বার্ণপুরের স্কুলে অভিনব সরস্বতী পুজো, মণ্ডপে নারায়ণ দেবনাথ ও তার সৃষ্টি নিয়ে থিম করে শ্রদ্ধা পড়ুয়াদের
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৫ ফেব্রুয়ারিঃ করোনার জন্য সেই কবে বন্ধ হয়েছিলো। বলতে গেলে প্রায় ২ দিন পরে স্কুল খুলল। আর তারপরই সরস্বতী পুজো। আর সেই পুজোয় হাঁদা ভোঁদা, নন্টে ফন্টে ও কেল্টু এবং বাঁটুল দি গ্রেটকে নিয়ে ফিরে এলেন নারায়ণ দেবনাথ। সদ্যই প্রয়াত হয়েছেন শিশু সাহিত্যিক শিল্পী নারায়ণ দেবনাথ। তাকে শ্রদ্ধা জানাতে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের বার্নপুরের শান্তিনগর বিদ্যানিকেতন হাইস্কুলের পড়ুয়ারা পুজোর থিম করলো সেই শিল্পীর সৃষ্টিকে নিয়ে। মন্ডপের একদিকে নন্টে ফন্টে বা বাহুদুর বেড়ালের কাটআউট। আবার অন্যদিকে হাঁদা ভোঁদার সঙ্গে কেল্টুদার ছবি। রয়েছে প্রয়াত নারায়ণ দেবনাথের জীবন কাহিনী।
২০১৩ সালে বঙ্গবিভূষণ ও সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান নারায়ণ দেবনাথ। ২০২১ সালে তিনি পান পদ্মশ্রী সম্মান। অসুস্থতার কারণে দিল্লি গিয়ে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কার নিতে পারেননি শিল্পী। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে হাসপাতালেই শিল্পীর হাতে পদ্মশ্রী স্মারক ও মানপত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল। গত ১৮ জানুয়ারি ৯৭ বছর বয়সে বাংলা কমিকসের স্রষ্টা কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ছোটবেলার সেই নস্টালজিয়া বাংলা কমিকসের চরিত্রদের স্কুলের মণ্ডপে ফিরিয়ে আনলো ইস্পাত নগরী বার্নপুরের পড়ুয়ারা। স্কুল পড়ুয়া সাথী গুহ বলে, স্কুল খুলেছে দুদিন আগে ৩ জানুয়ারি। সরস্বতী পূজোর জন্য হাতে মাত্র ছিল দুদিন। তার মধ্যে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলে অভিনব থিম তৈরি করেছি। শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানানোর এই থিমে সহযোগিতা করেছে সৌভিক ঘোষ। তিনি বলেন, দুবছর বলতে গেলে সেরকমভাবে সরস্বতী পুজো হয়নি। কিন্তু এবার স্কুল খোলার পরেই সরস্বতী পুজোর অনুমতি পেয়েই পড়ুয়ারা তাদের থিম ভাবনা নিয়ে আমার সহযোগিতা চাইলো। তখন সব রকম সহযোগিতা করলাম। নারায়ণ দেবনাথ আর তার সৃষ্টির ছবি জোগাড় করা কাটআউট তৈরি করে দেওয়া হয়।
এই স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি হলেন রাজ্যের আইন ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী মলয় ঘটকের স্ত্রী সুদেষ্ণা ঘটক। তিনি সরস্বতী পূজোর এই থিমের কথা জানার পরে স্কুলে আসেন। পড়ুয়াদের এমন ভাবনায় তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে স্কুলে আসেন রানিগঞ্জের বিধায়ক তথা আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। তাপসবাবুরা পড়ুয়াদের এমন ভাবনাকে কুর্নিশ জানান।