KULTI-BARAKAR

কুলটি শুট আউটের কিনারা ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে, দাবি পুলিশের, স্ত্রী সহ গ্রেফতার ৪

বিহারের সার্প শুটারকে ২.৫০ লক্ষ টাকার সুপারি

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ২১ জানুয়ারিঃ দুদিন আগেই আসানসোলের কুলটিতে পরেশ মাঝি ওরফে মারান্ডি নামে ইসিএলের বরখাস্ত হওয়া এক কর্মীকে গুলি করে খুন করার ঘটনা ঘটেছিলো। ৩৬ ঘন্টার মধ্যেই সেই খুনের রহস্যের পর্দাফাঁস করেছে পুলিশ। এই শুট আউটের ঘটনার মুল ষড়যন্ত্রকারী হলো মৃত পরেশ মাঝির স্ত্রী মঙ্গলী মারান্ডি বলে শুক্রবার জানিয়েছেন আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি ( পশ্চিম) অভিষেক মুদি। মঙ্গলী তার পরিচিত তিনজনের সাহায্যে ঘটনার ১৪ দিন আগে স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলো বলে পুলিশ জানতে পারে। খুন করার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিলো বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা কুখ্যাত সার্প শুটার হিমাংশু পাসোয়ানকে।

এই খুনের জন্য মঙ্গলী ২.৫০ লক্ষ টাকা সুপারি দিয়েছিলো। তার মধ্যে সে ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলো। হিমাংশুকে কুলটি থানার ডিসেরগড় ফাঁড়ির পুলিশ ধরতে পারেনি। তবে, বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ মঙ্গলী মারান্ডি, তার তিন সহযোগী ভিক্কি নুনিয়া, সন্দীপ নুনিয়া, ও বিশাল পাসোয়ানকে গ্রেফতার করেছে। তারা কুলটি থানার শীতলপুরের তুলসিহিড়ের বাসিন্দা।
ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এই খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, চারটি গুলির খোল, একটি মোটরসাইকেল ও একটি স্কুটি। শুক্রবার সকালে ধৃতদের তদন্তের স্বার্থে ১৪ দিনের রিমান্ড চেয়ে পুলিশ আসানসোল আদালতে পাঠায়। বিচারক চারজনের জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের রিমান্ডের নির্দেশ দেন। ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশ ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২ নং ধারায় খুন ও ২৫/২৭ নং অস্ত্র আইনে একটি মামলা ( ৩৮/২২) করেছে। এদিন সকালে ফাঁড়ি থেকে আসানসোল আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় ভিক্কি, সন্দীপ ও বিশাল সাংবাদিকদের কাছে গোটা ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। তবে মঙ্গলী এই নিয়ে কোন মন্তব্য করেনি।

Kulti Shootout का खुलासा


এই ঘটনায় তদন্ত করতে নেমে পুলিশ বুঝতে পারে খুন হওয়া পরেশের খুব পরিচিত কেউ বা কারা এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। বছর ৫০ এর পরেশ শীতলপুরে ইসিএলের গেস্ট হাউসে মালির কাজ করতো। কিন্তু ঠিক মতো চাকরি করতে না যাওয়ায় তিন বছর আগে ইসিএল কতৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে ডিসমিস বা বরখাস্ত করে। তার বাড়িতে স্ত্রী ছাড়াও এক ছেলে ও দুই মেয়ে আছে। কিন্তু বছর পাঁচেক ধরে পরেশ পরিবারের সঙ্গে থাকতো না। সে তুলসিহিড় গ্রামেই দাদার বাড়িতে থাকতো। গ্রামের শেষে একটা জমিতে কিছু গাছ লাগিয়েছিলো। সেখানে একটা ঝুপড়ি ছিলো। সকাল থেকে সে ঐ ঝুপড়িতে থাকতো। বুধবার সকাল নটা নাগাদ সেখানেই পরেশ খুন হয়েছিলো। সাতসকালে একবারে গ্রামের মধ্যে খুন হওয়ায় পুলিশ বিভিন্ন ক্লু নিয়ে একে একে মঙ্গলী সহ চারজনের কাছে পৌঁছায়।


ডিসিপি (পশ্চিম) এদিন জানিয়েছেন, ইসিএল কর্মী পরেশ মান্ডি খুনের ঘটনায় মৃতের স্ত্রী সহ মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনায় মূল ষড়যন্ত্রকারী হলো মঙ্গলি মারান্ডি। তার সঙ্গে ছিলো ভিক্কি নুনিয়া ও সন্দীপ নুনিয়া। তিনজনে গত ৫ জানুয়ারি এই খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। মঙ্গলীর কথায় তারা আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে পরেশকে খুন করতে রাজি হয়। তারা ২০ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়ে বিশাল পাসোয়ানের কাছে যায়। এরপর বিশাল তার দিদিমার বাড়ি বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা সার্প শুটার হিমাংশু পাসোয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সব শুনে হিমাংশু রাজি হয়।

ডিসিপি (পশ্চিম) আরো বলেন, ১৫ জানুয়ারি অর্থাৎ ঘটনার চারদিন আগে হিমাংশু ট্রেনে শীতলপুরে আসে। সন্দীপ তাকে স্টেশন থেকে রিসিভ করে বাড়ি নিয়ে যায়। তারপর দুদিন ধরে তারা গোটা এলাকা ” রেকি ” করে বা ঘুরে দেখে কিভাবে খুন করা হবে তা ঠিক করা হয়। সেই মতো মঙ্গলবার বিকালে তুলসিহিড় গ্রামের মাঠে যেখানে পরেশ বসতো সেখানে বিশাল ও হিমাংশু যায়। কিন্তু মাঠে ছেলেরা খেলা করায় পরেশকে খুন না করেই ফিরে আসতে হয়। এরপর বুধবার সকালে মঙ্গলীর ফোন পেয়ে স্কুটি নিয়ে সন্দীপ ও হিমাংশু এলাকায় পৌঁছায়। কেউ না থাকায় হিমাংশু ঝুপড়িতে ঢুকে পরপর ৫ রাউন্ড গুলি খুব কাছ থেকে পরেশকে করে পালায়।

ধৃতদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি মোটরবাইক ও একটি স্কুটি উদ্ধার করা হয়েছে। ডিসিপি (পশ্চিম) আরো বলেন, ধৃতরা সবকিছু স্বীকার করেছে। সংসারে আর্থিক টানাটানির কারণে ও স্বামীর হাত থেকে মুক্তি পেতে এই কাজ করেছে। ফেরার পরেশের খোঁজ করা হচ্ছে। বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার সকালে গুলির শব্দ শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরেশ গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পরে পাওয়া গেছিলো তিনটি গুলি।

PNB में डकैती

Asansol में हंगामा

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *