ASANSOLBARABANI-SALANPUR-CHITTARANJANKULTI-BARAKARRANIGANJ-JAMURIA

দুই সপ্তাহের মধ্যে আসানসোল মহকুমায় ১১জন মাদক কারবারি কে পুলিশ গ্রেফতার করল

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল । আসানসোল খনি শিল্পাঞ্চলে কয়েক বছর আগে পর্যন্ত উত্তর আসানসোলের রেলপার এলাকার কিছু অংশ এবং কুলটি থানার নিয়ামতপুরের  পতিতাপল্লীর আশেপাশেই ড্রাগস ব্যবসা শুরু হয়। ধীরে ধীরে  নিয়ামতপুরের ড্রাগস এর সাথে সাথে পতিতা পল্লীতে ভিন রাজ্যের অপরাধীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। এমনকি এখান থেকে অস্ত্র কারবারও চলতে থাকে। বর্তমান পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুর দায়িত্ব নেওয়ার পর তার কাছে সম্প্রতি গুরুদুয়ারা প্রবন্ধ কমিটির পক্ষ থেকে মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ডেপুটেশন দেওয়া হয় ।সেখানে আসানসোল, বার্নপুর ও কুলটির  বেশ কিছু মাদক পাচারকারী নামও তারা উল্লেখ করেন । মাত্র গত দুই সপ্তাহের মধ্যে আসানসোল মহকুমায় ১১জন  মাদক কারবারি কে পুলিশ গ্রেফতার করল।

ডিসি (সদর) অংশুমান সাহা জানিয়েছেন এই অভিযান চলবে। বছর দুই আগে রেলপারে ড্রাগের কারবার বন্ধ করতে গিয়ে তদানীন্তন কাউন্সিলর  হাজী নাসও হাজী মাদক পাচারকারীদের হাতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এবারের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই উত্তর আসানসোলের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি উৎপল সিনহা সাংবাদিক সম্মেলন করে ড্রাগ কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি তুলেছিলেন।


পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুর এর নির্দেশে এই সব এলাকায় পুলিশ সক্রিয় হয় এবং গত আটই জুন কুলটির নিয়ামতপুরের গত দুই দশকের অন্যতম ড্রাগস কারবারি   মহিলা ময়না দেবী কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ।তার দুই সঙ্গী  মুকেশ সিং এবং জিতেন্দ্র মাহাতোকে ১৫ গ্রাম অত্যন্ত দামী ড্রাগস  সহ ইসকো বাইপাস থেকে ধরা হয়। তাদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। যদিও ময়নার অন্যতম সহযোগী পিন্টু এখনো ফেরার। পুলিশ তাকে খুঁজছে। এই ময়নাই এখন বিশাল টাকার মালিক।


পুলিশ এবং সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে মাত্র কয়েকদিন আগেই গুরুদুয়ারা প্রবন্ধ কমিটির পক্ষ থেকে পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ করা হয়েছিল আসানসোল এবং বার্নপুর ও কুলটির  বিভিন্ন জায়গায় গাঁজা চরস সহ নানান নেশার দ্রব্য এনে সেগুলো ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে ছাত্র, তরুণ এবং যুবকদের মধ্যে।


এই অভিযোগ পাওয়ার পর উত্তর থানার পুলিশ  তদন্তে নেমে কয়েকদিন আগে   পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ থেকে তেইশ কেজি গাঁজা পাওয়া গেছে। একটি গাড়ীও উদ্ধার হয়েছে। তাদের আদালতে পেশ করে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল।  কুলটি পুলিশের পরে এবার,জামুড়িয়ার শ্রীপুর- ফাঁড়ির ইনচার্জ মানব ঘোষের নেতৃত্বে একটি অভিযান চালানো হয়।

শ্রীপুর পুলিশ জেকে নগর মোড় থেকে নিয়ামতপুরের কুলতোডার বাসিন্দা বাবন ব্যানার্জী, কুলটির রাজেশ চৌধুরী এবং নিয়ামতপুর ঘাটিগলীর ঋষি যাদব এই ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনজনের হেফাজত থেকে ১৮ গ্রাম মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। শ্রীপুর পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত দুষ্কৃতীদের সন্ধান করছিল। অবশেষে একটি গোপন সূত্রে তথ্যের ভিত্তিতে শ্রীপুর পুলিশ এই মাদক চোরাচালানকারীদের ধরে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে তিনজন মুর্শিদাবাদের লালগোলা থেকে হেরোইন নিয়ে এসে আসানসোল অঞ্চল কারবার করত।পুলিশ নারকোটিকস অ্যাক্ট এর ২০ বি ধারায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে গত শুক্রবার আসানসোলের  আদালতে হাজির করে এবং তাদের ৭ দিনের জন্য পুলিশ রিমান্ডে নেয়।

এ সি  পি( সেন্ট্রাল ) তথাগত পান্ডে বলেন শ্রীপুরে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র আছে ।এরা বিভিন্ন পার্টি করতে গিয়ে সেখানে ড্রাগ সরবরাহ করছে এবং প্রথমে এই ড্রাগ নিজেদের ব্যবহারের জন্য ৩০০ টাকা করে খরচ করত। কিন্তু তারপর এত টাকা তাদের কাছে নেই ভেবে তারা মুর্শিদাবাদের লালগোলার সাথে যারা এধরনের কারবার করে তাদের সঙ্গী হলো। বিনিময়ে বিনামূল্যে নিজেরা যেমন মাদক নেশা করার জন্য পাচ্ছিল তেমনি ব্যবসাও জমে ওঠে। আর কখনো নিয়ামতপুরের ময়নার হাত ধরে, কখনো বা বিট্টু, বাবনের হাত ধরে বা কখনো আসানসোল রেল পারে এরকম বেশ কয়েকজন এর মাধ্যমেই গোটা আসানসোল শিল্পাঞ্চল ধীরে ধীরে মাদক কারবারিদের সাম্রাজ্যে পরিণত হচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রী থেকে যুবক-যুবতীরা।


 ডিসি (সদর )অংশুমান সাহা বলেন পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে আমরা যে করেই হোক এই মাফিয়াদের সবাইকে ধরব এবং এদের কারবারকে ভাঙার জন্য নিয়মিত আমাদের তল্লাশি চলবে। এই ব্যবসার সাথে মুর্শিদাবাদের যোগাযোগ আছে তাও আমরা জানতে পেরেছি।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *