আলোকচিত্রশিল্পী শৈলেন সরকারের ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী “ফোকাস” – র উদ্বোধন
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত :
শিল্পাঞ্চলের খ্যাতনামা চিত্রসাংবাদিক এবং আলোকচিত্রশিল্পী শৈলেন সরকার আলোকচিত্র প্রদর্শনী ( Photograhy Exhibition) “ফোকাস” – র উদ্বোধন হলো আসানসোল রবীন্দ্রভবনে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এদিকে চেয়ারম্যান তথা রানীগঞ্জ বিধায়ক তাপস ব্যানার্জি, আসানসোল ইএসআই হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডা: অতনু ভদ্র, আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপারেনটেনডেন্ট ড: নিখিল চন্দ্র দাস, পুরুলিয়া থেকে আগত রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত খ্যাতনামা আলোকচিত্রশিল্পী মহাদেব লাল বড়াই, দূরদর্শন এবং রেডিও শিল্পী দেবাশীষ চক্রবর্তী ছাড়াও কাউন্সিলর ববিতা দাস, জীবনসুরক্ষার পক্ষ থেকে অসীম সরকার, সমাজসেবী শর্মিলা ব্যানার্জি, সিটিকেবলের থেকে জয়দীপ মুখার্জী, এছাড়া বার্নপুর নববিকাশ ক্লাবের পক্ষ থেকে বাপ্পা তালুকদার ও রূপক সরকার, সুমিত গাঙ্গুলী, আলোকচিত্রশিল্পী পুলক দাস, চিত্রসাংবাদিক গৌর শর্মা প্রমুখ আরো সমাজের সাংস্কৃতিক জগতের মানুষেরা।
রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত খ্যাতনামা আলোকচিত্রশিল্পী মহাদেব লাল বড়াই একজন সেতারবাদক। তিনি সেতারের সুরমূর্ছনায় দর্শকদের মুগ্ধ করে দেন।তবে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনী আরেকটি মুখ্য আকর্ষণ ছিল আদিবাসী মহিলাদের তোলা বেশ কয়েকটি ছবি যা দর্শকদের নজর কেড়েছে।আসানসোলের পাশেই দামোদরের হারামডিহ গ্রামের কিশোররা ফটোগ্রাফির প্রতি আকর্ষিত হবে তারাও শৈলেন সরকারের কাছে ফটো তোলার শিক্ষা নিয়ে মনকাড়া ছবি তুলে প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করেছে। তারাও রীতিমত উৎসাহিত। ফোকাসের পক্ষ থেকে আদিবাসীদের সম্মানিত ও পুরস্কৃত করা হয়।
এই বিষয়ে তাপস ব্যানার্জী বলেন, “এর আগে আমরা খ্যাতনামা আলোকচিত্র শিল্পীদের প্রদর্শনী আমরা বহুবার দেখেছি কিন্তু এবার শৈলেন নিজের ছবির পাশাপাশি সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষেদের তুলে এনে তাদের উৎসাহিত করে এবং তাদের তোলা ছবির যে প্রদর্শনী করেছেন সেটি অভূতপূর্ব।”
আসানসোল ইএসআই হাসপাতালের সুপারেনটেনডেন্ট অতনু ভদ্র এই প্রদর্শনীর ভুয়সী প্রশংসা করে বলেন সমাজের বিভিন্ন দিকের প্রতিচ্ছবি ছবির মধ্যে দিয়ে বোঝানো যায়। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন দিক প্রদর্শিত হয়েছে।
জেলা হাসপাতালের সুপারেনটেনডেন্ট ড : নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, “যারা ছবি তোলেন তাদের ছবির সৌন্দর্যের থেকেও মূল হচ্ছে ছবির বিষয়। ছবি সমাজের ভালো দিকের পাশাপাশি সমাজের বঞ্চনার ব্যাপারটিও তুলে ধরে। আলো ও অন্ধকারের দিকটিও আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। শৈলেন সরকারের তোলা ছবি কথা বলে। অনেকদিন ধরে তিনি ফটোগ্রাফি করেন। তার এই প্রদর্শনীর সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করি জেলা হাসপাতালের পক্ষ থেকে।”
বস্তুত উল্লেখ্য, আলোকচিত্রশিল্পী এবং খ্যাতনামা চিত্রসাংবাদিক, শৈলেন সরকার অসংখ্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছেন।তার ক্যামেরা সবসময় ব্যাখ্যার বাইরে জীবনের দর্শন বন্দী করতে পারে।
শৈলেন সরকার বলেন,
বাস্তবতার বাইরে আলো এবং ছায়ার মুহূর্তগুলির প্রতিবিম্ব তৈরি করে জীবন এগিয়ে যায়। তাঁর চার দশকের গৌরবময় কর্মজীবনে তাঁর লেন্সের মাধ্যমে জীবনের এই অনবদ্য দর্শনকে বহুবার ক্যামেরাবন্দি করেছেন।
আজকের দিনে মানুষের ফটোগ্রাফির প্রতি উৎসাহ তাকে আনন্দ প্রদান করেছে।
প্রদর্শনীতে ৯০ টির কাছাকাছি শৈলেনবাবুর তোলা ফটো প্রদর্শিত হয়েছে। এর বাইরে আদিবাসীদের তোলা এবং সাধারণ মানুষের তোলা ছবির সংখ্যা প্রায় ৩০ শের ওপর।
এই প্রদর্শনীটি আসানসোলের ফটো প্রেমীদের কাছে এবং বিশেষত শৈলেন সরকারের শিষ্যদের সৃষ্টি সহ তাঁর জীবনের কাজের বিশাল ভাণ্ডার থেকে বেশ কয়েকটি ছবি উপস্থাপন করেছে।এই প্রদর্শনী বিকাল ৩ থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত আসানসোল রবীন্দ্র ভবনে চলবে ৩০ শে এপ্রিল ১ লা মে পর্যন্ত।