ASANSOLBengali News

স্মার্ট আলো লাগানোর বরাত পেয়েও চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ, বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআর করলো পুরনিগম

বেঙ্গল মিরর , রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ৮ জুলাইঃ আসানসোল পুরনিগমের ১০৬ টি ওয়ার্ডে কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থা স্মার্ট আলো লাগানোর বরাত পেয়েছিলো। সেই আলো লাগানোর পাশাপাশি সাত বছর ধরে রক্ষণাবেক্ষণ করবে বলে প্রায় ২৫ কোটি টাকার চুক্তি করেছিল আসানসোল পুরনিগমের সঙ্গে। কিন্তু, অভিযোগ চুক্তি মতো ঐ সংস্থা গত এক বছরের বেশি সময় ধরে সেই কাজ ঠিকঠাক করছে না। এমনকি গত জানুয়ারি মাস থেকে সংস্থার লোকজনও আসানসোলে আসছে না। বারবার পুরো কর্তৃপক্ষের তরফে সংস্থাকে চিঠি দেওয়া ও কারণ দর্শাতে বলা হলেও কোন সদুত্তর মেলেনি। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঐ বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে আসানসোল দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলো পুরনিগমের পক্ষ থেকে।


আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ঐ সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে । ২০১৭ সালে আসানসোল পুরনিগমের ১০৬ টি ওয়ার্ডে স্মার্ট লাইটিং ব্যবস্থা চালু করার জন্য টেন্ডার করে কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল গ্রীন মিশনের দিকে লক্ষ্য রেখে ৪০% বিদ্যুতের খরচ কমানো। পুর এলাকার মধ্যে যত আলো লাগানো আছে সেগুলি বদল করে এলইডি করে দেওয়ার কথা। তাছাড়াও ঐ সংস্থার জন্য রবীন্দ্রভবনের উপরে আলাদা করে একটি কন্ট্রোল রুম তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিলো সেখান থেকে রাতে ডিমার যন্ত্র ব্যবহার করে ভোর পর্যন্ত আস্তে আস্তে আলো কমানো হবে। ঐ সংস্থার সঙ্গে চুক্তি ৭ বছরের জন্য পুরনিগমের হয়েছিল। চুক্তিতে বলা ছিল ১০৬ টি ওয়ার্ডের যেখানে রাস্তায় আলো খারাপ হলে সঙ্গে সঙ্গে তা কন্ট্রোল রুমে যাবে। আলো মেরামতের পরে সেই এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মোবাইলেও তা পৌঁছে যাবে। অর্থাৎ কন্ট্রোলরুমে বসেই বোঝা যাবে গোটা পুর এলাকায় কোথায় আলো জ্বলছে বা কোথায় জ্বলছে না। পাশাপাশি পুরনিগমের বিদ্যুৎ দপ্তরে সেই তথ্য চলে আসবে।


অভিযোগ প্রথম থেকেই ঐ সংস্থার যেভাবে কাজ করার কথা তারা তা করেনি। যে মানের লাইট, ডিমার যন্ত্র ও কেবল দেওয়ার কথা তাও দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয় রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যেভাবে তাদের অভিজ্ঞ লোক ও যন্ত্রপাতি থাকার কথা তাও ছিল না। এর ফলে ২০১৮ সালে একাধিকবার সংস্থাকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানানো হয় ও কৈফিয়ত তলব করা হয়। কিন্তু সংস্থা থেকে সঠিক জবাব আসছিল না। এরপর গত জানুয়ারি মাস থেকে সংস্থা সম্পূর্ণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। গত বছরে সংস্থা একটি বিল এই কারণে অবশ্য পুর কর্তৃপক্ষ পেমেন্ট করেনি বলে পুরনিগম সূত্র থেকে জানা গেছে। সংস্থার বকেয়া কাজ বা রক্ষনাবেক্ষনের বিষয়টি বাইরের সংস্থাকে দিয়ে পুরনিগম করাতে বাধ্য হচ্ছে। তারজন্য পুরনিগমকে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে ।

এই চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ জানিয়ে বৃহস্পতিবার ঐ সংস্থার বিরুদ্ধে আসানসোল দক্ষিণ থানাতে এফআইআর দায়ের করলেন পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি আরো বলেন, এখন সব খারাপ আলো বদলে ভালো আলো লাগানো, কেবল পরিবর্তন বা অন্যান্য যা কিছু করার দরকার তা পুরনিগমের পক্ষ থেকে আলাদা করে করানো হচ্ছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *