ASANSOLKULTI-BARAKAR

HELP FOR SITARAMPUR : সাতদিনের জন্য জলখাবার দেওয়া হল সীতারামপুর দিশার বাচ্চাদের

বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : গত দশ মাস ধরে সীতারামপুরের লছিপুরে দিশা জনকল্যাণ কেন্দ্রে দুঃস্থ পড়ুয়াদের যে মধ্যাহ্নভোজন প্রতিদিন চলে আসছিল আপাতত তা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে (HELP FOR SITARAMPUR) গ্রুপ ৷ কারণ বর্তমান অবস্থায় করোনা অতিমারীর জন্য অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের পাঠাতে চাইছেন না ৷ কিন্তু এই সংস্থাটি তাদের কর্তব্য থেকে বিচ্যুত হয়নি ৷ এখন তারা প্রতি রবিবার পড়ুয়াসহ এলাকার অন্তত একশোজন বাচ্চার জন্য পুরো সপ্তাহব্যাপী শুকনো জলখাবারের স্পেশাল প্যাকেট দিতে শুরু করেছেন ৷ সঙ্গে থাকছে স্যানিটারজাইশেন মাস্কও ৷ কারণ পুনরায় লকডাউন শুরু হওয়ায় এখানকার বাসিন্দা মূলত মহিলা অভিভাবিকাদের রোজগার প্রায় বন্ধ ৷

সেইদিকে লক্ষ রেখে গতকাল বিকালে আবার আগামী সাতদিনের জন্য জলখাবার দেওয়া হল সীতারামপুর দিশার বাচ্চাদের ৷ ছাতু, মুড়ি, কিসমিস, চানাচুর এবং বিস্কুট ৷ গতবছর থেকে এই অবহেলিত অঞ্চলে যে মানুষটি দিশার পড়ুয়া বা মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন, ইষ্টার্ন রেলওয়ে হায়ার সেকেণ্ডারী স্কুলের শিক্ষক ও সমাজসেবী বিশ্বনাথ মিত্র জানালেন, এই মে মাস ধরে পড়ুয়াদের দেওয়া হচ্ছে চাউমিন, কিসমিস, ফ্রুট কেক, চিঁড়ে, বিস্কুট, গুড় এবং অন্যান্য প্যাকেটজাত খাবার ৷ বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের দিকে তাকিয়ে এই খাদ্যতালিকা ৷
এই সংস্থাটির মূল উদ্যোক্তা আমেরিকার নর্থ বেঙ্গল ভার্জিনিয়া বেঙ্গলী এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রবাসী ভারতীয় পল উপাধ্যায় জানালেন, এন.ভি.বি.এ -এর দুই সদস্য সুমিত ভট্টাচার্য এবং সুদীপ্ত রয় গত তিনমাসের বাচ্চাদের খাবারের যাবতীয় অর্থ প্রদান করেছেন ৷ এই কর্মসূচী লাগাতার চলবে ৷


এই সংগঠনের অন্যতম সদস্যা রজনী দাস বললেনে, এখানকার অধিবাসীদের এক অংশ দরিদ্র যৌনকর্মী ৷ এছাড়া ছোট ছোট হোটেল বা দোকানে অনেক বাচ্চার মা বাবারা কাজ করেন ৷ করোনা অতিমারীর জন্য এমনিতেই রোজগার বন্ধ ৷ তারপর চলতি লকডাউনের ফলে এখন সবাই খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে পড়ে গেছে ৷ ভার্জিনিয়া থেকে তরুণ রায় জানালেন, আমরা খবর পেয়েছি লছিপুরে আর্থিক অবস্থা ক্রমশ এতই খারাপ হচ্ছে যে দিন দিন অন্যত্র অঞ্চল থেকেও গরীব বাচ্চারা খাবার নিতে চলে আসছে ৷ কাউকেই না ফেরানোর জন্য আমরা বলে দিয়েছি ৷


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবিকা বললেন, শুকনো জলখাবার পেয়ে আমাদের বাচ্চারা সকালের টিফিনে অন্তত ভাল কিছু খেতে পারছে ৷
অন্য দুই সদস্য প্রসেনজিৎ দাস এবং অনির্বাণ বণিক জানালেন, বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে তাকিয়ে পুষ্টিকর খাবার রাখছি মেনুতে ৷

গতকাল টিফিনের প্যাকেট বন্টনে সাহায্য করতে বিশ্বনাথবাবুরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দিশার সহ সচিব দেবব্রত অধিকারী, চাঁদ, টুম্পা সিনহা, বাপি সরকার, সাধনা দাশ, চাঁদ, ইন্দিরা দাশেরা উপস্থিত থাকছেন ৷
গতকাল দেখা গেল, জলখাবারের টিফিন পেয়ে সান্তনা রোহিত, গণেশ, রুবি, কিরণ আন্নুরা মহাখুশী ৷ তারা খাবারের প্যাকেট হাতে নিয়ে ঘরের দিকে রওনা হবার আগে বলে গেল, পরের রবিবার আবার আসব ৷

Leave a Reply