এশিয়ান বক্সসিংয়ে ব্রোঞ্জ জিতলেন চিত্তরঞ্জন রেল কারখানার মহিলা রেলকর্মী মিস মনিকা
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল : চিত্তরঞ্জন কারখানার মহিলা করনিক ও রেল কর্মী মিস মনিকা শুধু রেল নয় সারা দেশের নাম উজ্জ্বল করলেন এশিয়ান বক্সসিংয়ে ব্রোঞ্জ জিতে। দুবাই থেকে চিত্তরঞ্জন রেল শহরে ফেরার পর ভারতীয় রেলের এই কারখানার জোনাল ম্যানেজার সতীশ কুমার কাশ্যপ তার হাতে একটি শংসাপত্র তুলে দিয়ে সমগ্র রেল আধিকারিক এবং রেল কর্মীদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান বলে জানালেন চিত্তরঞ্জন রেল কারখানা জনসংযোগ আধিকারিক চিত্রসেন মন্ডল। ইউনিয়ন নেতা থেকে সহকর্মী সকলেই তার জন্য গর্ব বোধ করছেন।
![](https://i0.wp.com/bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2023/10/IMG-20230207-WA0151-e1698295248979.webp?resize=768%2C512&ssl=1)
![](https://i0.wp.com/bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2021/07/img-20210706-wa02701575298569298865901.jpg?resize=500%2C386&ssl=1)
চলতি বছরের ২১ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত দুবাইতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে ৪৮ কেজি বিভাগে ব্রোঞ্জ পদক ছিনিয়ে আনলেন চিত্তরঞ্জন রেল কারখানার এম টি এস(৫৬) শপের কর্মী মণিকা। এর আগে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে তিনি সোনার পদক পেয়েছিলেন। ঐ একই বছরে ডিসেম্বর মাসে কেরালায় অনুষ্ঠিত জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ন পদক এবং শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াদক্ষতার পুরস্কার পেয়েছিলেন। সে সময় প্রশাসনের তরফে তাকে সংবর্ধনা জানানো হয়।
আদতে হরিয়ানার রোহতকের কাছে রুরকি কিলোই গ্রামের বাসিন্দা মণিকা ১৪ বছর বয়স থেকে বক্সিং লড়াইয়ের শিক্ষানবীশি শুরু করেন স্থানীয় কোচ বিজয় গুড্ডার কাছে। তারপর থেকে দশ বছর ধরে তিনি লড়াইয়ের ময়দানে আছেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা তার দেওয়া হয় নি। স্পোর্টস কোটায় সি এল ডব্লুতে চাকরি পেয়েছেন ২০১৮ সালে। চাকরি পাওয়ার আগে রোহতকে স্থানীয় প্রতিযোগিতায় এবং চাকরি পাওয়ার পর রেলের হয়ে একাধিক জায়গায় লড়েছেন। তিনি জানান ২০১৯ এ ইন্দোনেশিয়ায় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক পান। তুর্কিতে ২০২০তে রৌপ্য পদক পান। এছাড়াও ২০২০ তে বেলগ্রেড থেকে তিনি রৌপ্য পদক পেয়েছিলেন। ২০১৯ এ তিনি দেশের মধ্যে বক্সিংয়ের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন নির্বাচিত হন ।নিজের জীবনের ঘটনা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, তিন ভাই তিন বোন এবং বাবা মায়ের সংসারে খুব একটা স্বচ্ছলতা না থাকায় তাকে কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে কাটিয়ে আজকের এই অবস্থায় পৌঁছাতে হয়েছে।
এরপর চলতি বছরে আন্তঃরেলওয়ে এবং জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আর কমনওয়েলথ গেমস এবং ২০২২-এর বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ তার লক্ষ্য। আগামী আগস্ট মাসে প্রাক্ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের কোচিং ক্যাম্প শুরু হবে দিল্লিতে। তাতে মণিকা যোগ দিচ্ছেন বলে জানান। ছিপছিপে চেহারার ক্ষিপ্রগতি মণিকার খাদ্য তালিকায় কখনও কখনও দু’একটা মিষ্টি থাকলেও তেল তিনি একেবারেই খান না।
তার স্বপ্ন বিশ্বের দরবারে অলিম্পিকসে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে শ্রেষ্ঠ গৌরব ছিনিয়ে আনা। এই লক্ষ্যেই এখন তিনি প্রতিদিন প্র্যাকটিস করছেন কখনো নিজের বাড়ির ভেতরে কখনো বা মাঠে দেশের গৌরব বক্সিং এর মধ্যে দিয়ে উজ্জ্বল করতে পারলেই শুধু চিত্তরঞ্জন নয় সারা দেশের সুনাম হবে এটাই আমার লক্ষ্য বলে তিনি জানান।