রেলে ভুয়ো চাকরি চক্রের দুই পান্ডা পুলিশের হাতে
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য , আসানসোল: রেলে ভুয়ো চাকরি চক্রের ( fake job Racket ) বিহারের বাসিন্দা দুই পান্ডা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হল। বাংলার সীমানার চিত্তরঞ্জন ও ঝাড়খণ্ডের মিহিজাম থানার পুলিশের সহযোগিতায় মিহিজামের কৃষ্ণা লজ থেকে এই চক্রের দুই মাথা পাটনার বাসিন্দা সন্তোষ কুমার ওরফে তেয়ারী এবং দেওঘরের করোর বাসিন্দা অনুপ কুমার ওরফে অমিত গুপ্তকে বৃহস্পতিবার রাতে চিত্তরঞ্জন থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার তাদের দু’জনকেই আসানসোল জেলা আদালতে ( Asansol Court ) পাঠিয়ে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে চাওয়া আদালত ৭ দিনের জন্যে মঞ্জুর করেছে।
আসানসোলের আরপিএফ এর সিনিয়র সিকিউরিটি কমিশনার চন্দ্রমোহন মিশ্র বলেন আসানসোলে নিয়ে এসে হায়দ্রাবাদের দুই যুবককে ভুয়ো টিকিট কালেক্টরের পদে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। তাদেরই সঙ্গে থাকা অন্য আরেকজন নিয়োগপত্র না পেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিল। চিত্তরঞ্জন থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ অতীন্দ্রনাথ দত্ত জানান বিজয়ওয়াড়া কে এন এন প্রমোদ কুমার নামে এক যুবক তিনি অভিযোগ করেছেন তার কাছ থেকে ওই সন্তোষ কুমার এবং অনুপ কুমার চার লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন রেলওয়ে টিকিট চেকারের চাকরি করে দেবেন বলে। তারা আরও ছয় লক্ষ্য টাকা দাবি করেছিল । যা তিনি দিতে পারেননি। তাই তাকে চাকরিতে ঢোকায় নি প্রতারকেরা।
এই রাগে ঐ ব্যক্তি প্রমোদ কুমার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়। এরপরই পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে প্রতারিত দুই যুবক হায়দরাবাদের প্রমোদ এবং কৃষ্ণা। এরা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দফায় দফায় প্রতারকদের টাকা দিতে শুরু করে। এজন্য তাদের নামে নতুন একাউন্ট খুলে দেয়। তাদের এটিএম কার্ড নিজেদের কাছেই রাখে প্রতারকেরা। ঐ এটিএম কার্ড দিয়েই টাকা তুলে নিত তারা। ফলে নগদে বা নিজেদের একাউন্টে তারা টাকা নেয় নি, যাতে প্রমাণ না থাকে। পুলিশ এটিএম থেকে টাকা তোলার যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছে।
পুলিশ জানতে পেরেছে ঐ তিন ব্যক্তি সেখানকার এক রেল কর্মির মাধ্যমে রেলে চাকরির জন্য এই যোগাযোগ করেছিলেন।ওই দুজনকে আসানসোলে টিকিট চেকারের চাকরি করে দেওয়া হয় ২ সেপ্টেম্বর নিয়োগ পত্রের মাধ্যমে। রেল কর্তৃপক্ষ নিয়োগপত্র গুলি ভুও বলে জানান ।শুধু তাই নয় যে দুজনের কাছ থেকে ওই দশ লাখ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল তাদের বলা হয়েছিল মিহিজামের ওই লজেই থাকতে এবং রেলের পক্ষ থেকে তাদের কাছে নিয়মিত এখানে এসে হাজির নিয়ে যাবে একজন। তা ছাড়াও তাদের চাহিদা মতো কিছুদিন পরেই তাদের দিল্লিতে ট্রান্সফার করে দেয়া হবে ।তাই ফিল্ডে গিয়ে তাদের চাকরি করার দরকার নেই।
এরপরই তদন্তে নেমে চিত্তরঞ্জন থানা এবং আসানসোলের গোয়েন্দা দপ্তর জানতে পারে বিহারের সন্তোষ কুমার এবং অনুপ কুমার দুজন শুধু নয় একটি বড় চক্র এই এই প্রতারণার সাথে যুক্ত। এরপর তারা খোঁজ করে মিহিজামের ওই লজ থেকেই অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে এই প্রতারণা চক্রের পর্দা পুরোটাই ফাঁস করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।