স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা “স্বপ্নসাথী ফাউন্ডেশন” মৌসুনী আইল্যান্ডে যশ( YAAS) ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির দিকে সাহায্যের হাত বাড়াল
বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : অশোকনগর ,গুমা ও হিংগলগন্জ এর পর যশ ( YAAS) ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে সমাজসেবী সংস্থা “স্বপ্নস্বাথী ফাউন্ডেশন” ১৬ জুন মৌসুনী আইল্যান্ডে প্রায় ৫০০ অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াল। মৌসুনী আইল্যান্ডে রাজনৈতিক দ্বন্দের অভিযোগ করে বিভিন্ন ব্যাক্তি ও এনজিও ঐভাবে যশ (YAAS) ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রান বিতরন করতে না আসায় “স্বপ্নসাথী ফাউন্ডেশন” এর ত্রান পেয়ে স্থানীয় লোকজন আবেগে আপ্লুত হন এবং স্বভাবতই ধন্যবাদ দেন। “স্বপ্নসাথী” কোভিড বিধি মেনে স্থানীয় প্রশাসন,এসডিপিও , পঞ্চায়েত প্রধান এর অনুমতি নিয়ে ত্রান বিলি করে।
এবার একটু নজর দেওয়া যাক স্বপ্নসাথী ফাউন্ডেশমের দিকে। একদল তরুনের স্বপ্নের নাম স্বপ্নসাথী ফাউন্ডেশন । ৩১ জনের এই কমিটি নিজেদের চাকুরী ও ব্যবসার পর পুরো সময়টা ব্যয় করেন জনস্বার্থে। গতবছর আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২০০০ পরিবারের পাশে দাডিয়েই থেমে থাকেনি। কাজ করেছেন অসহায় পরিবারের চিকিৎসা ও শিক্ষার কাজে। স্বপ্নসাথী ফাউন্ডেশন মুলত শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করার কথা থাকলেও বর্তমানে কাজ করছেন সর্বক্ষেত্রে। কোন বড় ধরনের ডোনেশন বা বিদেশী সহযোগীতা ছাড়া নিজেদের ও বন্ধুবান্ধবের অর্থায়নে চলছে এই জনসেবামূলক কাজ। যশে ক্ষতিগ্রস্ত অশোকনগর, হিংগলগন্জ এর অসংখ্য পরিবারকে আর্থিক ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সহযোগীতা করার পর ১৬ জুন মৌসুনী আইল্যান্ডের ক্ষতিগ্রস্ত ৫০০ পরিবারকে চাল, ডাল, আলু, পেয়াজ, তেল, সয়াবিন, মাস্ক, বিস্কুট, মশলা সহ বিভিন্ন শুকনো খাবার দেওয়া হয়।ওই সময় স্বপ্নসাথী ফাউন্ডেশন এর সৌরভ দাস, রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস, তন্ময় সাহা, দেবজ্যোতি ফৌজদার, অর্নব চক্রবর্তী, বিক্রম তফাদার, পলাশ সজ্জন, সুব্রত মন্ডল, শুভাশীষ সরকার, শুভজিত বিশ্বাস ও বাশারুল মুন্না উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে ফাউন্ডেশন এর সভাপতি সৌরভ দাস বলেন, “আমি পেশায় শিক্ষক, সেবা করাই আমার ধর্ম। আমাদের স্কুল কলেজের কিছু বন্ধু নিয়ে ২০১৭ তে আমরা জনসেবামূলক কাজ করার জন্য স্বপ্নসাথী ফাউন্ডেশন গঠন করি হাবরা তে। পরবর্তীতে আমরা কলকাতায় অফিস নিয়ে ৩১ জনের কমিটি করে এনজিও হিসেবে নথিভক্তি করি। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের সাধ্যমতে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। বিশেষ করে যে সব অসহায় ও গরীব কিন্তু মেধাবী ঐ সব শিক্ষার্থীদের পাশে আমারা দাঁড়াবো। প্রতি মাসে আমরা নগদ সহযোগীতা করবো যেন অর্থের অভাবে পড়াশোনা বন্ধ না হয়। হয়তো খুব শীঘ্রই আমরা একটি বেসরকারি বিদ্যলয়ের ১০০ জন শিক্ষারথীর দায়িত্ব নিবো। পরবর্তীতে তা আরো বাড়বে। পাশাপাশি অন্যান্য সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজেও থাকবে স্বপ্নসাথী।”
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার
বিশেষ উপদেষ্টা ডায়মন্ড হারবারের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পুলিশ রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, “এই এনজিও এর সবাই আমার হয় স্কুল না হয় কলেজমেট। তাই আমিও একজন স্বপ্নসাথী। আজ আমরা ৫০০ পরিবারকে সহযোগীতা করেছি মৌসুনী আইল্যান্ডে। গত ১ সপ্তাহ ধরে কমিউনিটি কিচেন করে অসংখ্য পরিবারকে খাবারের ব্যবস্থা করেছি। জুলাই এর প্রথম সপ্তাহে আমরা আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা জংগলমহলে অসহায় ও গরীব পরিবারকে সহযোগীতা করতে যাবো । আমার কর্মজীবনের ৪ বছর ঐখানেই ছিলাম। আমি চাই স্বপ্নসাথী নি:স্বার্থভাবে সবার পাশে দাঁড়াক।আমি ও সাধ্যমতো চেষ্টা করবো।”
প্রতিষ্ঠানের অন্য এক ঊর্ধ্বতন আধিকারিক বাশারুল মুন্না বলেন, “স্বপ্নসাথী আমাদের স্বপ্নের নাম। আমরা এখন কাজ করছি পশ্চিমবাংলায়। আগামীমাস নাগাদ আমাদের ভুবেন্বশর, বিহার,আসাম, ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি গঠন করে জাতীয়স্তরে আমাদের কার্যক্রম শুরু হবে । আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত তাই আমরা চেষ্টা করছি বাকী জীবনটা অসহায় পরিবার ও গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে।”