আসানসোল প্রেস ক্লাবের তরফে পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন পালন, প্রভাতফেরী রানীগঞ্জে, শিশুদের বর্ন পরিচয় প্রদান ঊষাগ্রাম এলাকায়
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, ২৬ সেপ্টেম্বরঃ বাংলা সাহিত্যের প্রবক্তা, সমাজ সংস্কারক, বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টা পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০২তম জন্মবার্ষিকী রবিবার পালন করলো আসানসোল প্রেস ক্লাব। এই উপলক্ষে বিএনআর ব্রিজ সংলগ্ন আসানসোল মিউনিসিপ্যাল মার্কেটে এদিন বিকালে এক অনুষ্ঠানে বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতি ও জন্মভিটের মাটি ভর্তি কলসে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে তাঁকে সম্মান জানানো হয়। বিদ্যাসাগরের দুটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য নারীশিক্ষা এবং বিধবা বিবাহ প্রচলনে তাঁর অবদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন সাহিত্যিক বিকাশ গায়েন। বর্তমান সমাজে নারীদের অবস্থান এবং ভূমিকার জন্য সম্পূর্ন অবদান বিদ্যাসাগরের, একথা বলেন প্রবীনা ব্যক্তিত্ব প্রণতি বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিদ্যাসাগরের সাহিত্যভাবনা এখনো অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক তবু্ও তা পাঠ্য হয়না,এমনকি দোকানেও তাঁর বই পাওয়া যায়না।কারণ বাজারে এসব বইয়ের কাটতি নেই – বলেন আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি আগামী বছর বিদ্যাসাগরের জীবনের শেষ পর্বের কর্মস্থল কার্মাটারের সাত জন পড়ুয়াকে এই দিনে সাহায্য করার আশ্বাস দেন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সূবর্ণা রায়, অনিরুদ্ধ দাশগুপ্ত, শিবানী মালখন্ডী,ভারতী বন্দোপাধ্যায় , দেবযানী সিনহা, গৌর শর্মা, সম্পাদক রাজা বন্দোপাধ্যায় ,ভোলানাথ রায়, শ্রাবণী বন্দোপাধ্যায়, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত প্রমুখ।
এদিকে আজ আসানসোল প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে শিল্পাঞ্চলের বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী প্রয়াত সত্যেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অঙ্গারভূমির চিত্রকর নামে একটি তথ্যচিত্রের সিডির উদ্বোধন করেন পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। গৌর শর্মার সম্পাদনায় তৈরী ঐ সিডিটি আসানসোল প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে পরে তার বাসভবনে প্রয়াত শ্রী গাঙ্গুলীর স্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বিদ্যাসাগরের ২০২ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শিশুদের বর্ন পরিচয় প্রদান
কাজল মিত্র :- বাংলা বর্ণমালা বর্ণপরিচয় রচয়িতা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০২ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার আসানসোলের ঊষাগ্রাম এলাকায় আসানসোল পৌর কর্পোরেশনের প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান এর হাত দিয়ে শিশুদের মধ্যে বর্ণপরিচয়ের একটি করে বই বিতরণ করা হয়।এই উপলক্ষে আসানসোল পৌর কর্পোরেশনের প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন যে আজ একবিংশ শতাব্দীতে আমরা নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারী শিক্ষার কথা বলছি। কিন্তু ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর শুধুমাত্র ১৯ শতকে নারীদের শিক্ষা প্রদানের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছিলেন। ১৮৫০ সালে বিদ্যাসাগর বর্ণপরিচয় গ্রন্থ রচনা করেন।]
আজ,১৭০ বছর পরেও বাংলা ভাষায় শিক্ষিত হওয়ার প্রথম সিঁড়ি এই বর্ণপরিচয়।এমন কেউ নেই যে এই বর্ন পরিচয় ছাড়াই উচ্চ শিক্ষিত হয়েছে।তিনি বলেন আজ এই বিশেষ দিনটি ,বিদ্যাসাগরের জন্মদিনের পাশাপাশি আজকে মেদিনীপুরের আরেক মায়ের সন্তান মাতঙ্গিনী হাজরার মৃত্যুবার্ষিকী ।মেদিনীপুরের এই দুই সন্তান দেশকে অনেক কিছু দিয়েছে এবং আজ এটি শুধু বাংলার নয়,গোটা দেশের গর্ব।অমরনাথ চ্যাটার্জি বলেন, বিদ্যাসাগর যেভাবে মহিলাদের শিক্ষার পাশাপাশি বিধবা বিবাহের মতো কর্মসূচির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের ওপর জোর দিতেন, একইভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মহিলাদের জন্য অনেক পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন যাতে নারীরা স্বাবলম্বী হয়।এ সময় প্রাক্তন কাউন্সিলর সুকুল হেমব্রম, তৃণমূল নেতা সিতু রুদ্র এবং অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রাণীগঞ্জ, চরণ মুখার্জি : পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের 202 তম জন্ম দিবস. আর সেই জন্ম দিবসকে শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করার লক্ষ্যে, রানীগঞ্জের বিভিন্ন সংস্থার সাথেই রানীগঞ্জের শিক্ষামূলক সাক্ষরতা সম্পর্কিত সামাজিক সংগঠন বঙ্গীয় সাক্ষরতা প্রচার সমিতির রানীগঞ্জ আঞ্চলিক কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটিকে পালন করলেন শ্রদ্ধার সাথে। এদিন সকালে প্রভাতফেরির মাধ্যমে পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতি কে সঙ্গে নিয়ে অসংখ্য মহিলা পুরুষ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম দিবসের দিনটি সকলকে স্মরণীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে।
এদিন রানীগঞ্জের তারবাংলা থেকে এই প্রভাতফেরী কর্মসূচি শুরু হয়ে রানীগঞ্জ বাজার পরিক্রমা করে তা স্টুডেন্ট হেলথ হোমে গিয়ে শেষ হয়। যেখানে এদিন হেলথ হোমের আলোচনা কক্ষে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয় দিনটি। বহু ছাত্র-ছাত্রী এদিন নাচ গান আবৃত্তি ও পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সামাজিক অবদান প্রসঙ্গে বিভিন্ন কথা তুলে ধরে তাদের বক্তব্য। এদিনের এই অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে উপস্থিত হন সংস্থার জেলা সম্পাদক সুজাতা পাল, মুখ্য আলোচক তথা বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক বাসুদেব মন্ডল চট্টোপাধ্যায়, সংস্থার রানীগঞ্জ আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক হীরক গাঙ্গুলী সভাপতি সুনীল খান্ডেলওয়াল দেবব্রত দাস গুপ্ত প্রমূখ।