ASANSOL

আসানসোলের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, চিকিৎসককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ, পুলিশের তদন্ত

বেঙ্গল মিরর,রাজা বন্দোপাধ্যায়/কাজল মিত্রআসানসোল, ৩০ ডিসেম্বরঃ চিকিৎসার গাফিলতিতে এক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠলো আসানসোলের সেনরেল রোডের এইচএলজি মোড় সংলগ্ন কন্যাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত রোগীর পরিবারের সদস্যরা ঐ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করলে, এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা যে চিকিৎসকের অধীনে ঐ রোগী ভর্তি ছিলেন, তাকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। পরিবারের সদস্যরা ঐ চিকিৎসক ডাঃ শুভজিৎ ঘোষের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। খবর পেয়ে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ এলাকায় আসে। পরিবারের তরফে গোটা ঘটনা নিয়ে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত করার আশ্বাস দিলে, দুপুরের পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এদিন বিকালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে রোগীর মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়।


তবে ঐ চিকিৎসক ও বেসরকারি হাসপাতালের তরফে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
আসানসোলের সালানপুর থানার রুপনারায়ণপুরের পিঠাইকেয়ারির বাসিন্দা মৃত রোগীর নাম দেবজ্যোতি বড়ুয়া (২৬)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ ডিসেম্বর রুপনারায়নপুরের যুবক দেবজ্যোতি বড়ুয়া বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাড়ির লোকেরা তাকে পিঠাইকেয়ারি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে চিকিৎসক জানতে পারেন, রোগীর ফুসফুসের সংক্রমণ সহ একাধিক শারীরিক সমস্যা রয়েছে। তাই তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু বাড়ির লোকেরা তাকে আসানসোলের সেনরেল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন ও ভর্তি করেন। ডাঃ শুভজিৎ ঘোষ তার চিকিৎসা শুরু করেন। বৃহস্পতিবার ভোরবেলা ঐ যুবকের মৃত্যু হয়। এদিন সকালে মৃত রোগীর পরিবারের সদস্যরা সেই খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময় ঐ চিকিৎসক সেখানে এলে, তাকে ঘিরে পরিবারের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন।

মৃত যুবকের বাবা বোধিসত্ত্ব বড়ুয়া অভিযোগ করে বলেন, চিকিৎসার গাফিলতিতেই ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমাকে মঙ্গলবার পর্যন্ত বলা হয়, ছেলে ঠিক আছে। বুধবার বলা হয়, বুকে বা চেষ্টে সংক্রমণ হয়েছে। ছেলের শারীরিক অবস্থা ঠিক নয়। তাকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হবে। আমাকে একটা ফর্মে সইও করানো হয়। তারপর এদিন ভোরবেলা বলা হয়, ছেলে মারা গেছে। তিনি আরো বলেন, আমাকে যখন যা পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে ও টাকা চাওয়া হয়েছে, তা আমি দিয়েছি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই এই হাসপাতালে, এটা আমাকে বলা হয়নি। তিনি ও মৃত যুবকের পরিবারের অন্য সদস্যরা বলেন, আমরা বিচার চাই। পুলিশ তদন্ত করুক।


যদিও, ঐ চিকিৎসক ও হাসপাতালের তরফে দাবি করা হয়েছে, চিকিৎসার গাফিলতি হয়নি। প্রতিদিন রোগীর বাবাকে সবকিছু বলা হতো। প্রথম থেকেই রোগীর শারীরিক অবস্থা ঠিক ছিলোনা। চিকিৎসক আরো বলেন, রোগীকে রেফার করার কথা বলা হয়েছিলো। কিন্তু তারা নিয়ে যাননি।
এদিকে পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের দেহর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই তদন্ত শুরু করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *