ASANSOL

উপনির্বাচনের আগে দলবদল, শাসক দলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, ইস্তফা দেওয়ার হুমকি ব্লক সভাপতির

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও কাজল মিত্র, আসানসোল, ৩১ মার্চঃ ( Asansol Live News Today ) আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার সমর্থনে বৃহস্পতিবার দুপুরে আসানসোল রবীন্দ্র ভবনের একটি কর্মী সভার আয়োজন করা হয়েছিলো। সেই সভায় দলের কর্মীদের বার্তা দেওয়ার কথা ছিলো দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির।
কিন্তু তার আগে সেই সভায় দলবদল করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন আসানসোল পুরনিগমের ৫৯ নং কংগ্রেসের কাউন্সিলর জাকির হোসেন, ৬৭ নং ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর টুম্পা চৌধুরী, ১০৫ নং ওয়ার্ডের জেএমএমের নেতা নেত্রী চাঁদ ওরফে শাহনওয়াজ খান, আফসানা খাতুন সহ শতাধিক বিভিন্ন দলের কর্মীরা। সদ্য হওয়া আসানসোল পুরনিগম নির্বাচনে কাউন্সিলর হিসাবে জিতেছেন জাকির হোসেন ও টুম্পা চৌধুরী। তেমনি এই পুরনিগম নির্বাচনে কুলটির ১০৫ নং ওয়ার্ড থেকে জেএমএমের প্রার্থী হয়েছিলেন আফসানা খাতুন। তবে তিনি হেরে যান। এদিন দলবদল করে আসা সবাই রাজ্যের আইন ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী মলয় ঘটকের হাত থেকে দলের পতাকা নিয়ে তৃনমুল কংগ্রেসে যোগ দেন।

উপনির্বাচনের আগে দলবদল


ঘটনাচক্রে, ১০৫ নং ওয়ার্ডে এবারের পুর ভোটে তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন কুলটি ব্লকের সভাপতি বিমান আচার্যের পুত্রবধূ শুক্লা আচার্য। এই ওয়ার্ডে জেতে বিজেপির ইন্দ্রানী আচার্য।
এদিনের অন্যদের দলবদল নিয়ে তেমন কোন সমস্যা না থাকলেও, আফসানা খাতুন ও শাহনওয়াজ খানের দলবদল নিয়ে রবীন্দ্র ভবনের বাইরে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিমান আচার্য। আর বিমানবাবু যখন এই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, তখনই সেখানে এসে পৌঁছান দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।


বিমান আচার্য ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, দলের প্রার্থী যার জন্য ১০৫ নং ওয়ার্ডে হারলো, তাকে ও তার স্বামীকে দলে নেওয়া হলো। এটা কেমন হলো বুঝলাম না। আমার প্রথম থেকেই আপত্তি ছিলো। এদিন সকালেও মলয় ঘটককে ফোন করে আমার আপত্তির কথা বলেছি। তারপরেও হলো। আমার স্ত্রী অসুস্থ। তাও দলকে ভালোবাসি বলে এদিন এসেছিলাম। আর এই দেখলাম। এমন দলে থেকে কি হবে? দল ও পদ ছেড়ে দেবো। এরপর তিনি দলের রাজ্য সভাপতির সভায় না থেকে রবীন্দ্র ভবন ছেড়ে চলে যান। আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান তথা দলের ইলেকশন এজেন্ট অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় তাকে বুঝিয়ে সভায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।


মন্ত্রী মলয় ঘটক দলে আসা নতুনদের এদিন থেকেই আসানসোল লোকসভার দলের প্রার্থীর জন্য এলাকায় প্রচারে নামার কথা বলেন। তবে দলের ব্লক সভাপতির আপত্তি ও এদিনের ক্ষোভ নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে চাননি।
দলের জেলা সভাপতি তথা আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায় এদিন পরে সভায় এসে দলবদল ও ব্লক সভাপতির ক্ষোভের কথা জানতে পারেন। তিনি বলেন, এদিন কারা দলে যোগ দিয়েছে তা আমার জানা নেই। ক্ষোভ কারোর থাকতেই পারে।
নির্দল কাউন্সিলরের যোগ দান নিয়ে তিনি বলেন, ভোটের আগে হতেই পারে। তবে অবশ্যই তা রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে। এদিন ঠিক কি হয়েছে জেনে বলবো। একই কথা বলেন আসানসোল পুরনিগমের দলের আহ্বায়ক তথা রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন তরফে দাসু।


দলে যোগদান নিয়ে ব্লক সভাপতির ক্ষোভের কথা সভায় বক্তব্য রাখার আগে জানতে পারেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। দলের একাংশের দাবি, এদিন তিনি সবার সামনে এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেন। তবে সাংবাদিকদের কাছে এই নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে চাননি।
এদিকে, দলের কাউন্সিলের দলবদল নিয়ে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডি বলেন, আমি জানতাম এটা হবে। আমাকে ঐ কাউন্সিলর বলেছেন, কি করে উনি ঐ ওয়ার্ডে জিতেছেন।
তবে, যাই হোক না কেন, আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের আগে এদিনের দলবদল নিয়ে যে শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব চরম অস্বস্তিতে পড়লো, তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।

read also : বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের বিরুদ্ধে উত্তেজনামুলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ, কমিশনের দ্বারস্থ তৃনমুল কংগ্রেস

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *