COVID 19Health

করোনা লাফিয়ে বাড়ছে পশ্চিম বর্ধমান জেলায়

জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের চিন্তা বাড়াচ্ছে বিধি না মানা ও ভ্যাকসিন না নেওয়ার প্রবনতা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলা জুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা। পাশাপাশি জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের চিন্তা বাড়াচ্ছে কোভিড বিধি না মানা ও ভ্যাকসিন না নেওয়ার প্রবনতা। বিশেষ করে দ্বিতীয় ও প্রিকোউশন বা তৃতীয় ডোজ না নেওয়ার অনীহা। শুক্রবার জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার মধ্যে আসানসোল পুরনিগম এলাকায় আক্রান্তর সংখ্যা বর্তমানে অনেকটাই বেশি। তারপর রয়েছে জেলার দূর্গাপুর পুরনিগম এলাকা। সেই তুলনায় জেলার ব্লক এলাকায় এই মুহুর্তে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা কম।


অন্যদিকে, জানা গেছে, জেলায় প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন নেননি এমন মানুষের সংখ্যা ৩ লক্ষ ৫২ হাজার ৩৬১। ভ্যাকসিন নেওয়ার আগ্রহ না থাকায় বিপুল পরিমাণ টিকা বৃহস্পতিবারই জেলা থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ । বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও করোনা আক্রান্তর সংখ্যা ১০০ পার করেছে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১১৫ জন। বুধবার আসানসোল সহ জেলায় ১০৯ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন ।

শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত আসানসোল জেলা হাসপাতালে দুই শিশু সহ ৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন। বিকেলের পরে ২ শিশুকে ছেড়ে দিয়ে তাদের হোম আইশোলেশনে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা হাসপাতালে ইতিমধ্যেই ৯০ শয্যার একটি ওয়ার্ডও চালু করে দেওয়া হয়েছে বলে হাসপাতালে সুপার নিখিল চন্দ্র দাস জানিয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঠিক এক মাস আগে জেলায় পজিটিভিটির রেট ছিল শূন্য । আর একমাস পর এখন তা প্রায় ২৮ শতাংশে পৌঁছেছে। করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রেও উৎসাহ তুলনামূলক অনেকটাই কমে গেছে।


জানা গেছে ১৮ বছরের উপরে ২ লক্ষ ৩১ হাজার ৫৬০ জন আছেন যারা দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি । ৬০ বছরের উপরে প্রবীণ মানুষ ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৫৩ জন আছেন, যাদের সতর্কতামুলক হিসাবে প্রিকোউশন ডোজ নেওয়া উচিত ছিলো। কিন্তু তারা তা নেয়নি। ১২ থেকে ১৪ বছরের ৬২ হাজার ৪০ জন, ১৫ থেকে ১৮ বছরের ১৯ হাজার ২১ জন কিশোর প্রথম ডোজ টিকাই নেয়নি । আবার ১২ বছর থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত ১৯ হাজার ৩৭ জন ও ১৫ থেকে ১৮ বছরের ২৯ হাজার ৮৭৪ জন দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি। ১৮ বছরের উর্ধ্বেও এমন বেশ কয়েক হাজারের বেশি মানুষ আছেন যারা প্রথম ডোজ নেয়নি ।সব মিলিয়ে জানা গেছে জেলায় মোট ৩ লক্ষ ৫২ হাজার ৩৬১ জন করোনার প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন নেইনি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে প্রচার করা হলেও এখনও জেলার মানুষেরা তেমন সচেতন নন। ২০২০ তে জেলায় গড়ে করোনা পজিটিভ ছিল ২০০র নিচে । ২০২১ এর মার্চ এপ্রিল ও মে মাসে তা ভয়ংকর আকার নিয়ে গড়ে ১১০০ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। গত বছর ডিসেম্বরে ১২০০ জন আক্রান্ত হওয়ায় নতুন রেকর্ড হয়েছিল। ফেব্রুয়ারি মাসে একেবারে
তা কমে শূন্যতে নেমে আসে ।

গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার জেলায় সর্বকালীন রেকর্ড করে বলে জানান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ মহঃ ইউনুস খান। এদিন তিনি বলেন, বুধবার ১০৯ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার তা বেড়ে ১১৫ হয়েছে। সবমিলিয়ে ৪০০ জনের বেশি অ্যাক্টিভ রোগী এই মুহূর্তে জেলায় আছে। আমরা ভ্যাকসিন কারা নিয়েছেন তা জানতে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করছি। আসানসোল পুরনিগমের সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর বৈঠক করেছে। বলা হয়েছে, হ্যান্ডবিল বা লিফলেট বিলি ও মাইকিং করে প্রচার করে সচেতনতা বাড়াতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *