National

দেশের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন দ্রৌপদী মুর্মু

গণতন্ত্রের শক্তিই আমাকে এতদূর নিয়ে এসেছে: দ্রৌপদী মুর্মু

বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : সোমবার দেশের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন দ্রৌপদী মুর্মু। তিনিই দেশের প্রথম মহিলা আদিবাসী রাষ্ট্রপতি। ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা দ্রৌপদী মুর্মুকে শপথবাক্য পাঠ করান। মুর্মু ওড়িশার বাসিন্দা। এর আগে তিনি ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালও ছিলেন।

গণতন্ত্রের শক্তিই আমাকে এতদূর নিয়ে এসেছে :

সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে শপথ নেওয়ার পর দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, ‘আমিই দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, যাঁর জন্ম হয়েছে স্বাধীন ভারতে। স্বাধীন ভারতের নাগরিকদের সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্নপূরণের জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে। আমার জন্ম ওড়িশার একটি আদিবাসী গ্রামে। কিন্তু দেশের গণতন্ত্রের শক্তিই আমাকে এতদূর নিয়ে এসেছে।’

*সেনাবাহিনীকে শুভেচ্ছা*
দেশের সেনাবাহিনীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দ্রৌপদী বলেন, ‘‘মঙ্গলবার ২৬ জুলাই কার্গিল বিজয় দিবস। দিনটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর বীরত্বের প্রতীক। আমি কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশের সশস্ত্র বাহিনী এবং দেশের সকল নাগরিককে অগ্রিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’’

*”ব্যক্তিগত প্রাপ্তি নয়”*

মুর্মু বলেন,’দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়া আমার ব্যক্তিগত প্রাপ্তি নয়। এই প্রাপ্তি ভারতের প্রতিটি দরিদ্র মানুষের। আমার রাষ্ট্রপতি হওয়া প্রমাণ করে যে ভারতের গরিবরা স্বপ্ন দেখতে পারেন, পূরণও করতে পারেন।’

*মোদী-সোনিয়াকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন*
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং সংসদের সেন্ট্রাল হলে তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদানকারী অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু৷

*প্রাথমিক শিক্ষাই স্বপ্নের মতো ছিল: মুর্মু*

নিজের জীবন সংগ্রামের কথাও তুলে ধরেন মুর্মু। বুঝিয়ে দেন, কঠিন পরিশ্রমে প্রতিকূলতাকে জয় করা যায়। রাষ্ট্রপতি মুর্মু বলেন,’ওড়িশার একটি ছোট আদিবাসী গ্রাম থেকে আমার জীবনযাত্রা শুরু হয়েছিল। যে জায়গা থেকে আমি এসেছি, প্রাথমিক শিক্ষাই আমার কাছে স্বপ্নের মতো ছিল। কিন্তু অনেক বাধা সত্ত্বেও আমার দৃঢ় সংকল্প ছিল। গ্রামের প্রথম মেয়ে হয়ে কলেজে পড়ি। প্রত্যন্ত আদিবাসী এলাকায় গরিব ঘরে জন্ম নেওয়া একটা মেয়ে ভারতের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে পৌঁছতে পারে, এটাই আমাদের গণতন্ত্রের শক্তি।’

*”কাকতালীয় ঘটনা”*

দ্রৌপদী মুর্মুর কথায়,’স্বাধীনতার অমৃত উৎসব উদযাপন করছি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দেশ আমাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করেছে। কয়েকদিন পর দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ করবে। এটাও একটা ঘটনা, আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল যখন দেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করছিল এবং আজ স্বাধীনতার ৭৫তম বছরে আমি এই নতুন দায়িত্ব পেলাম।’

*সৌভাগ্যবতী মনে হচ্ছে: দ্রৌপদী মুর্মু*

মুর্মু বলেন,’সবার আশীর্বাদে প্রগতিশীল একটি দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছি। নিজেকে খুব সৌভাগ্যবতী মনে হচ্ছে।’

এদিকে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জের উপেরবেদা গ্রামের বাসিন্দারা রবিবার রাত থেকেই উল্লাসে মেতেছেন। কারণ সেই গ্রামেরই মেয়ে সোমবার ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথগ্রহণ করেছেন। দ্রৌপদীর প্রায় ৬০ জন নিকটাত্মীয় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন বলেও জানা গিয়েছে।

Leave a Reply