ASANSOL

Asansol Muthoot Fincorp শাখায় দুঃসাহসিক ডাকাতি, ফিল্মি কায়দায় লুট ১২ কেজি সোনা ও নগদ ১০ লক্ষ টাকা

জিটি রোডে ভর দুপুরে বেসরকারি গোল্ড লোন শাখায় ডাকাতি, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তদন্ত শুরু পুলিশের

রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১১ সেপ্টেম্বরঃ ভর দুপুরে বেসরকারি গোল্ড লোনকারী সংস্থার ( Asansol Muthoot Fincorp) শাখায় দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটলো। চারজনের সশস্ত্র ডাকাত শাখায় অতর্কিতে ঢুকে শাখার আধিকারিক সহ কর্মীদের গান পয়েন্ট ( Gun point) নিয়ে ১২ কেজি সোনার গয়না ও নগদ ১০ লক্ষ টাকা লুঠ করে চম্পট দেয়। ডাকাতদের ভেতরে ঢোকা থেকে, নিরাপত্তা রক্ষীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া সব কিছুই শাখার সিসি ক্যামেরায় চলে আসে। আসানসোল দক্ষিণ থানার অদূরে জিটি রোডের পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন মোড়ের কাছে ভাঙ্গা পাঁচিলের ওল্ড স্টেশন স্কুলের বিপরীতে মুথুট ফিন্যান্স কোম্পানিতে শনিবার দুপুরে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। দিনের বেলা একেবারে ফিল্মি কায়দায় এই ডাকাতির ঘটনা গোটা এলাকা সহ আসানসোল শহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ আসে।

Asansol Muthoot Fincorp
photo by kajal Mitra

পরে আসেন আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (সেন্ট্রাল) ডাঃ কুলদীপ এস এস এসিপি (সেন্ট্রাল) মানবেন্দ্র দাস সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা।
জানা গেছে, Asansol Muthoot Fincorp চার ডাকাতের মুখে মাস্ক পড়া ছিলো। সবাই হিন্দিতে কথা বলেছিলো। ডাকাতির পরে ডাকাতরা কিভাবে এলাকা ছাড়ে তা পুলিশ জানার চেষ্টা করছে। তবে পুলিশের অনুমান, ডাকাতরা মোটরসাইকেলে করে সম্ভবত এলাকা ছাড়ে। ডাকাতির কথা জানতে পারার পরেই আসানসোল শহরের আশপাশের সব থানাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। দুপুর আড়াইটের পরে আসানসোলের সীমানা সিল করে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। পাশাপাশি পুলিশ শাখায় থাকা সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তদন্ত শুরু করেছে। সেই ফুটেজে দেখা যায় যে, ডাকাতরা দুপুর দুটো বাজার এক মিনিট আগে শাখায় ঢুকছে। ২০ মিনিটের মতো ডাকাতরা শাখার ভেতরে ছিলো।

Asansol Muthoot Fincorp


শাখার নিরাপত্তা রক্ষী অনিল কুমার পান্ডে বলেন, দুপুর দুটো নাগাদ সোনার গয়না রেখে লোন নেওয়ার নাম করে এক যুবক ভেতরে ঢোকে । তারপর আমি গেটে তালা লাগিয়ে বন্ধ করতে যাচ্ছিলাম। ঠিক সেই সময় আরো তিনজন বন্দুক নিয়ে আমাকে ভেতরে ধাক্কা মেরে ঠেলে ফেলে দেয়। তখন শাখার ভেতরে চারজন কর্মী ও একজন গ্রাহক ছিলেন। এরপর ডাকাতরা বন্দুক দেখিয়ে সবাইকে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে একটি ঘরে আটকে রাখে। সবার মুখে সেলোটেপ আটকে দেওয়া হয়। এরপর ডাকাতরা ম্যানেজার সহ অন্যদের মারধর করার পর, লকারের চাবি নিয়ে ব্যাগে সোনা ও নগদ টাকা ভরে পালিয়ে যায়।


ম্যানেজার সৈকত দাস জানিয়েছেন, ডাকাতরা ১২ কেজির মতো সোনা এবং নগদ ১০ লক্ষ টাকা লুট করেছে। লুট হওয়া সোনার বর্তমান বাজারদর সাড়ে ৫ কোটি টাকার মতো। শাখার মহিলা আধিকারিক সোনালী গুপ্ত বলেন, আমি সোনার গয়না ওজন করে কতটা পরিমাণ তা দেখছিলাম। তখন তিন যুবক আমাকে গান পয়েন্টে নিয়ে নেয়। একটা ঘরে সবাইকে আটকে রাখে। আমাকে হুমকি দিয়ে হিন্দিতে বলে, আমাদের সঙ্গে সহযোগীতা করুন। আপনাদের সবকিছু আমরা সব জানি। কোথায় থাকেন, কাল বিকেলে কোথায় গেছিলেন ও কি করেছেন সবকিছু। নাহলে, সবাইকে মেরে দিয়ে চলে যাবো। আমাদের কিছু হবেনা। এরপর ওরা টাকা ও গয়না লুঠ করে চলে যায়। প্রায় ২০ মিনিট তারা ছিলো।

এরপর আমরা ওরা চলে গেলে, কোন মতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানায় খবর পাঠাই।
জানা গেছে, এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দুপুর আড়াইটে নাগাদ।
আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (সেন্ট্রাল) বলেন, পুলিশ তদন্ত করছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ডাকাতদের সনাক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। সীমানা সিল করে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।

আসানসোলের নামী বেসরকারি আবাসনের আবাসিকরা বিক্ষোভ দেখালেন

Leave a Reply