ASANSOL

রানীগঞ্জে ধুলোট উৎসবের আগেই রাধাকৃষ্ণ বন্দনায় মাতলেন মানুষ

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ: প্রাচীন ঐতিহ্য ও রীতি রেওয়াজ কে অক্ষরে অক্ষরে পালন করে এবার ফের বৈশাখ মাসের শেষ দিনের মাথায় ধুলোট উৎসবের আগেই রাতভর রাধাকৃষ্ণ বন্দনায় মাতলেন খনি অঞ্চল রানীগঞ্জের ধর্মপ্রাণ মানুষ। রবিবার রাতভর তারি লক্ষ্যে রানীগঞ্জের বিভিন্ন অংশের আটটি কীর্তন দল তাদের নিজের নিজের সেরা কীর্তন পালা কীর্তন পরিবেশন করতে এসে উপস্থিত হলেন রানীগঞ্জে হিল বস্তির এলাকার কমল সাধুর আশ্রমে।

দীর্ঘ প্রায় 70 – 80 বছর ধরে রাধা কৃষ্ণের নাম বন্দনায় নিমগ্ন থাকা কমল সাধুর প্রয়াণের পর এবারেও রীতি মেনে রানীগঞ্জের বিভিন্ন কীর্তন দলের সদস্যরা পুরনো সেই প্রথা কে জিইয়ে রেখে কমল সাধুর আশ্রমের সামনেই পরিবেশন করলেন রাধা কৃষ্ণের নাম বন্দনার কীর্তন। এলাকার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ রাতভর রাধা কৃষ্ণের বন্দনা বিভিন্ন নাম গান শুনে মেতে উঠলেন আনন্দ-উচ্ছ্বাসে।

বর্তমান সময়ের নতুন প্রজন্মের সদস্যরা জানিয়েছেন একসময় হাতিতে চেপে কমল কীর্তন দলের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে রানীগঞ্জ বাজার এলাকার বিভিন্ন অংশে বৈশাখ মাসের দিনগুলিতে পালা কীর্তন পরিবেশন করে মানুষকে মুগ্ধ করতেন। আর তার সাথেই তিনি খনি অঞ্চলের বিভিন্ন পালা কীর্তনের দল কে নিজের আশ্রমের আসার আমন্ত্রণ জানাতে, সেখানেই তাদের কৃষ্ণ চর্চার বিভিন্ন নাম গান করে মুখরিত করতেন এলাকার আকাশ বাতাস।সেই সময়কালে ধীরেন ধীবরের ব্যবস্থাপনায় এই পালা কীর্তন ও তার আনুষাঙ্গিক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হলেও বর্তমানে সেই ধীবর পরিবারের পূর্ণচন্দ্র ধীবর, স্বপন ধীবর, সুমন্ত ধীবর ও তাদের আত্মীয় পরিজনেরা এখনো সেই ধারাবাহিক পালা কীর্তনের আসরের আয়োজন করে আসছেন কমল সাধুর আশ্রমে।

বিগত দুবছর ধরে করোনা মহামারীর কারণে এই কীর্তন কর্মসূচি নমো নমো করে সম্পন্ন হলেও এবার সাড়ম্বরে সঙ্গে হরিনাম সংকীর্তন এর আসর বসতে দেখা গেল রানীগঞ্জে হিল বস্তির এলাকায়। এদিন হাজারে হাজারে মানুষ এই পালা কীর্তন দেখতে ভিড় জমান সেখানে। আর এই পালা কীর্তন এর সাথেই লোকো সংগীত পরিবেশন করেন খনি অঞ্চলের বিশিষ্ট লোকসংগীত শিল্পী চন্দনা বাউরী, তিনি এদিন পুরুলিয়ার লোকসংগীত সহ সংলগ্ন এলাকার তেরোটি লোকসংগীত পরিবেশন করে মন জয় করে নিলেন কৃষ্ণ বন্দনায় উপস্থিত থাকা ধর্মপ্রাণ মানুষ জনের। এদিনের এই পালা কীর্তনের আসরে বড় ,যুব সদস্যদের সাথে ছোটরাও বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়ে রাধা কৃষ্ণর সাজে নিজেদেরকে সাজিয়ে তুলে রানীগঞ্জের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে কমল সাধুর আশ্রম এ হাজির হন। আর সেই যুব শিল্পীদের সাথে খুদে শিল্পীরা বিভিন্ন নাচ গান পরিবেশন করে, কৃষ্ণপ্রেমে মাতোয়ারা হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *