লালার চার সহযোগীর জামিন নাকচ, জেল হাজতের নির্দেশ বিচারকের
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ৮ অক্টোবরঃ কয়লা চোরাচালান বা পাচার কাণ্ডে অনুপ মাজি ওরফে লালার চার সহযোগী জয়দেব মণ্ডল, নীরদবরন মণ্ডল, গুরুপদ মাজি ও নারায়ণ নন্দার জামিন শুক্রবার আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে নাকচ হয়ে গেলো। প্রথম দফায় সাতদিন ও দ্বিতীয় দফায় চার দিন অর্থাৎ মোট ১১ দিনের সিবিআই রিমান্ডের মেয়াদ শেষে শুক্রবার আসানসোল আদালতে চারজনকে হাজির করা হয়। যেখানে সিবিআই বিশেষ আদালত চারজনের জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়। এদিন সিবিআই আদালতের বিচারক জয়শ্রী বন্দোপাধ্যায় ছিলেন না। তার পরিবর্তে দায়িত্বে ছিলেন শরণ্যা সেন প্রসাদ। দুই পক্ষের আইনজীবীদের দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের শেষে বিচারক চারজনের জামিন নাকচ করে দিয়ে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুজোর ছুটির পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। ৮ নভেম্বর সেই শুনানির দিনে আবার ৪ জনকে আদালতে পেশ করা হবে। অর্থাৎ এই চারজনকে দুর্গাপূজা ও দীপাবলি জেলেই কাটাতে হবে।
এদিন প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় জয়দেব মন্ডলদের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে তাদের জামিনের আবেদন করেন বিচারকের কাছে। তিনি বলেন, চারজনই অসুস্থ। তার মেডিকেল রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিবিআই এই মামলায় প্রথম যে এফআইআর করেছে। তাতে এই চারজনের নাম নেই। সেই এফআইআরে যাদের নাম আছে, তাদের একজনকেও সিবিআই গ্রেফতার করতে পারেনি। অথচ, এদেরকে শুধু মাত্র অনুপ মাজি বা লালার সহযোগী হিসেবে ধরে নিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। যে সময়ে কয়লা পাচারের কথা সিবিআই বলেছে, সেই সময়ে ১৪ মাস গুরুপদ মাজি নারকোটিক্সের একটু মামলায় জেলে ছিলো। তাহলে কি সেই এই মামলায় যড়যন্ত্র করেছে? এই চারজনকে সিবিআই যখন ডেকেছে, তখনই তারা হাজির হয়েছে। মিলনবাবুর পাশাপাশি আরো দুই আইনজীবী শেখর কুন্ডু ও সোমনাথ চট্টরাজ চারজনের হয়ে সওয়াল করে যেকোন শর্তে তাদেরকে জামিন দেওয়ার আবেদন করেন।
এরপর সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার পাল্টা জবাবে বিচারকের কাছে চারজনের জামিনের বিরোধিতা করেন৷ তিনি অবশ্য এদিন চারজনকে নতুন করে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আবেদন করেননি। তিনি বলেন, এরা যথেষ্ট প্রভাবশালী। এরা জামিন পেলে মামলায় তদন্তের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। সাক্ষীদের হুমকি ও ভয় দেখানো হতে পারে। কেননা এই কয়লা কান্ডে ১৩৭৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। ইসিএলের এলাকা থেকে ৩৯ মিলিয়ন টন কয়লা তুলে পাচার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য করা যেতে পারে সিবিআইের তরফে (মামলা নং ২২/২০) ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ১২০/বি , ৪০৯ এবং প্রিভেনশন অফ করাপশন অ্যাক্ট, ১৯৮৮ এর ধারা ১৩ (১)(এ) এবং ১৩ (২) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
এদিন দুপুরে রাজ্য পুলিশ, কমব্যাট ফোর্স এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে চারজনকে হাজির করা হয়।
প্রসঙ্গতঃ, সিবিআই ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর অনুপ মাঝি এবং দুই জিএম এবং ইসিএলের তিন নিরাপত্তা আধিকারিকের বিরুদ্ধে অবৈধ খনন, চুরি এবং কয়লার চোরাচালানের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। সিবিআই পরে এই মামলায় সারাদেশে প্রায় ৩০ টি জায়গায় তল্লাশি চালায়। ইতিমধ্যেই, লালার ১৭৫.৫৬ কোটি টাকার সম্পত্তি অ্যাটাচমেন্ট করেছে সিবিআই। গ্রেফতার চারজনকে কলকাতার নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার অফিসাররা বেশ কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসের শেষে তাদেরকে আবার জেরার জন্য সিবিআই ডেকে পাঠায়। তখন তারা সঠিক উত্তর দেননি। বরং বিভিন্ন ধরনের তথ্য গোপন করছেন। তখনই সিবিআই এদেরকে গ্রেফতার করে।
সিবিআই ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছে যে জয়দেব সহ এই চারজন সারা দেশে অনুপ মাজি বা লালার সঙ্গী হিসাবে কাজ করতো। কয়লা কারবারের অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী ছিলো লালা বলে সিবিআইয়ের দাবি। যদিও সুপ্রিম কোর্ট রক্ষা কবচ দেওয়ায় সিবিআই তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
কয়লা চোরাচালানকাণ্ডে সিবিআই এর আগে কয়লা চোরাচালান মামলায় লালা ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জয়দেব মণ্ডলের বাড়ি, নারায়ণ নন্দা, নীরদ বরন মণ্ডল, গুরুপদ মাঝির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ছিলো। সেই অভিযানে তাদের কাছ থেকে কিছু তথ্যও সংগ্রহ করেছিলো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
जयदेव समेत 4 की गिरफ्तारी से कईयों की उड़ी नींद, कल आसनसोल CBI विशेष कोर्ट में होगी पेशी
Breaking : CBI ने नारायण, जयदेव , नीरद और गुरुपद को दबोचा, coal smuggling में पहली गिरफ्तारी