ASANSOL

নুপুর শর্মাকে কেন গ্রেফতার করা হবে না, রাষ্ট্রপতি প্রার্থী নিয়ে মন্তব্য প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমন মহঃ সেলিমের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায় 🙁 Asansol News Live Today ) বিজেপির মুখপাত্র নুপুর শর্মাকে কেন গ্রেফতার করা হবে না? এই নিয়ে শনিবার আসানসোলে দলের এক সম্মেলনে অংশ নিতে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনই মন্তব্য করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম( Md Salim )। একইসঙ্গে শুক্রবার রাষ্ট্রপতি প্রার্থী ও তার জয় নিয়ে মন্তব্য করা নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমন করেন সিপিএম নেতা।এদিন আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে পশ্চিম বর্ধমান জেলা সিপিএমের ডাকে ” প্রসঙ্গ রাজ্য সম্মেলন ও পার্টি কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত সমুহ ” শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিলো। সেই সভায় মুখ্য বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম। অন্যদের মধ্যে ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।

আক্রমন মহঃ সেলিমের


তার আগে আসানসোলের আপকার গার্ডেনে সিপিএমের জেলা অফিসে সাংবাদিক সম্মেলনে মহঃ সেলিম বলেন, নুপুর শর্মাকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কিন্তু কোন রায় বা নির্দেশ দেয়নি। উচ্চ আদালত শুধু ১০ পয়েন্টের কথা বলে ” পর্যবেক্ষণ বা অবজারভেশন ” করেছে। যখন তার মন্তব্যের জন্য দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে বলে মনে করা হয়েছে, তাহলে তাকে কেন গ্রেফতার করতে বললো না সুপ্রিম কোর্ট? আমরা চাই তাকে গ্রেফতার করা হোক। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদির দিল্লি পুলিশ নুপুর শর্মাকে গ্রেফতার করবে না। কোন পদক্ষেপ করবে না। উল্টে তাকে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। আসল কথা হলো, আদানি ও আম্বানিদের দিয়ে কেন্দ্র সরকার অস্ট্রেলিয়া থেকে ১৮ লক্ষ মেট্রিক টন কয়লা আমদানির বিষয় থেকে নজর ঘোরাতেই বিজেপি নুপুর শর্মাকে দিয়ে ঐ কথা বলিয়েছিলো।


এদিন একই সঙ্গে মহঃ সেলিম রাষ্ট্রপতি প্রার্থী নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের তীব্র আক্রমন করে বলেন, তৃনমুল নেত্রী গুরুত্ব পেতে চাইছেন। ব্যাপারটা অনেকটা একবার সাধলেই খাইবো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, আমাদেরকে বিজেপি আগে দ্রৌপদী মুর্মুর নামের কথা বললে বিবেচনা করতে পারতাম।
কটাক্ষের সুরে সিপিএমের পলিটব্যুরো এই সদস্য কটাক্ষের সুরে বলেন, দেখুন রথের দিন তিনি এই কথা বলেছেন, আবার উল্টো রথের দিন উল্টো কথা বলেন কিনা! মনে হচ্ছে কোথাও বিজেপি ও তৃণমূল একে অপরকে ভিতরে ভিতরে সমর্থন করছে। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, সারাদেশে ধর্মের নামে রাজনীতি করা হচ্ছে, যা এদেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এতে বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে শত্রুতা বাড়ছে। তার থেকে বিদ্বেষ বাড়বে ও শেষ পর্যন্ত তা হিংস্রতার দিকে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, বর্তমানে ভারতে এটাই হচ্ছে।

কিছু লোক নির্বাচনে জয়ের জন্য ধর্মকে ব্যবহার করছে, এটা যে শুধু ভারতেই হচ্ছে তা নয়, অন্য দেশেও হচ্ছে। সেই সব দেশে ধর্মের নামে রাজনীতির কারণে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে ও হিংসা ছড়াচ্ছে। মহম্মদ সেলিমের মতে , এক হাতে তালি বাজানো হয় না। একদিকে যেখানে হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা আছে, সেখানে ইসলামী সাম্প্রদায়িকতাও তার পরিপূরক হিসেবে বিকশিত হচ্ছে। জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীকে হত্যার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষের কাছে ষড়যন্ত্র করে বলা হচ্ছিলো যে মহাত্মা গান্ধীকে একজন মুসলমান হত্যা করেছে। যাতে সারা দেশে বড় পরিসরে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন মারাঠি ব্যক্তি নাথুরাম গডসেকে চিনে ফেলেন ও এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়। যেমনটা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার সময় এরকমই কিছু ঘটেছিলো। ফলস্বরূপ তার হত্যার পরে সারা দেশে শিখদের গণহত্যা করা হয়েছিল।

মহঃ সেলিম বিজেপি ও তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন যে কখনও কখনও মনে হয় যে কিছু মানুষ যারা বিজেপির সংখ্যালঘু সেলে রয়েছেন, তারা আবার তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলে রয়েছেন। তাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখতে পাই না। তারা অনেকটা ভাড়াটে নেতার মতো। মহঃ সেলিমের সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন রাজ্য কমিটির দুই সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় ও আভাস রায় চৌধুরী।

Leave a Reply