ASANSOL

অন্য রাজ্যের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে রানিগঞ্জে দুদিনের সেমিনার, শিল্পের প্রসারে মুখ্যমন্ত্রী সামনের সারিতে, স্বাগত জানালো Fosbecci

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ২ সেপ্টেম্বরঃ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার পানাগড় শিল্প তালুকে একটি বেসরকারি কারখানার শিলান্যাসের পাশাপাশি একাধিক প্রকল্পের সূচনা করেছেন। সেই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের শিল্পের প্রসারে বিভিন্ন পলিসি সহ আগামী দিনে রাজ্য সরকারের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন। যার মধ্যে অন্যতম হলো মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে হাই পাওয়ার কমিটি গঠন। এছাড়াও রয়েছে অন্ডাল বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করে তোলা, ভাঙ্গা চাল বা চালের খুদ থেকে ইথানল প্রোডাক্ট তৈরী।


দক্ষিণ বঙ্গের বনিকসভা ” ফসবেকি বা ফেডারেশন অফ সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (Fosbecci) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারের শিল্প প্রসারের ভাবনাকে স্বাগত জানালো। একইসঙ্গে দক্ষিণ বঙ্গের এই বনিকসভা বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে অবহেলা করায় সমালোচনায় সরব হয়েছে।
ক্যাট বা কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের ওয়েষ্ট বেঙ্গল চ্যাপ্টারকে সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণ বঙ্গ বনিকসভা পশ্চিম বর্ধমান জেলার রানিগঞ্জে দুদিনের শিল্প বানিজ্যের উন্নয়ন সংক্রান্ত জাতীয় স্তরের একটি সেমিনার করতে চলেছে। আগামী ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর রানিগঞ্জের স্পোর্টস কমপ্লেক্সে এই সেমিনার হবে।


বৃহস্পতিবার দুপুরে আসানসোলের জিটি রোডের পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন মোড় সংলগ্ন একটি হোটেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই সেমিনার আয়োজনের কথা বলেন ফসবেকির সভাপতি আরপি খৈতান।
বনিকসভার সাধারণ সম্পাদক শচীন্দ্র নাথ রায় বলেন, পানাগড়ের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী যা ঘোষণা করেছেন, তাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। বিশেষ করে তার নেতৃত্বে রাজ্যের শিল্পের প্রসারে যে কমিটি হয়েছে, তাতে আমরা খুশি। আমরা এতদিন তো এটাই চাইছিলাম। আমাদের আশা এবার শিল্প করতে যেসব সমস্যা রয়েছে, তার সমাধান দ্রুত হয়ে যাবে। এই প্রসঙ্গে আমাদের একটা দাবি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে করবো, যে ঐ কমিটিতে বনিকসভার প্রতিনিধিকে রাখা হোক। তাহলে, আমাদের কথা ও সমস্যা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সহজে পৌঁছাবে। তিনি আরো বলেন, অন্ডাল বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের হিসাবে গড়ে তোলা ও ভাঙ্গা চাল বা চালের খুদ থেকে ইথানল করার পরিকল্পনা দারুন ব্যাপার। অন্ডাল বিমানবন্দর বিশ্ব মানের হলে, জেলার সর্বস্তরের উন্নয়ন হবে। অনেক মানুষ সহজে উড়ানে যাতায়াত করতে পারবেন। আর রাজ্য সরকারের ইথানল তৈরীর ভাবনা এই বর্ধমান জেলার কাছে খুবই প্রয়োজনীয়। অনেক শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী চালের ব্যবসা করেন। তারা লাভবান হবে।


তিনি বলেন, অতিমারির কারণে গত দুবছরে বেশ কিছু শিল্পের অবস্থা খুব খারাপ। বিশেষ করে ট্যুরিজিম ও হোটেল শিল্প। আমাদের মনে হচ্ছে, রাজ্য সরকারের এই দুটি শিল্পকে নিয়ে রাজ্য সরকারের কিছু ভাবা উচিত। যাতে তারা দু’বছরের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারে।
শচীনবাবু বলেন, তবে আমরা কেন্দ্র সরকারের শিল্প প্রসারের ভাবনা ও পরিকল্পনা নিয়ে খুশি নই। সরকার বলেছিলো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ৬ লক্ষ কোটি টাকা দেবে। কিন্তু তার কিছুই হয়নি। কেন্দ্র সরকারের কি পরিকল্পনা তা আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না।
অন্যদিকে, ফসবেকির সভাপতি বলেন, দুদিনের জাতীয় স্তরের সেমিনারে আমরা ইন্টার স্টেট বা আন্তঃরাজ্য শিল্প ও বাণিজ্য প্রসারের উপরে জোর দেবো। একটা রাজ্যের সঙ্গে অন্য রাজ্যের কি ভাবে আদান প্রদান বাড়ানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। সবকিছু ঠিক হলে, একটা রাজ্যের সঙ্গে অন্য রাজ্যের শিল্প সংযোগ বাড়বে।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন বিনোদ গুপ্তা, পবন গুটগুটিয়া ও স্বপন চৌধুরী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *