RANIGANJ-JAMURIA

রানীগঞ্জে দীর্ঘদিনের জমিজট কাটিয়ে তোলার উদ্যোগ নিল ব্লক প্রশাসন

নিমচা গ্রাম এর এক বিস্তীর্ণ অংশে গড়ে উঠেছে এক বেসরকারি হাসপাতাল

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জি, রানীগঞ্জ : মঙ্গলবারে সমষ্টি উন্নয়ন দপ্তরের বৈঠকের পর বুধবার দীর্ঘদিনের জমিজট কাটিয়ে তোলার উদ্যোগ নিল ব্লক প্রশাসন। রানীগঞ্জের রানিসায়ের এলাকায় নিমচা গ্রাম এর এক বিস্তীর্ণ অংশে গড়ে উঠেছে এক বেসরকারি হাসপাতাল। আর এই হাসপাতাল নির্মাণের ফলে স্থানীয় এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষজনেদের ব্যাপক বিপাকে পড়তে হবে, এই দাবি করে এলাকার বেশ কিছু জন সদস্য বিক্ষোভে শামিল হয়েছিল একসময় । এক দফায় সেই জমি জটের সমস্যা এমনই জটিল পরিস্থিতির আকার নেয় যে, ওই জমিতে নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত সদস্য থেকে শুরু করে জমির মালিককে ব্যাপক গণধোলাই দিয়ে এলাকাছাড়া করে বেশ কিছু বিক্ষোভকারী। এরপর দীর্ঘ একটা সময় পার হয়ে যাওয়ার পর মঙ্গলবার ফের ওই এলাকায় উন্নত মানের হাসপাতাল নির্মাণ যাতে সম্ভব হয় তারই উদ্দেশ্য নিয়ে 33 নম্বর ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কাউন্সিলর , স্থানীয় বাসিন্দা, জমির মালিক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে রানীগঞ্জের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ও রানীগঞ্জের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিনোদন নুনিয়া ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিলেন।

মঙ্গলবার বিকেলে রানীগঞ্জের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক এর দপ্তরে বসে আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্তদের দাবিগুলো খতিয়ে দেখে, তাদের দাবি গুলি কতখানি যুক্তিযুক্ত তা তুলে ধরা হয় এদিন। তাদের দাবি গুলির মধ্যে অন্যতম ছিল যাতায়াতের যে পথ সেই পথ গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ, সমগ্র এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা করার জন্য নিকাশি নালার গঠন ও সংলগ্ন অংশের পুকুর যাতে স্নান যোগ্য ও ব্যবহারযোগ্য হয় তারই লক্ষ্যে পুকুর সংস্কার করার দাবি। মঙ্গলবার সামগ্রিক এই বৈঠক নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি গুলি শুনে তা আগামীতে মেনে নেওয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেই আশ্বস্ত করেন তাদের বক্তব্যে ।

ব্লক প্রশাসনের তরফে ও স্থানীয় এলাকার বাসিন্দাদের যে সকল দাবি তারা করেছেন তা যুক্তিযুক্ত কতটা তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি টিম গঠন করে বুধবার সমগ্র এলাকা পরিদর্শনের পর সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছিলেন । এ বিষয়ে এলাকার বাসিন্দাদের দাবি তারা কখনোই অত্যাধুনিক হাসপাতাল তৈরি বিরোধী নন, তারা চান হাসপাতাল গড়ে উঠুক। উন্নত হাসপাতালে পরিষেবা পাক সকলেই। তবে তার সাথেই এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা, যাতায়াতের ব্যবস্থা ও ব্যবহার্য জলের সঠিক সংস্কার হওয়া প্রয়োজন রয়েছে, তাই সে সকল ব্যবস্থা গুলি যাতে ঠিকভাবে করে দেয় নির্মাণকারী সংস্থা, তারই দাবি তারা করছেন।

বুধবার ওই বৈঠকের পর তিন তরফের সদস্যরাই উপস্থিত হয়ে ওই এলাকার জমি ও তার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন তা নিয়ে পরিদর্শন সারেন। স্থানীয় 33 নম্বর ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নারায়ণ বাউরী এলাকার মানুষজন এদের সঙ্গে নিয়ে সমষ্টি উন্নয়ন দপ্তরের আধিকারিক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে রেখেই সমস্ত এলাকায় কিভাবে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন তা নিয়ে আলোকপাত করেন। বিশৃঙ্খলা ও উত্তেজনাময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার লক্ষ্যে পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকদের ঘটনাস্থলে লক্ষ্য করা যায়। তবে সমস্ত কোথায় দেখেশুনে প্রথম দফায় এলাকার বাসিন্দারা ওই অংশে রাস্তা তৈরি করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের পরই পরবর্তী বৈঠকে বসে আগামীর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেন। বুধবারের এই ইতিবাচক পদক্ষেপ এর ফলে জমিজট অনেকটাই কাটলো বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল তবে আগামীতে নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে শুরু হলে জমিজট সম্পূর্ণরূপে কাটবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *