Asansol সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে স্বাগত জানালো জেলা তৃনমুল কংগ্রেস নেতৃত্ব, পদ্ম শিবিরের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৮ সেপ্টেম্বরঃ আসানসোলের সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের ( Babul Supriyo ) শাসক দলে আসাকে স্বাগত জানালো পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃনমুল কংগ্রেসের নেতৃত্ব। বলা ভালো বাবুল বিজেপি ছাড়ায় রীতিমতো উচ্ছ্বসিত পশ্চিম বর্ধমান জেলার শাসক দলের শিবির। রাজ্যের আইন ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী মলয় ঘটক, জেলা তৃনমুল কংগ্রেসের সভাপতি বিধান উপাধ্যায় থেকে আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও তৃনমুল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক তথা আসানসোল পুরনিগম এলাকার দলের কনভেনার ভি শিবদাসন তরফে দাসু এদিন পরিষ্কার বলেন, এটা হবারই ছিলো।

মন্ত্রী মলয় ঘটক বাবুল সুপ্রিয়ের দল বদলের পরে টুইট করে বলেন, দলের পরিবারে ওয়েলকাম। এবার আমরা একসঙ্গে আসানসোল ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় উন্নয়ন করবো। ধন্যবাদ দলের সুপ্রিমোর হাত শক্তিশালী করার জন্য।
বিধান উপাধ্যায় আরো বলেন, বিজেপি যে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে তা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। বিশেষ করে বাংলার মানুষেরা। যারা সত্যিকারের উন্নয়ন চান, তারা সবাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আসবেন। কারণ উন্নয়ন মানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃনমুল কংগ্রেস। আমরা খুশি।
আসানসোলের পুর প্রশাসক বলেন, এতে আসানসোলের অনেক ভালো হবে। সবাই কাজ একসঙ্গে করবো। বাবুল ভালো লোক। সবচেয়ে বড় কথা হলো তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা রাখতে পেরেছেন। তার জন্য তাকে ধন্যবাদ।
বাবুল সুপ্রিয় একা নন, অনেকেই আস্তে আস্তে বিজেপি ছেড়ে তৃনমুল কংগ্রেসে আসবে। এমনই কথা বললেন তৃনমুল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন তরফে দাসু। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃনমুল কংগ্রেস আরো শক্তিশালী হতে চলেছে।
প্রকাশ্যে বাবুল সুপ্রিয় ( Babul Supriyo ) দল ছাড়ায় তেমন কিছু হবেনা বললেও, আসানসোল তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিজেপি সর্বস্তরের নেতা ও কর্মীর হতবাক। দল বদলের পরে বাবুল সুপ্রিয় আসানসোলের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা বলায়, পদ্ম শিবিরের দুশ্চিন্তা কিছুটা হলেও বেড়েছে। সেই দিক থেকে ঘাসফুল শিবির স্বস্তিতে।
বিজেপির আসানসোল জেলার কনভেনার শিবরাম বর্মন এদিন দাবি করেন বাবুল সুপ্রিয় দল ছেড়ে যাওয়ায় সংগঠনে কোনো প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, বিজেপি ব্যক্তি কেন্দ্রীক দল নয়। দল চলে সংগঠনের জোরে। আসানসোলে একটা সময় দলে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব ছিলো। এখন তা অনেকটা কাটানো সম্ভব হয়েছে। তারজন্য বিধান সভা নির্বাচনে আসানসোল জেলায় আমরা ভালো ফল করেছি। আসানসোল পুরনিগমের ১০৬ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬৬ টিতে এগিয়ে রয়েছে দল। দলের জেলা সভাপতি তথা দূর্গাপুরের বিজেপ বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই বলেন, সাংসদ আসানসোলের মানুষের ভোটে জিতেছিলেন। তার এই সিদ্ধান্ত ভুল না ঠিক তা মানুষ বিচার করবে।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয় ( Babul Supriyo ) যখন প্রথম বার বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন, তখন যার তাী সঙ্গে সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক সংঘাত হয়েছিলো, তিনি হলেন জিতেন্দ্র তেওয়ারি। বিধান সভা নির্বাচনে ঠিক আগে তৃনমুল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি। এদিন বাবুলের দল বদলে সেই জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, এটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এতে আমার কিছু বলার নেই। তিনি যা ভালো মনে করেছেন, তাই করেছেন। বাবুল সুপ্রিয়ের সঙ্গে নিজের দ্বন্দ্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, সেটা রাজনীতির ক্ষেত্রে হয়েছে। আমার সঙ্গে তার সম্পর্ক সবসময় ভালো ছিলো।
প্রসঙ্গতঃ জিতেন্দ্র তেওয়ারি এখন আসানসোলের রাজনীতি থেকে শত যোজন দূরে কলকাতায় রয়েছেন। হাইকোর্টের বার এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হয়ে পুরনো পেশা উকালতি করছেন।
তবে, দুই দলের নেতারা যাই বলুন না কেন আসানসোল তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলার মানুষেরা তাকিয়ে আছেন, দলবদলের পরের এপিসোডের দিকে।
আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে যোগ দিলেন
উত্ত্যক্ত করায় অপমানে আত্মঘাতী নবম শ্রেণীর ছাত্রী, অভিযুক্ত আটক