ASANSOLFEATUREDKULTI-BARAKAR

প্রায় ৩৭ বছর আগে একই রকমভাবে বরাকরের হয়েছিল একটি ঘটনা, কি হয়েছিল জেনে নিন

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। প্রায় ৩৭ বছর আগে বাম সরকারের আমলে ঠিক একই রকমভাবে বরাকরের আনোয়ার আনসারী নামে এক স্কুল ছাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে  নিজের বাড়িতে ফেরার মুখে তখনকার বরাকর ফাঁড়ির পুলিশ তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল একটি চুরির ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তারপর সেই ছেলে সেদিনই পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয়েছিল। সোমবার রাতে যেভাবে আরমান আনসারিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো তা নিয়ে গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছিল ঠিক সেদিনও সেই ধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল ।

file photo

কিন্তু সেই পরিবার বাম আমলে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু বারবার বিচার চেয়েও কোন বিচার পাননি। বরাকরের  অর্চনা গলিতে নিজের বাড়ির দরজায় বসে বসে কাঁদতে কাঁদতে প্রায় ৬৬ বছরের বৃদ্ধা সাদ্রা খাতুন সেদিনের কিভাবে তার ছেলেকে চিরকালের জন্য হারিয়ে ছিলেন তা বলছিলেন। একই সঙ্গে আজও তাঁর যে বিচার মেলেনি তার জন্য তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মেয়ের চোখের জল দেখে মৃত ছাত্রর ভাই সিরাজ আনসারী বললেন আমি নিজেই আজকে পুলিশি হেফাজতে আরমানের মৃত্যুর জন্য যারা বিচার চেয়েছেন তাদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছি।

 কি হয়েছিল  ১৯৮৪ তে? সেদিনের সে কথা বলতে গিয়ে মৃত ছাত্র আনোয়ার আনসারীর মা এবং  ভাই দুজনেই বললেন সে জেকে হাইস্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। ওর বাবা আকবর আনসারী ছিলেন ওই বিদ্যালয়ের সরকারী শিক্ষক। আমরা সন্ধ্যে নাগাদ পুলিশের কাছে খবর পাই আনোয়ারকে পুলিশ একটি ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে। রাত্রিবেলা পুলিশ পুলিশ ফাঁড়িতে খাবার দিতে গেলে পুলিশ জানায় আমরা এখান থেকেই খাবার দেবো। আপনারা খাবার  ফেরত নিয়ে যান। তার পরের দিন সকালে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে আমাদের জানানো হয় যে আনোয়ার নাকি খুব অসুস্থ হয়েছে এবং তাকে মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আসানসোলে আমরা গিয়ে দেখি ওর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাখা আছে। এই ঘটনা থেকে সেদিনও উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল এবং আমরা অভিযোগ জানিয়েছিলাম। আট থেকে দশ বার আমাদের বাড়িতে একাধিক পুলিশ অফিসার এসে তদন্ত করে গেছেন। কিন্তু মৃত্যুর বিচার আজও পায়নি। তখনকার বাম নেতারা অনিকেই আশ্বাস দিয়েছিলেন বিচার হবে। কোন সূরাহা মেলেনি।  সিরাজ আনসারী জানান আমার একমাত্র ভাই পুলিশের অত্যাচারে সেদিন মারা গিয়েছিল পুলিশ হেফাজতে। আর আজ একুশ বছরের যুবক আরমান সে তার বাবা-মার একমাত্র পুত্র সন্তান একইভাবে পুলিশি হেফাজতে মারা গেল। তাদের একটি মেয়েও আছে ।যে পুত্র সন্তান আরমান চলে গেল সে ওর বাবার সাথে সোফা বা  অন্যান্য গদির  কাজে যুক্ত ছিল। চুরির সাথে যুক্ত ছিল কিনা সেটা পুলিশ বলবে। আমরা বলতে পারি না। কিন্তু এই ভাবে পুলিশদের মারে মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনা। ঠিক ৩৭ বছর আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল আরো একবার বরাকর পুলিশ ফাঁড়িতে।

read also বরাকর কাণ্ড: ৫ পুলিশ আধিকারিক সাসপেন্ড, ৫ সিভিক পুলিশকে সরানো হল

Leave a Reply