পূর্ব রেলে প্রথম, আসানসোল ডিভিশনে আরপিএফের ” মাতঙ্গিনি বাহিনী
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২৬ অক্টোবরঃ ট্রেনে মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়কে প্রাধান্য দিতে এবার উদ্যোগী হলো পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের আরপিএফ বা রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স। তৈরী করা হলো ” মাতঙ্গিনি স্কোয়াড বা বাহিনী “। সোমবার এই বাহিনীর কাজ কি হবে ও বাহিনীর সদস্যদের কি করতে হবে, তার জন্য একটি সরকারি নির্দেশিকা জারি করেছেন আসানসোল ডিভিশনের চীফ সিকিউরিটি কমিশনার চন্দ্রমোহন মিশ্র। মঙ্গলবার থেকেই এই বাহিনী কাজ শুরু করে দিয়েছে।
জানা গেছে, এই মাতঙ্গিনি বাহিনীতে মোট ৯ জন আরপিএফের মহিলা জওয়ান রয়েছে। এই বাহিনীর ইনচার্জ হয়েছেন সাব ইন্সপেক্টর বা এসআই শুভ্রা দে। বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসাবে রয়েছেন আরো এক এস আই শিবানী মজুমদার। বাকি ৭ জন কনস্টেবল।
আরপিএফের তরফে দাবি করা হয়েছে, এই বাহিনী পূর্ব রেলে এই প্রথম তৈরী করা হলো আসানসোল ডিভিশনে। এর আগে, একবারে আলাদাভাবে মহিলা যাত্রীদের কথা ভেবে এমন কোন বাহিনী বা স্কোয়াড গঠন করা হয় নি।
আরপিএফ সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছু দিন ধরে খবর পাওয়া যাচ্ছিলো বা অভিযোগ আসছিলো যে, ট্রেনে মহিলাদের উত্যক্ত করা হচ্ছে। এমনকি তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। এইসব ঘটনা ট্রেনের মহিলা কামরার পাশাপাশি অন্য কামরাতেও ঘটছে। এরফলে ট্রেনে ভ্রমণ করতে মহিলারা ভয় পাচ্ছেন। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। স্বাভাবিকভাবেই আরপিএফের চীফ সিকিউরিটি কমিশনার চিন্তায় পড়েন। তিনি উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। এরপরই মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য আলাদা করে একটি বাহিনী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আরো জানা গেছে, এই বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে গোপন বা হিডিন ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। সবকিছু সেই ক্যামেরায় রেকর্ডিং হয়ে যাবে। এছাড়াও রেলেও যে হেল্প লাইন ফোন নম্বর ( ১৩৯) আছে তার সঙ্গে এই বাহিনীর সংযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ” মদত” নামে যে বিশেষ এ্যাপস্ রয়েছে, তাতেও এই বাহিনীকে সংযুক্ত করা হয়েছে। আসানসোল ডিভিশনের মধ্যে থাকা কোন ট্রেনে বা স্টেশনে কোন মহিলা যাত্রী কোন সমস্যায় পড়েন তাহলে অভিযোগ করলেই হয়ে যাবে। এই বাহিনী আলাদা আলাদা দলে ভাগ হয়ে ট্রেনে ট্রেনে নজরদারি করবে। আসানসোল থেকে মধুপুর, আসানসোল থেকে যশিডি, আসানসোল থেকে পানাগড় বা আসানসোল থেকে গ্র্যান্ড কর্ড লাইনে প্রধানকন্তা পর্যন্ত সব জায়গায় বাহিনী ঘুরবে।
আরপিএফ সূত্রে জানা গেছে, এই বাহিনী প্রতিদিন কি কাজ করছে, তার একটি রিপোর্ট দিনের শেষে বাহিনীর ইনচার্জ চীফ সিকিউরিটি কমিশনারকে দেবেন। সেই রিপোর্ট পূর্ব রেলের সদর দপ্তরেও যাবে। এই প্রসঙ্গে এদিন চীফ সিকিউরিটি কমিশনার চন্দ্রমোহন মিশ্র বলেন, বাহিনীর একমাত্র লক্ষ্য ও কাজ হবে মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়া। তাদের কোন সমস্যা হলে, তার সমাধান করা। কোন কোথাও অভিযোগ পাওয়া গেলে দ্রুত তার নিষ্পত্তি করা। বাহিনীর কি কাজ তাদেরকে ভালো করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আরপিএফ কোন ভাবেই মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে কোন সমঝোতা করবে না।