ASANSOLRANIGANJ-JAMURIA

আসানসোল পুরনিগমে সম্পত্তি কর আদায়ে ভুয়ো চক্রের হদিশ, চাঞ্চল্য

জামুড়িয়া থানায় দুটি পৃথক অভিযোগ দায়ের, দুই কর্মীকে অন্যত্র বদলি

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৯ নভেম্বরঃ আসানসোল পুরনিগমের মধ্যে সম্পত্তি কর বা ট্যাক্স আদায়ের ক্ষেত্রে ভুয়ো চক্রের হদিশ। আর সেই চক্রের মধ্যে আসানসোল পুরনিগমের ট্যাক্স ও লাইসেন্স দপ্তরের কর্মীরাই রয়েছে বলে, পুরনিগম কতৃপক্ষের সন্দেহ। এই চক্রটি সক্রিয় রয়েছে আসানসোল পুরনিগমের জামুড়িয়া অফিসে বলে পুরনিগম কতৃপক্ষের প্রাথমিক অনুমান। আপাততঃ এই ধরনের তিনটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে বা পুর কতৃপক্ষ জানতে পেরেছেন। ঘটনার কথা জানিয়ে জামুড়িয়া অফিসের দায়িত্বে থাকা পুর আধিকারিক দিন তিনেক আগে জামুড়িয়া থানায় দুটি এফআইআর করেছেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। একইসঙ্গে জামুড়িয়া অফিসের কিছু কর্মী এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন বলে বিভাগীয় তদন্তে পুর আধিকারিকরা সন্দেহ করছেন। তারই ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার জামুড়িয়া অফিসের লাইসেন্স ও কর বিভাগের ঐ দুই কর্মীকে কুলটি ও রানিগঞ্জে বদলি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আরো বিস্তারিতভাবে বিভাগীয় তদন্ত করা হচ্ছে বলে পুরনিগম সূত্রে জানা যায় ।

ভুয়ো চক্রের হদিশ


কিন্তু কি করে ধরা পড়লো এই চক্র? জানা গেছে, আসানসোল পুরনিগমের জামুড়িয়া পুর এলাকার নিংঘা এলাকার এক বাসিন্দার বেশ কয়েক বছরের সম্পত্তি কর বা ট্যাক্স বকেয়া রয়েছে। মাস কয়েক আগে তাকে পুর কর মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। তখন তিনি পুরনিগমকে জানান, তিনি বকেয়া তিন বছরের কর মিটিয়ে দিয়েছেন। তারজন্য তিনি পুরনিগমের কর দেওয়ার রসিদও দেখান। তাতে দেখা যায়, তিনি ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত কর বাবদ প্রায় সাড়ে ১১ হাজার টাকা মিটিয়ে দিয়েছেন। তদন্ত করে দেখা যায়, ঐ টাকা পুরনিগমের কোষাগারে জমা পড়েনি। আরো দেখা যায়, ঐ রসিদ পুরনো বা বাতিল হয়ে যাওয়া। এই রকম আরো দুটি ঘটনা পুরনিগম কতৃপক্ষ জানতে পারেন। এই দুটির ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর নড়েচড়ে বসে পুরনিগম কতৃপক্ষ।


নিয়মমতো, একটা আর্থিক বছর শেষের পরে ব্যবহার না হওয়া রসিদ বাতিল করে দেওয়া হয়। সেগুলো যাতে কেউ ব্যবহার না করতে পারেন, সেই কারণে, সেগুলোকে কেটে দেওয়া হয়। সাধারণতঃ, এই সব রসিদ থাকে ট্যাক্স আদায়কারী বা কালেক্টারদের কাছে। পুর আধিকারিকরা তদারকি করে দেখেন, এইরকম দুটি পুরনো বা বাতিল করে দেওয়া রসিদ বই নেই। তখনই জামুড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করে সব বিস্তারিত জানানো হয়। যে দুই কর্মীকে বদলি করা হয়েছে, তারমধ্যে একজন ট্যাক্স কালেক্টার আছেন বলে জানা গেছে।


পুর আধিকারিকদের অনুমান, কয়েক লক্ষ টাকা এইভাবে আদায় হয়ে থাকতে পারে। তাতে পুরনিগমের রাজস্বের ক্ষতি হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই ঘটনা যখনকার তখন আমি পুর প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলাম না। এখন তা জানাজানি হয়েছে। তদন্ত শুরু করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দুই কর্মীকে বদলি করা হয়েছে। আরো কিছুটা তদন্ত হলে, পুরোটা সামনে আসবে। তখন জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *