Barakar Murder Case : চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পরিবারের, মাদক খাওনোর নাম করে ডেকে নিয়ে যায় পরিচিত বন্ধুরা, ধৃত দুই
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১১ সেপ্টেম্বরঃ নতুন ধরণের একটা ড্রাগ বা মাদক এসেছে। এই কথা বলে তা খাওয়ানোর নাম করে ডেকে নিয়ে যায় মোবাইল মিস্ত্রী ২৭ বছরের শাহবাজ আলমকে তার পরিচিত বন্ধুরা। তার পরে তাকে গুলি করে খুন করা হয় । শনিবার এমনি চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলো আসানসোলের কুলটি থানার বরাকরে শুক্রবার ভর সন্ধ্যায় গুলিতে খুন হওয়া শাহাবাজ আলমের পরিবারের সদস্যদের। শাহাবাজের স্ত্রী সোহরাত খান ও শ্বশুর খুরশিদ আলম অভিযোগ করে বলেন , শাহাবাজকে পেট্রোল পাম্প কাছে একটি নির্মীয়মান বাড়ির ফাঁকা ঘরে ডেকে নিয়ে গেছিল তার বন্ধুরাই।
এই ঘটনায় পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃত শাহবাজ আলমের বাবা কুলটি থানার বরাকর ফাঁড়ির হাজি নবিনগরের বাসিন্দা সাব্বির আলম।তিনি নির্দিষ্ট ভাবে নাম সহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। ছেলেকে খুন করার ঘটনায় মূলতঃ তার অভিযোগ রাকেশ শর্মা, বান্টি মজুমদার সহ মাদক কারবারী মুকেশ শর্মার বিরুদ্ধে।
মৃত শাহবাজের বাবার করা অভিযোগের ভিত্তিতে করা এফআইআরে লেখা হয়েছে নিমাকানালির বাসিন্দা বান্টি মজুমদার ও জনকপুরার বাসিন্দা রাকেশ শর্মা তার ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় ও পরে মুকেশ শর্মার নির্দেশে বান্টি গুলি চালায়।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাকেশ শর্মা ও বান্টি মজুমদারকে বরাকর ফাঁড়ির পুলিশ গ্রেফতার করে। রবিবার তাদের আসানসোল আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবে পুলিশ।
যে জায়গায় যুবককে খুন করা হয়েছিল সেই ঘরের মধ্যে চাপচাপ রক্তের দাগ, একাধিক পুরনো মদের বোতল, মাদকের কাগজ, দেশলাইয়ের খোল সবই পড়েছিল। শুক্রবার রাত থেকেই কমব্যাট ফোর্স ও পুলিশ ঐ ঘরে ঢোকার মুখে গলিতে পাহাড়া বসেছে। পুলিশ আধিকারিক ছাড়া কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
শনিবার সকালে দফায় দফায় আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি ( সদর) এসিপি (পশ্চিম) ও গোয়েন্দা দপ্তরের একাধিক আধিকারিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঐ খুনের পরে শুক্রবার রাতেই পুলিশের একটি দল পলাতক মুকেশ সহ অন্যান্যদের খোঁজে ঝাড়খন্ডে গেলেও তাদের খোঁজ মেলেনি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে । অপরদিকে পুলিশ এই ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে জানানো হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এদিন সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে শাহাবাজের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। জানা গেছে, খুব কাছ বা পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে দূষ্কৃতিরা কপালে একটা গুলি করে। সেই গুলি মাথার পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়।
শাহবাজ খুন হওয়ায় পরে তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, দিনের পর দিন বরাকরে মুকেশ শর্মা,বান্টি মজুমদারের নেতৃত্বে বেড়ে চলেছে বেআইনি মাদক কারবার।পরিবারের দাবি যে এই ধরনের বেআইনি মাদক মাফিয়াদের পুলিশ কড়া হাতে দমন করে বরাকর অঞ্চলকে মাদক মুক্ত করুক।পাশাপাশি অবিলম্বে খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করুক। তারা এও বলেন, শাহবাজের এক বন্ধু রাজা নামে এক যুবক এই খুনের সাক্ষীও রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে রাজা বলে, আমরা সবাই মিলে ঐ জায়গায় আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ সামনের অন্ধকারের মধ্যে থেকে গুলির শব্দ শুনতে পাই। দৌড়ে গিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় শাহবাজ মাটিতে পড়ে রয়েছে। বান্টি নামে একজনের তখনও বন্দুক হাতে ছিল। এর পরেই ওই জায়গা থেকে শাহবাজকে ছেড়ে তারা পালিয়ে যায়।
কুলটির বিজেপি বিধায়ক বরাকরের বাসিন্দা চিকিৎসক অজয় পোদ্দার বলেন, বরাকরে গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের মাদকের রমরমা চলছে। পুলিশ ও প্রশাসন সব জেনেও নীরব। আমি পুরো বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব ও মুখ্য সচিবকে জানিয়ে চিঠি লিখবো।
অন্যদিকে, পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করুক পুলিশ । আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিক মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে।
Asansol Muthoot Fincorp শাখায় দুঃসাহসিক ডাকাতি, ফিল্মি কায়দায় লুট ১২ কেজি সোনা ও নগদ ১০ লক্ষ টাকা