ASANSOL

ইসিএলের প্রাক্তন ও বর্তমান জিএম সহ সাতজনকে গ্রেফতার করলো সিবিআই

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় :( CBI Arrested Ecl officials in coal Smuggling Case ) কয়লা পাচার মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই এই প্রথম রাষ্ট্রায়ত্ব কয়লা উত্তোলনকারী সংস্থা ইসিএল বা ইস্টার্ন কোলফিল্ড লিমিটেডের চার প্রাক্তন ও একজন বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার এবং দুজন নিরাপত্তা রক্ষী গ্রেপ্তার করলো। জানা গেছে সিবিআই বুধবার রাতে এই সাতজনকে গ্রেফতার করে।

coal India News

ধৃতরা হলো প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার অভিজিৎ মল্লিক, সুশান্ত বন্দোপাধ্যায় তন্ময় দাস, বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার এসসি মৈত্র ও মুকেশ কুমার। এছাড়া দুজন নিরাপত্তা রক্ষী হলেন দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় ও রিঙ্কু বেহারা। অভিজিৎ মল্লিকের থেকে প্রচুর কাগজপত্র এবং আয় বহির্ভূত সম্পত্তি হদিশ মিলেছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গেছে। তিন বছর আগে সিবিআই যখন এই কয়লা পাচার মামলা শুরু করেছিল তখন প্রথম এফআইআর এ অনুপ মাঝি ওরফে লালা ছাড়া ইসিএলের চার জন জেনারেল ম্যানেজারের নাম ছিলো। এদের মধ্যে তখনকার ইসিএলের সিকিউরিটি দপ্তরের জেনারেল ম্যানেজার তন্ময় দাসও ছিলেন।

এর আগে কয়লা পাচার কাণ্ডে বিকাশ মিশ্র ছাড়াও চার কয়লা মাফিয়া জয়দেব মন্ডল, গুরুপদ মাঝি সহ চারজন গ্রেফতার হয়েছিলো।এদিন ইডি আদালতের নির্দেশে জয়দেব মন্ডল সহ দুজনের অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। জানা গেছে, বুধবার সকাল এগারোটা নাগাদ এই সাত জনকপ সিবিআই কলকাতায় নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠায়। কয়লা পাচার মামলায় তাদের দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না। পাশাপাশি তদন্ত থেকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। প্রধানত এই কারণে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে রাতে সিবিআই সূত্রে জানা গেছে ।

এছাড়াও আগে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে সিবিআই জানতে পারে যে এরা কয়লা পাচারের জন্য বিপুল পরিমাণ অংকের টাকা ঘুষ নিতেন। সেই টাকা কোথায় কিভাবে যেত তাও সিবিআই খোঁজার চেষ্টা করছে। বৃহস্পতিবার সকালে এই সাতজনকেই আসানসোল সিবিআই আদালতে তোলা হবে। সেখানে সিবিআই তাদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করবে। অন্যদিকে বুধবার রাতে এদেরকে গ্রেফতারের পর এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে মেডিকেল করানো হয়। এবং তারপর আবারও তাদের নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।কয়লা পাচারকাণ্ডের বিকাশ মিশ্রকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই বারবার তাদের আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন যাদের নাম এফআইআরে আছে তাদেরকে কেন সিবিআই গ্রেফতার করছে না।

বিশেষ করে যেসব ইসিএলের আধিকারিকদের নাম অভিযোগ রয়েছে , তাদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? বুধবার রাতে এই সাত জনকে গ্রেপ্তারের মধ্যে দিয়ে সিবিআই কয়লা পাচার কাণ্ডে, নতুন করে আরো বেশ কিছু তথ্য যেমন পাবে, তেমন কিভাবে রাষ্ট্রায়ত্ব কয়লা উত্তোলনকারী সংস্থা থেকে কয়লা তুলে তা মাফিয়াদের মাধ্যমে পাচার হতো ও কার কার মাধ্যমে টাকা দেওয়া হতো সেটাও বেরিয়ে আসবে। প্রসঙ্গতঃ, আগেই সিবিআই অবৈধ কয়লা পাচার মামলায় ইসিএলের ২ জন জিএম সহ ৫ আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিলে। ইসিএলের জিএম একে ধর ও জেসি রাই, চিফ সিকিউরিটি অফিসার তন্ময় দাস, কাজোড়া এরিয়া সিকিউরিটি অফিসার দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় ও কুনস্তোরিয়ার নিরাপত্তা আধিকারিক ধনঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে সিবিআই এই মামলাটি দায়ের করে জেরা করেছিল। তার ভিত্তিতে অভিযানের সময় সিকিউরিটি আধিকারিক ধনঞ্জয় রায় মারা যান।

উল্লেখ্য, বেআইনি কয়লা কারবারে ইডি ও সিবিআই অভিযানে নজরে রয়েছে রানিগঞ্জের কুনুস্তোরিয়া এরিয়া। এই এরিয়ার একাধিক জিএম ও নিরাপত্তা আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই সিবিআই জেরার মুখে পড়েছেন। আগামী দিনে আরো কয়েকজন আধিকারিক দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার নজরে রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *