বরাকর নদীতে নৌকাডুবি : উদ্ধার কাজে নামল এনডিআরএফ, এখনও খোঁজ নেই নিখোঁজদের
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২৫ ফেব্রুয়ারিঃ ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ ও জামতাড়ার মাঝে বরাকর নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় তলিয়ে যাওয়া ১৬ জনের শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খোঁজ নেই। এদিন সকাল ১০ টা থেকে নদীতে নেমে তল্লাশি শুরু করেছে এনডিআরএফের বিশেষ উদ্ধারকারী দল। ঝাড়খণ্ডের দেওঘর থেকে এদিন সকাল নটা নাগাদ এলাকায় আসে ? কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুরু বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ রাতভর চলার কারণে স্থানীয় প্রশাসনের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে উদ্ধার কাজ থামিয়ে দিতে হয় রাতেই।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এই নৌকাডুবির ঘটনায় যতজন নিখোঁজ রয়েছেন তারা সবাই জামতাড়ার বাসিন্দা।




ঘটনার খবর পেয়েই বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান নিরসার বিজেপি বিধায়ক অপর্ণা সেনগুপ্ত। ক য়লাঞ্চল ও সাঁওতালপরগনাকে যুক্ত করার জন্য বরাকর নদীর উপরের সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এর ফলে এই দুই জেলার মানুষকে ভুগতে হচ্ছে। তাদেরকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার করতে হয়। সেই নিয়ে তিনি একহাত নেন ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সরকারকে । গাফিলতির দায় তিনি রাজ্য সরকারের উপর চাপিয়েছেন।
এদিকে রাত থেকেই জামতাড়া জেলার বীরগাঁও-শ্যামপুর নদী ঘাটে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান। যাদের আত্মীয়-পরিজনেরা নিখোঁজ রয়েছেন তারা তাকিয়ে রয়েছেন এনডিআরএফের দিকে। কিন্তু নদীর স্রোত যেভাবে রয়েছে তাতে এনডিআরএফের ধারণা ঘটনাস্থল থেকে বহুদূরে তলিয়ে যাওয়া লোকেরা ভেসে চলে যেতে পারেন। তাই তাদের উদ্ধার করতে সময় লাগতে পারে। অর্থাৎ বরাকর নদী থেকে দামোদর নদীর সংযোগ পর্যন্ত নিখোঁজদের খোঁজ পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা। বরাকর নদীর ধারে সমস্ত থানা গুলিকে এলার্ট করা হয়েছে পাশাপাশি মাইথন ড্যাম কর্তৃপক্ষ সতর্ক করা হয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় জামতাড়ার ডিসি ফৈয়াজ আহমেদ মমতাজ বলেন, এনডিআরএফের দল নদীতে নেমে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে এখনো কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাতে ৫ জন সাঁতরে নদীর পাড়ে উঠে আসেন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করেন। তারা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। নৌকাতে কতজন ঠিক ছিলেন তা জানা যাচ্ছেনা। কারণ বোট ম্যান বা মাঝির কোন পাওয়া যায়নি। অনুমান, বাকিরা সবাই তলিয়ে গেছেন। সেই সংখ্যা ১৬ জন হলেও হতে পারে।
প্রসঙ্গতঃ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে ধানবাদের নিরসার কাছে বারবিন্দিয়া নদী ঘাট থেকে জামতাড়ার বীরগাঁও-শ্যামপুর ঘাটের দিকে নৌকাটি যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই প্রবল ঝড় বৃষ্টি শুরু হয় । নদীর মাঝপথে তখন সেই নৌকা। ঝড় বৃষ্টির মধ্যে নৌকাটি উল্টে যায়। জানা যায়, নৌকাতে ১৭/১৮ জন বা তার থেকেও বেশি যাত্রী ছিলেন। ছিল ছয়/সাতটি মোটরবাইক ও সাইকেল ।
ঘটনার খবর পেয়ে নদীর দু’পাড়ে আসে ধানবাদ জেলা ও জামতারা জেলার পুলিশ । কিন্তু প্রবল বৃষ্টির জন্য উদ্ধার কার্যে বাধা সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রাই প্রথমে নদীতে নেমে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। খবর দেওয়া হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে।
আরে জানা গেছে, ধানবাদ থেকে জামতাড়া যেতে হলে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ব্যবহার করতে হয়। দূরত্ব পড়ে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার। কিন্তু এই নদীপথ ব্যবহার করলে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যায়। জামতাড়া থেকে প্রচুর মানুষ যারা ধানবাদ মাইথনে কাজ করতে আসেন বা দিনমজুরি কিংবা ফেরি করতে যান তারা দিনের শেষে নৌকা করে বাড়ি ফেরেন।