ASANSOL

Viral Audio ঘিরে পদ্ম শিবিরে শোরগোল, জিতেন্দ্র তেওয়ারির সঙ্গে জেলা নেতৃত্বর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন অগ্নিমিত্রা পাল

আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে হার, দলের কোন্দল আরো একবারে প্রকাশ্যে

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ৩০ মেঃ( Asansol Live News Today ) দিন কয়েক হলে বিজেপি ছেড়ে নিজের পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে গেছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। শুধু তিনি নন, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে দলের হারের পর থেকেই পদ্ম ফুল ছেড়ে ঘাসফুলে যাওয়ার হিড়িক পড়েছে। অর্জুনের পর আরও একাধিক বিজেপি সাংসদ ও বিধায়কের নাম আলোচনা চলছে ফুল বদল নিয়ে। সদ্য ফুল৷ বদল করা ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং নিজে সেই সম্ভাবনা আরও উস্কে দিয়েছেন। আর সেই আবহের মধ্যে পদ্ম শিবিরের অন্দরের কোন্দল যেন আরও একবার প্রকাশ্যে চলে এলো। আর তা হলো আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী তথা আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভার বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের ( Agnimitra Pal) জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে ( Jitendra Tiwari ) নিয়ে করা একটি মন্তব্যকে ঘিরে।

প্রশ্ন তুললেন অগ্নিমিত্রা পাল

রবিবার সন্ধ্যার পরে এই নিয়ে একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে। যাতে শোনা যাচ্ছে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে আদৌই বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন কিনা জিতেন্দ্র তিওয়ারি,? তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন অগ্নিমিত্রা পালের মতো গলার স্বরের এক মহিলা। সোমবার সকাল থেকে এই ভাইরাল হওয়া অডিও নিয়ে আসানসোল তথা রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়েছে। ঐ গলার স্বর তার কি বা তার নয়, , এই নিশে স্পষ্ট ভাবে কিছু বলেননি বিজেপি বিধায়ক। তবে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে দলের তিন লক্ষাধিক ভোটের বেশি হারে, আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি ও আসানসোল জেলা নেতৃত্বর ভূমিকা বা “এক্সজেটলি রোল ” কি ছিলো? তা নিয়ে অগ্নিমিত্রা পাল প্রশ্ন তুলেছেন। এই প্রসঙ্গে জিতেন্দ্র তেওয়ারি সংবাদ মাধ্যমের কাছে সবিস্তারে কিছু বলতে চাননি। বিজেপির জেলা সভাপতি দিলীপ দেও, সুকৌশলে গোটা বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বর এক্তিয়ার বলে এড়িয়ে যান। আর গোটা বিষয়টি অন্য দলের বলেও, বিজেপিকে খোঁচা দিয়েছেন তৃনমুল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন তরফে দাসু।


প্রসঙ্গত,আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার কাছে তিন লক্ষেরও বেশী ভোটে পরাজিত হন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। গত দু-দুবার আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রটি বিজেপির দখলে ছিল। প্রথমে ২০১৪ সালে প্রায় লক্ষ ভোট ও পরে ২০২০ সালে প্রায় ২ লক্ষ ভোটে জয় পেয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। বাবুল সুপ্রিয় দলবদল করায় সম্প্রতি আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের লোকসভা উপনির্বাচন হলে, তাতে পরাজিত হন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল । এরপর থেকে দলের হারের কারণ অনুসন্ধানে উঠে পড়ে লাগেন তিনি। আর তাতেই জিতেন্দ্র তেওয়ারির দিকে সন্দেহের আঙ্গুল উঠছে।

অগ্নিমিত্রা পালের মতো গলার স্বরের একটি অডিও ক্লিপ রবিবার বিকালের পর থেকেই একটি অডিও ভাইরাল হয় আসানসোল এলাকায়। ১৭ সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপে এক মহিলাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘জিতেন্দ্র তিওয়ারি’দা লোকসভা উপনির্বাচনে কি রকম ভূমিকা পালন করেছেন? উনি কি দলের হয়ে কাজ করেছেন না কি বিরোধিতা করেছেন? আসল কী রকম কাজ করেছেন উনি? সেটা জানতে চাইছি।’’ অনেকের মতে ঐ অডিও ক্লিপে যে মহিলাকে উপনির্বাচন জিতেন্দ্রর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শোনা গিয়েছে তা অগ্নিমিত্রা পালেরই কণ্ঠ। বিজেপির তরফেও কেউ সেই অডিও ক্লিপের সত্যতা স্বীকার করেননি। (যদিও এই অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে কিন্তু এই ভাইরাল অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি বেঙ্গল মিরর।)

তবে অডিও ক্লিপে যে কথা শোনা যাচ্ছে তার কিনা সেটা স্বীকার না করলেও, এদিন অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, কি ভাইরাল হয়েছে তা বলতে পারবো না। তবে আমি কোয়েশচেন করেছি। তার ভূমিকা কি ছিলো? জেলা নেতৃত্বেরও এক্সজেটলি রোল কি ছিলো? যে কোন উপনির্বাচনে জেলা খুব কঠিন। বিশেষ করে আসানসোল। তবুও যা হাওয়া ও মানুষের সমর্থন দেখে আমার মনে হয়েছিলো, ৩০ থেকে ৪০ হাজার ভোটে জিততাম। যা রেজাল্ট হলো, তার পরে প্রশ্ন উঠছে। তাহলে কি ” সাবোতাজ ” হয়েছে? তা নিয়েও খোলসা করেন নি। তবে তিনি বলেন, বারাবনি, পান্ডবেশ্বরের মতো বিধান সভায় যে ছাপ্পা হয়েছে, তা তো সেখান কার মার্জিন বলে দিচ্ছে। সন্ত্রাসের জন্য মানুষ বেরোতে পারেননি।

এই প্রসঙ্গে, জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, সংবাদ মাধ্যমের কাছে কিছু বলবো না। তা জন্য দলের প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। সেখানে বলবো। আমার কাছে অগ্নিমিত্রা পালের ফোন নম্বর রয়েছে। তার কাছেও আমার নম্বর রয়েছে। কিছু বলার থাকলে ফোনে বলবো। আর আমি কি করেছি, দল তা জানে। দলই আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলো।

বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি দিলীপ দের এই প্রসঙ্গে তেমন কোন মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন,, বিধায়ক রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন। অন্যদিকে, জিতেন্দ্র তেওয়ারি রাজ্য কমিটির সদস্যর পাশাপাশি বীরভূমের পর্যবেক্ষক। তাই তাদের বিষয়টি রাজ্য স্তরের বলা ভালো। তবে, তার কথায় একটা ইঙ্গিত মিলেছে যে, পরপর দুবার জেতা আসনে এবারের উপনির্বাচনে ভরাডুবি হওয়ায় দল ময়নাতদন্ত করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *