আসানসোলের একটি গাড়ি বিপুল পরিমান বিস্ফোরক সহ আটক দুমকায়, ফেরার শিল্পাঞ্চলের ৪ জন বাসিন্দা
বীরভূমে যাচ্ছিলো বলে অনুমান পুলিশের
দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১ ডিসেম্বরঃ ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলার শিকারিপারা থানার পুলিশ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক সহ আসানসোলের একটি গাড়ি আটক করে। তবে গাড়ির চালক সহ অন্য কাউকে পুলিশ ধরতে পারেনি। পুলিশের তাড়া খেয়ে গাড়িটি রাস্তার ধারে উল্টে গেছিল বলে জানা গেছে। সেই সুযোগে গাড়ির চালক সহ অন্যরা পালিয়ে যায়। দুমকা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবারের এই ঘটনায় রানিগঞ্জের জাভেদ খান নামে এক ব্যক্তির নাম পুলিশের তদন্তে সামনে এসেছে। তার সঙ্গে থাকা তার আরো তিন সহযোগীর নাম দুমকা পুলিশ জানতে পারে। তারা হলো আসানসোল উত্তর থানার রেলপার এলাকার বাসিন্দা ইনজামাম মনোহর, রানিগঞ্জের দুই বাসিন্দা মহঃ আকবর কুরেশি ও টিপু খান। মোট চারজনকে অভিযুক্ত করে পুলিশ অভিযোগ দায়ের করেছে শিকারিপারা থানাতে(কেস নম্বর ১৫৬/২১)। তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনের ৩/৪/৫ নং ধারা দেওয়া হয়েছে।




দুমকার এসডিপিও সদর নূর মুস্তাফা আনসারি জানান, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য দুমকা পুলিশ ইতিমধ্যেই আসানসোল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে পুলিশ জানায়।
শিকারিপারা পুলিশ যে প্রাথমিক অভিযোগ দায়ের করেছে, তাতে বলা হয়েছে একটি গাড়িতে ১০০টি কার্টুন ছিল। ঐ সব কার্টুনে ২০৬৪১ টি বারুদ সহ পাওয়ার জেল, ২০১৫০ টি লাল রঙের ডিটনেটর এবং ২৪০ টি নারকেল ও দুটি ১০ ফুট করে কালো প্লাস্টিক গাড়িতে রাখা ছিল। সেইসঙ্গে গাড়ির যেখানে টুলবক্স থাকে তার ভেতরে নীল রঙের একটি হ্যান্ড ব্যাগ পাওয়া যায়। সেই হ্যান্ডব্যাগের কাগজপত্র থেকে এই সম্পর্কিত কিছু তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। এই ঘটনায় পুলিশ এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি ।
তবে পশ্চিম বর্ধমান জেলার রানিগঞ্জ এলাকা থেকেই বীরভূমের রাজগ্রাম এলাকায় এইসব বিস্ফোরক যাচ্ছিল বলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পরে জেনেছে। পাকুরিয়া অথবা রাজ গ্রামে পাথর খাদান কিংবা কয়লা খাদানে এগুলো ব্যবহার করা হতো বলে দুমকার এসডিপিও জানিয়েছেন। গাড়িতে পাওয়া কাগজ থেকে পুলিশের মনে হয়েছে রানিগঞ্জের জাভেদ খান এইসব সরবরাহ করতো। কিন্তু কাকে এইসব পাঠানো হচ্ছিল তা অবশ্য এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি দুমকা পুলিশ যায়নি ।
তিনি আরো জানান, পুলিশের কাছে গোপন সূত্রে খবর ছিল এই ধরনের বিস্ফোরক গাড়ি এই এলাকা দিয়ে যাবে। সেই মতো শিকারিপারা থানার সাব ইন্সপেক্টর সুগনা মুন্ডা পাট্টাবাড়ি নাকা চেকিংয়ে ডিউটিতে ছিলেন। ওই সময় ওই নারকোল বোঝাই একটি মালবাহী গাড়ি দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। তখন পুলিশ গাড়িটিকে আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গাড়িটি পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তার পিছু ধাওয়া করে। কিছুদূর এগিয়ে মেহুলপাহাড়ির কাছে গিয়ে দেখা যায় গাড়িটি রাস্তা থেকে উল্টে পড়ে আছে। এরপর গাড়ির চালক বা অন্য কারোর খোঁজ মেলে নি। পুলিশ সেখান থেকে নারকেল এবং বিস্ফোরক গুলি উদ্ধার করে গাড়ির কাগজ দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে গাড়িটি আসল মালিক আসানসোল রেলপারের বাসিন্দা। রানিগঞ্জের কাউকে সে এই কাজের জন্য গাড়ি দিয়েছিল।