FEATUREDWest Bengal

মহেশমুন্ডার কুয়ো : জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জারবন্দী জল পরিবহণ করে নিয়ে আসা হতো

প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর কেবলমাত্র মহেশমুন্ডা কুয়োর জল পান করতেন

কথিত আছে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ( Prince Dwarkanath Tagore ) কেবলমাত্র মহেশমুন্ডা কুয়োর ( Well At Maheshmunda ) জল পান করতেন। জানা যায়, রাজস্থানের ‘বারিশ’ কুয়োর অনুকরণে নির্মিত এই কুয়ো থেকে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে রেলের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় জল নিয়ে যাওয়া হত।

মহেশমুন্ডার কুয়ো

পূর্ব রেলের ( Eastern Railway ) আসানসোল বিভাগের মধুপুর-গিরিডি শাখার মহেশমুন্ডা স্টেশনটি মধুপুর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে। যাত্রীদের সুবিধার্থে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এই স্টেশনটিতে বর্তমানে দু’টি প্ল্যাটফর্ম, বসবার জায়গা, প্ল্যাটফর্ম শেড ও যথেষ্ট আলোর বন্দোবস্ত রয়েছে। মধুপুর-গিরিডি স্পেশাল, মধুপুর-গিরিডি প্যাসেঞ্জার স্পেশাল, মধুপুর-গিরিডি মেমু প্যাসেঞ্জার স্পেশাল ইত্যাদি ট্রেনে মধুপুর থেকে এই স্টেশনে পৌঁছানো যায়। বর্তমানে এই স্টেশনে সারাদিনে মোট ৬টি ট্রেন থামে।

আসানসোল বিভাগের অন্তর্গত মধুপুর-গিরিডি শাখার মহেশমুন্ডা স্টেশন সংলগ্ন এই কুয়োর খ্যাতি তৎকালীন বিহার ও বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছিল। যার ফলে তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জারবন্দী জল পরিবহণ করে নিয়ে আসা হতো। আজও অনেক ভ্রমণপিপাসু এই কূপের জল থেকে তৃষ্ণা নিবারণ করেন। বিগত প্রায় তিন দশক আগে এই কূপটি ছিল যাত্রীদের এবং গ্রামবাসীদের তৃষ্ণা নিবারণের একমাত্র অবলম্বন। সেই সময় নলকূপ বা বোতলজাত জলের প্রচলন ছিল না। তখন ট্রেন থামার সময় জল কর্মীরা যাত্রীদের এই কুয়োর জল পান করতে দিতেন।

এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে বিখ্যাত বাঙালিরা একসময় গিরিডিতে এসে থাকতেন, যা মহেশুমুন্ডার থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার দূরে। স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, নোবেল বিজয়ী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অস্কার পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিত রায়-এর মতো মানুষও এর মধ্যে ছিলেন। সত্যজিত রায় এখানে থেকেই তার প্রিয় কল্পকাহিনীর চরিত্র ‘অধ্যাপক শঙ্কু’কে সৃষ্টি করেছেন।

আগামীদিনে মহেশমুন্ডার এই কুয়োটি একটি পর্যটক আকর্ষণ হতে পারে বলে আশা করা যায় । বর্তমানে পূর্ব রেলের আসানসোল বিভাগের ব্যবস্থাপনায় এই কুয়োটির সংস্কারের কাজ চলছে।

source : Eastern Railway

Leave a Reply