আসানসোল রেল স্টেশনের আপার ক্লাস ওয়েটিং হলে রেলযাত্রীদের অপেক্ষা করতে হলে দিতে হবে টাকা
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। ( Asansol news) আসানসোল রেল স্টেশনের পাঁচ নম্বর প্লাটফর্মের দোতলায় অবস্থিত আপার ক্লাস ওয়েটিং হলে রেলযাত্রীদের অপেক্ষা করতে হলে তার জন্যে তাদের কাছ থেকে ঘন্টা পিছু অর্থ নিচ্ছে রেল। প্রতি ঘন্টায় এক জন যাত্রীকে ১০ টাকা করে দিতে হবে। পুরুষ বা মহিলা যাত্রীদের যে আপার ক্লাস প্রতীক্ষালয় সেখানে দরজার উপর এই বিজ্ঞপ্তি লাগিয়ে দেওয়া আছে।




সবচাইতে মজার কথা আসানসোল ডিভিশনে এই ব্যবস্থা চালু হলেও স্বীকৃত ইউনিয়ন গুলির দায়িত্বে থাকা শ্রমিক সংগঠনের সাথে এই নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে তারা জানান। একই ভাবে তারা এর তীব্র বিরোধিতা করেন। এই ব্যবস্থা প্রায় দেড় দুমাস ধরে চালু হয়েছে বলে আসানসোলের স্টেশন ম্যানেজার রশীদ নাদিন স্বীকার করেন। আসানসোলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন আসানসোল ও দুর্গাপুর রেলস্টেশনে আপার ক্লাস ওয়েটিং হলে বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে ।দ্বিতীয় শ্রেণীর ক্ষেত্রে আমরা এরকম কোনও টাকা নেওয়া হয় না।
ভারতীয় রেলের যারা যাত্রী হিসেবে বিভিন্ন ট্রেনে যাতায়াত করেন তাদের টিকিট কেনার উপর শ্রেণি চিহ্নিত হয়। সেই টিকিট কেনার পর একজন প্রথম শ্রেনীর যাত্রী বা দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রী তারা ট্রেন ধরার আগেই ওয়েটিং হলে পৌঁছে যাবেন এবং সেখানে অপেক্ষা করবেন ট্রেনের জন্য। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু আসানসোলে পাঁচ নম্বর প্লাটফর্মে ধাকা আপার ক্লাস ওয়েটিং হলে পুরুষ বা মহিলাদের ট্রেন ধরতে গিয়ে প্রতি ঘণ্টায় দশ টাকা করে দিতে হবে। শুধু তাই নয়, এক যাত্রী বলেন যদি কোন কারণে ট্রেন লেট হয় তাহলে ওই টাকার পরিমাণ আরো বাড়বে।
ইস্টার্ন রেলওয়ে মেন্স কংগ্রেসের আসানসোল ডিভিশনে ডিভিশনাল কনভেনার সুবির চাটার্জী বলেন রেল যখন যাত্রী কে টিকিট বিক্রি করছে তখন সে ট্রেন ধরার জন্য ওয়েটিং হলে এসে বসবে এটা স্বাভাবিক। তার জন্য আলাদা করে টাকা নেওয়া কেন হবে। আর আমাদের সাথে রেল কর্তৃপক্ষের এই নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আসলে রেল সব কিছুই এখন বেসরকারিকরণ করে দিচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে। আমরা এই নিয়ে আসানসোলের রেল আধিকারিকদের সাথে দেখা করে আমাদের প্রতিবাদ জানাবো এবং পরবর্তী রেলের সাথে শ্রমিক ইউনিয়নের বৈঠকে বিষয়টি আমরা তুলব।
একই ভাবে এর প্রতিবাদ করেছেন এই ডিভিশনের রেলওয়ে মেন্স ইউনিয়নের নেতা সুধীর রায়। তিনি এও বলেন আমাদের সাথে এই নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আই এন টি ইউ সির রাজ্যের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইন্দ্রজিৎ সিনহা বলেন রেল যা খুশি তাই করছে। যাত্রীর কাছ থেকে টিকিটের টাকা নেবেন আবার ওয়েটিং হলে গিয়ে বসার জন্য টাকা সংগ্রহ করতে একটি বেসরকারি সংস্থাকে নিয়োগ করবে এটা আমরা মানবো না। আমরাও বিষয়টি নিয়ে সর্বভারতীয় স্তরে রেলওয়ে নেতাদের সাথে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। তিনি বলেন যে ভিআইপি লাউঞ্জ আছে সেখানে তারা এমনিতেই যথেষ্ট অর্থ নেয়। কিন্তু ওয়েটিং হলের জন্য এভাবে টাকা সংগ্রহ করা ঠিক নয়।