্যের কিছু অংশ নিম্নরূপ :
সিবিআইয়ের আইনজীবীর সওয়াল :
মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্য মন্ত্রীরা যে গিয়েছিলেন। তার জন্য কি আইনি কোনও অনুমতি নিয়েছিলেন?
বিনা নোটিসে কীভাবে গ্রেফতার: অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি
বিনা নোটিসে কীভাবে গ্রেফতার করা হল। প্রশ্ন তুললেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। আইনজীবী জানালেন, অন্তর্বর্তী জামিনের ওপর এ ভাবে আগে মামলা হয়নি।
সুব্রতকে আটকে রাখা যায় না, : অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি
সুব্রত মুখোপাধ্যায় ৪৫ বছরের বেশি সময় ধরে বিধায়ক। ৭৫ বছরের বেশি বয়স হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী আটকে রাখা যায় না। আদালতে বললেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।
এমন কি প্রথম হল? প্রশ্ন সিঙ্ঘভির
আমি মানছি ওই দিন নিজাম প্যালেসে যা হয়েছিল। তা ঠিক হয়নি। কিন্তু এরকম ঘটনা কি ভারতে প্রথম? আদালতে প্রশ্ন অভিষেকের।
করোনা পরিস্থিতিতে জেল জরুরি? আদালতের প্রশ্ন
করোনা পরিস্থিতিতে নেতা এবং মন্ত্রীদের জেলে রাখা কি একান্তই জরুরি? সিবিআইয়ের কাছে জানতে চেয়ে প্রশ্ন আদালতের।
কোভিড বিধি ভঙ্গের যুক্তিতে মামলা স্থানান্তর করা ঠিক হবে না: সিঙ্ঘভি
আদালতকে সিঙ্ঘভি জানালেন, মানছি ১৭ মে কোভিড বিধি মানা হয়নি। তা বলে ৪০৭ ধারায় নারদ মামলা অন্যরাজ্যে নিয়ে যাওয়া ঠিক নয়।
৫ বছর পর মনে পড়ল মামলার কথা: সিঙ্ঘভির
গত পাঁচ বছরে এই মামলা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ পর্যন্ত এই মামলায় কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আদালতকে বললেন অভিষেক।
মুখ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রীর পদক্ষেপ কি গ্রহণযোগ্য: বিন্দাল
সিবিআই আমাদের জানিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রী গিয়েছিলেন। এটা কি গ্রহনযোগ্য? প্রশ্ন করলেন বিচারপতি বিন্দাল।
পুলিশের সাহায্য না নিয়ে সরাসরি কোর্টে কেন সিবিআই, প্রশ্ন সিদ্ধার্থ লুথরার :
শুধু অ্যাটর্নি জেনারেলকে নোটিস দেওয়া হয়। সিবিআই পুলিশের সাহায্য না নিয়ে সরাসরি কোর্টে চলে এল। আদালতে বললেন ফিরহাদদের পক্ষের আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা।
সেদিনের পরিস্থিতি ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি’ ছিল: তুষার মেহতা
রিকল মামলা শুনতে গেলে আপনাদের সেদিনের পরিস্থিতি বিবেচনা করতেই হবে। ওই পরিস্থিতি ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি’ ছিল। বিচারপতিকে জানালেন সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেহতা। বললেন, দল বেঁধে মুখ্যমন্ত্রী আরও লোকজন নিয়ে সিবিআইয়ের দফতরে ঢুকে যান। বলেন আমাকে গ্রেফতার করুন। এমনকি ধর্নাতেও বসে যান। এটা নজিরবিহীন, বললেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।
প্রভাবশালী নেতাদের সুবিধা দিতে আইনের ক্ষতি করা হয়েছে: মেহতা
গ্রেফতার ৪ প্রভাবশালী নেতা মন্ত্রীর প্রভাব এতটাই বেশি যে, তাঁদের যাতে সশরীরে হাজিরা না দিতে হয়, তার আর্জি করেন আইনজীবীরা। ভার্চুয়ালি হাজিরা দেওয়ার প্রস্তাবও রাখা হয়। আইনমন্ত্রী নিজে আদালতে যান। এমন নজির আগে দেখা যায়নি। এতে আইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আদালতে বললেন মেহতা।
সেদিনের বিশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ছিল: সিবিআইয়ের আইনজীবী
সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেহতা বলেন, সেদিনের বিশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ছিল। নিজামে প্রচুর মানুষ এসে ভিড় করেছিলেন। অফিসারদের পক্ষে তাই বাইরে আসা সম্ভব হয়নি। বেআইনি ভাবে ভিড় করে বিক্ষোভ দেখানো উন্মত্ত জনতাকে সামলানোও সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়েই অভিযুক্তদের ওখানে রাখা হয়। পরে মুখ্যমন্ত্রী নিজে সেখানে পৌঁছে যান। বলেন, ‘‘আমাকেও গ্রেফতার করুন।’’ এরপর কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। তুষারের কথায়, ‘‘সিবিআইয়ের বিচারককে এই পরিস্থিতিতে জামিনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল।’’
সেদিনের ঘটনা নজির বিহীন: তুষার মেহতা
দল বেঁধে মুখ্যমন্ত্রী আরও লোকজন নিয়ে সিবিআই দফতরে ঢুকে যান। তাঁকে গ্রেফতার করার দাবি জানান। ধর্নাতেও বসে যান। এটা নজিরবিহীন, বলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। তাঁর কথায় এটা সাধারণ মামলা নয়। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ধর্নায় বসছেন। এটা কি হতে পারে? এরপর থেকে সাধারণ গ্রেফতারেও তো এটা ট্রেন্ড হয়ে যাবে। তুষার বলেন, অভিযুক্তদের হেফাজতে নিয়ে তদন্তের সুযোগ দেওয়া হোক।
বিক্ষোভকে যেভাবে দেখানো হচ্ছে, তা ঠিক নয়: সিঙ্ঘভি
এরকম অনেক মামলায় বিক্ষোভ হয়। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে জড়িত ঘটনায় মানুষের ক্ষোভ থাকেই। এটা ঠিকই এ ধরনের বিক্ষোভ দেখানো উচিত নয়। তবে এই বিক্ষোভকে যে ভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে তা-ও ঠিক নয়, বললেন ফিরহাদ, সুব্রতদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।
মুখ্যমন্ত্রীর জন্য অশান্তি হয়নি: সিঙ্ঘভি
অভিষেক বললেন, মুখ্যমন্ত্রীর জন্য অশান্তি হয়নি। বরং তিনি এবং অন্য বিধায়কেরা অশান্তির বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা কর্মীদের বার বার শান্ত থাকতে বলেছেন। কোনও প্ররোচনা দেওয়ার উদাহরণ নেই। আসলে যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর মুখ্যমন্ত্রীর সহকর্মী। তাই হয়তো মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছিলেন। এ নিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী নিজাম প্যালেসে ৫-৬ ঘণ্টা কেন: বিচারপতি
অভিষেককে বিচারপতির প্রশ্ন, সহকর্মী মানছি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তো অল্প সময়ের জন্য যাননি। ৫-৬ ঘন্টা ছিলেন নিজাম প্যালেসে। এ ব্যাপারে আপনি কী বলবেন? কেন শুনানি চলাকালীন নিম্ন আদালতে ছিলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী? প্রধান বিচারপতি জানতে চাইলেন, আপনি কী বলতে চান এটা গুরুতর নয়। আমাদের পর্যবেক্ষণে পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক থাকত। তা হলে অভিযুক্তদের আদালতে নিয়ে আসা যেত। কিন্তু তা হয়নি। এ দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।
বিধায়কেরা বলছেন, হারটা ঠিক হজম হয়নি: সিঙ্ঘভি
অভিষেক বলেছেন, আইনমন্ত্রী নিম্ন আদালতে গিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু মন্ত্রীর হওয়ার পাশাপাশি তিনি বিধায়ক। সেখানে এই ঘটনাটিকে অস্বাভাবিক ভাবে দেখব কেন? অনেক বিধায়ক তো এমনও বলছেন, আমাদের সতীর্থদের ধরে নিয়ে যাওয়া হল কারণ হারটা ঠিক হজম হয়নি।
কোনও নেতারই বিচার ব্যবস্থাকে বাধা দেওয়া উচিত নয়: সিঙ্ঘভি
অভিষেককে বিচারপতি প্রশ্ন করেন আপনার মতে একজন নেতার কর্তব্য কি? অনুগামীদের প্ররোচিত করা?
অভিষেক জবাব দেন আইনজীবী হিসাবে বলব, কোনও নেতারই বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া উচিত নয়।
মুখ্যমন্ত্রী প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেননি: সিঙ্ঘভি
অভিষেক বললেন, সিবিআই দফতরে মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ায় কোনও প্রভাব খাটানো হয়েছে বলে মনে করি না। এটি কেন্দ্রীয় সংস্থার অফিস। মুখ্যমন্ত্রী যদি কলকাতা পুলিশ বা রাজ্য পুলিশের দফতরে বসে থাকতেন, তা হলে বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার অভিযোগ মানা যেত।
বিচার কি তবে রাস্তায় হবে, পাল্টা প্রশ্ন বিচারপতির :
অভিষেককে বিচারপতির পাল্টা প্রশ্ন, ঘটনাটিকে প্রশাসককের নজর দিয়ে দেখা উচিত নয় কি? মুখ্যমন্ত্রী সিবিআই দফতরে। আইনমন্ত্রী সিবিআই আদালতে। তাহলে বিচার হবে কোথায়? রাস্তায়?
গণতন্ত্রে প্রতিবাদ জানাতে মানুষ পথেই নামে: সিঙ্ঘভি
গণতান্ত্রিক দেশে লোক রাস্তায় নেমেই প্রতিবাদ করে। আইনকে নিজের পথেই চলতে দেওয়া উচিত, বললেন সিঙ্ঘভি।
শেষের দিকে বিকেল সাড়ে ৪ টের পড়ে
৫ মিনিটের বিরতি নেন প্রধান বিচারপতি। ৫ মিনিটের বিরতির পর ফের শুরু হয় শুনানি। বিরতির আগে
জানিয়েছিলেন, তিনি এবং সুব্রত, ফিরহাদদের আইনজীবী কিছুক্ষণ কথা বলবেন নিজেদের মধ্যে। সেই বিরতি শেষে ফের শুরু হয় শুনানি। কিন্তু এরপর নারদ গ্রেফতারি মামলার শুনানি
মামলা আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি রাখা হয়। আগামীকাল দুপুর ২টায় ফের শুনানি শুরু হবে।
এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের লক্ষ্য থাকবে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়।
Read Also Narada में फिर नाटकीय मोड़, CM,कानून मंत्री, सांसद कल्याण को बनाया आरोपी