AMC POLLKULTI-BARAKAR

প্রার্থী তালিকা নাপছন্দ, পদত্যাগ করার ইচ্ছে প্রকাশ ব্লক সভাপতির, একাধিক ওয়ার্ডে নির্দল হওয়ার সম্ভাবনা

বেঙ্গল মিরর,রাজা বন্দোপাধ্যায়/দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ৩১ ডিসেম্বরঃ শাসক দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হওয়ার ২৪ ঘন্টা পার হওয়ার আগেই, আসানসোল পুরনিগমের বিভিন্ন ওয়ার্ডে তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীদের মধ্যে বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কুলটি পুর এলাকায়। সেখানকার ২৮ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০ টির বেশি ওয়ার্ডেই প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে, তৃনমুল কংগ্রেসের কুলটি ব্লক সভাপতি বিমান আচার্য নিজে প্রার্থী তালিকা নাপছন্দ হওয়ায় পদত্যাগ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন শুক্রবার সকালে।


বিমানবাবু নিজে পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায়কে ফোন করে প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের কথা বলেন। তিনি জেলা সভাপতিকে বলেন, তার দেওয়া নাম মতো তালিকা না হলে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। বিধানবাবু পত্রপাঠ তা খারিজ করে দিয়ে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে আসানসোল পুরনিগমের ১০৬ টি ওয়ার্ডের প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। তা বদল করা হবেনা। পদত্যাগের কথা ভুলে গিয়ে, কুলটির সব ওয়ার্ডে দলের প্রার্থীদের জেতানোর জন্য নেমে পড়ুন।
এই প্রসঙ্গে পরে বিমান আচার্য বলেন, জেলা সভাপতির কথায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি।


জানা গেছে, কুলটির ২৮ টি ওয়ার্ডের মধ্যে বিমান আচার্য ১৪ টি ওয়ার্ড ও জেলা চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় ১৪ টি ওয়ার্ডের প্রার্থীদের নাম দিয়েছিলেন। বিমানবাবুর পাঠানো তালিকায় তার নিজের নামও ছিলো। সেই তালিকা থেকে বিমানবাবুর সঙ্গে ৬ জনের নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। এতেই বেজায় চটেছেন বিমান আচার্য।


এদিকে এদিন সকালে এবারে টিকিট না পাওয়া বিদায় পুর বোর্ডের ডেপুটি মেয়র তবস্সুম আরার বাড়িতে এক বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে কুলটি বিভিন্ন ওয়ার্ডের ৭০ জন নেতা ও কর্মী ছিলেন। সেখানে মীর হাসিমের মতো টিকিট না পাওয়া প্রাক্তন মেয়র পারিষদ ও কাউন্সিলর ছিলেন।


কুলটি এলাকার ৬৬, ৬০ ও ১০২ নং ওয়ার্ডে প্রার্থী নিয়ে শাসক দলের অন্দরে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ৬৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খলিল আহমেদ বছর দেড়েক আগে খুন হন। দাবি ছিলো, তার স্ত্রী বা ভাইকে এই ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী করা হোক। কিন্তু তা হওয়ায়, ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৃনমুল যুব কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি বাবন ওরফে শুভাশিষ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, এটা ঠিক হলো না। শাসক দলের এই যুব নেতা সোশাল মিডিয়ায় দলের জেলা চেয়ারম্যানকে নিয়েও বলেন পোষ্ট করেছেন।


অন্যদিকে, আসানসোল শহরের রেলপার এলাকার ২৮ ও ২৯ নং ওয়ার্ডেও প্রার্থী নিয়ে শাসক দলের মধ্যে বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। ২৮ নং ওয়ার্ড থেকে এবারে টিকিট দেওয়া হয় নি গত বোর্ডের বোরো চেয়ারম্যান গোলাম সরবরকে। তার বদলে তৃনমূল প্রার্থী করেছে ইরশাদ আলিকে। আর তা নিয়ে এলাকার বাসিন্দা ও বেশ কিছু তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা ও কর্মী এদিন একটি বৈঠক করেন। সেখানে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গোলাম সরবর যা করবেন, তার সঙ্গে তারা আছেন। পরে গোলাম সরবর বলেন, আমি প্রথমে কংগ্রেসের কাছে প্রার্থী হওয়ার জন্য আবেদন করবো। তারা যদি রাজি না হয়, তাহলে নির্দল প্রার্থী হয়ে পুর নির্বাচনে লড়াই করবো।

অন্যদিকে, ২৯ নং ওয়ার্ডে শাসক দলের প্রার্থী হয়েছেন সদ্য সিপিআই ছেড়ে আসা এলাকার তিনবারের কাউন্সিলর কবিতা যাদব। ২০১৫ সালের এই ওয়ার্ডের তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থী রেখা সিং এবারে দৌড়ে ছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই তা নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
তবে, যেখানে যাই হোক না কেন শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব, এইসবে গুরুত্ব দিতে নারাজ।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *